টি-২০ বিশ্বকাপ
যে ৫ কারণে বিশ্বকাপ জিততে পারে পাকিস্তান
স্পোর্টস ডেস্ক
৮ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবারভাবনার বাইরে থেকে ১৯৯২ ওয়ানডে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইমরান খান-ওয়াসিম আকরামদের গড়া সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিই কি হতে যাচ্ছে এবার? প্লট যেভাবে আগাচ্ছে, তাতে বাবর আজমের হাতে ট্রফি ওঠার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। ৯২-এর সেমিতে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড, এবারও তাই। সেবার ফাইনালে তারা খেলেছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। যদি পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড দু’দলই সেমিতে জয় পায় তাহলে মেলবোর্নে ১৯৯২’এর পরিপূর্ণ মঞ্চায়ন হবে এবার। পাকিস্তান কেন বিশ্বকাপ জিততে পারে? পাঁচটি কারণ তুলে ধরা হলো।
শাহীনের স্বরূপে ফেরা
‘ডানা মেলে উড়তে প্রস্তুত ঈগল’- বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে এভাবেই ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। বাঁহাতি পেসারের ছন্দে ফিরতে একটু সময় লেগেছে। ভারত ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে ভালো করতে পারেননি। তবে তৃতীয় ম্যাচ থেকে দেখা দেন পুরনো ক্ষীপ্রতায়। গতি, সুইং, বাউন্সার ও মরণঘাতী ইয়র্কার ফিরেছে তার বোলিংয়ে।
অলরাউন্ড গভীরতা
ভেবে দেখুন, শাদাব খানের মতো একজন অলরাউন্ডার পাকিস্তান দলে। মারকুটে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে কার্যকর লেগস্পিন। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে শাদাবের মানের অলরাউন্ডার আছে ক’জন? দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২২ বলে ৫২ রান করার পর ১৬ রানে নেন ২ উইকেট। বলতে গেলে ম্যাচটা শাদাবের কাছেই হেরে যায় প্রোটিয়ারা। শুধু শাদাব নয়, পাকিস্তানের আছে মোহাম্মদ নওয়াজ ও মোহাম্মদ ইফতিখার। চলমান আসরে দুটি ফিফটি হাঁকিয়েছেন ইফতিখার। দুটোই চাপের মুখে। ব্যাট হাতে বিধ্বংসী নওয়াজের দেখা এখনো মেলেনি। কে জানে, সেরাটা হয়তো বিগ ম্যাচের জন্যই জমিয়ে রেখেছেন তিনি। অলরাউন্ড গভীরতার কারণে প্রতিপক্ষের চেয়ে একটু হলেও এগিয়ে থাকবে পাকিস্তান।
মোমেন্টাম
বড় ফাঁড়া কাটিয়ে বিশ্বকাপের সেমিতে উঠেছে পাকিস্তান। প্রথম দুই ম্যাচ হারের পর কেউ ভাবেনি তাদের শেষ চারে যাওয়া সম্ভব। ভাগ্য পুরোপুরি পাকিস্তানের হাতে ছিল না। নেদারল্যান্ডসের হয়ে কপাল ফেরানোর সুযোগ পায় দলটি। পাকিস্তানকে নিয়ে একটা কথা প্রচলিত আছেÑ একবার মোমেন্টাম পেয়ে গেলে তাদের আর থামানো যায় না। ১৯৯২ বিশ্বকাপে বাজে শুরুর পর ঘুরে দাঁড়িয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল ইমরান খানের পাকিস্তান। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের কাছে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর পরও পাকিস্তান খেলে ফাইনালে। সেখানে ভারতকেই বড় ব্যবধানে হারিয়ে জিতে নেয় ট্রফি। অস্ট্রেলিয়ায় কি আরেকবার কোণঠাসা বাঘের মতো হিংস হয়ে উঠতে পারবে না পাকিস্তান?
মানসিক দৃঢ়তা
আগামীকাল সিডনিতে প্রথম সেমিফাইনালে ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে পাকিস্তান। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে কিউইদের বিপক্ষে পাকিস্তানের রেকর্ড খুবই ভালো। ১৯৯২ ও ১৯৯৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ও ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে পাকিস্তান। এছাড়া কিছুদিন আগে কিউইদের তাদেরই ঘরের মাঠে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতেছে বাবর আজমের দল। অতীত ও বর্তমান রেকর্ডের সঙ্গে সিডনির গ্যালারির সমর্থন মানসিকভাবে এগিয়ে রাখবে পাকিস্তানকে।
মোহাম্মদ হারিসের অন্তর্ভুক্তি
অধিনায়ক বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ান ফর্মে নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সুযোগ দেওয়া হলো মোহাম্মদ হারিসকে। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ১১ বলে ২৮ রানের ইমপ্যাক্টফুল ইনিংস খেললেন হারিস। বাংলাদেশের বিপক্ষে পরের ম্যাচেও প্রয়োজনীয় মুহূর্তে জ্বলে ওঠে হারিসের ব্যাট। ১৮ বলে করেন ৩১ রান। হারিসের অন্তর্ভুক্তি পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে নিয়ে এসেছে নতুন মাত্রা। বিশ্বকাপ জয়ে তিনি হতে পারেন দলটির এক্স ফ্যাক্টর।