অর্থ-বাণিজ্য
এক সপ্তাহে বাড়লো দেড় ডজন পণ্যের দর
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১২ নভেম্বর ২০২২, শনিবাররাজধানীর বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় দেড় ডজন নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে কখনো প্রধান খাদ্যশস্য চাল, আটা, ভোজ্য তেল, কখনো চিনি, লবণসহ অন্য পণ্য। গেল এক সপ্তাহে সব ধরনের চাল কেজিতে দুই-এক টাকা করে বেড়েছে। একইসঙ্গে আটা-ময়দার দামও বেড়েছে। পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। এ ছাড়া বেড়েছে মসুর ডাল ও ছোলা। এভাবে একের পর এক পণ্যের দাম বাড়ার কারণে নাজেহাল ভোক্তা। অনেকেই পণ্য কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। দাম বাড়ার তালিকায় অন্য পণ্যগুলো হলো- ডাল, ময়দা, আদা, রসুন, শুকনা মরিচ, হলুদ, ছোলা, ধনিয়া, জিরা ও লবঙ্গ। আর এসব পণ্য কিনতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে।
বাজারে একেক দোকানে একেক দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। কোথাও রূপচাঁদার ২ লিটারের তেলের বোতল ৩৬০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে, আবার কোথাও একই তেল ৩৮৪ টাকা। একই পরিমাণ তেল বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের দাম ৪১০ টাকাও বিক্রি হতে দেখা গেছে। তীর ব্র্যান্ডের এক লিটার বোতলজাত তেল ১৭৮ টাকা আবার কোথাও একই তেল ১৯২ টাকাও লেখা বোতলের গায়ে। কাওরান বাজারে খুচরা পর্যায়েও মোটা চাল কেজিতে এক থেকে দুই টাকা বেড়েছে। মোটা চালের মধ্যে পাইজামের কেজি ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা এবং গুটিস্বর্ণা জাতের চাল ৫০ থেকে ৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি চালের মধ্যে বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬২ টাকায়, মিনিকেট মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৫ টাকায়। আর নাজিরশাইলের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এদিকে গত এক সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে খোলা আটা কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা পর্যন্ত। খোলা ও প্যাকেটজাত উভয় ধরনের আটা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। আর ময়দা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি কম হচ্ছে। এ কারণে মিলাররা চালের দাম বাড়াচ্ছে। গত এক সপ্তাহে মিলগেটে চালের বস্তায় (৫০ কেজি) ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। চাহিদা মতো চাল দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ তাদের। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রতিদিন বাজার তদারকি করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম পেলে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। বিভিন্ন কারণ ও অজুহাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছে। এতে ভোক্তারা প্রতিনিয়ত অসহায় হয়ে পড়ছেন। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রোধে সংশ্লিষ্টদের জোরালো ভূমিকা দরকার।
এদিকে বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। প্রতি বছর এ সময়টাতে বাজারে সবজির দাম কিছুটা কম থাকে। তবে এবার শীতকালীন সবজি বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম নিম্নআয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো বাজারে ৬০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতের অন্য সবজিতেও তেমন একটা স্বস্তি দেখা যায়নি ক্রেতাদের জন্য। কিছু সবজির দাম স্বাভাবিক থাকলেও কিছু সবজির দাম বাড়তি দেখা গেছে। বাজারে প্রতি কেজি পটোল ৫০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০-৬০ টাকা, ধনিয়াপাতা ১০০ টাকা, আলু ২৮-৩০ টাকা, শিম ৬০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, উচ্ছে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা ও চিচিঙ্গা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি আঁটি লাল শাক ও পালং শাক ১৫-২৫ টাকা করে ও প্রতি পিস লাউ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া এক মাস আগে দেশি পিয়াজের কেজি ছিল ৪০-৪৫ টাকা। বর্তমানে ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।