প্রথম পাতা
গোটা গো গামা আন্দোলনকারীরা অনড়
মানবজমিন ডেস্ক
১৪ মে ২০২২, শনিবারআন্দোলনকারীদের দাবি মেনে পদত্যাগ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসে। রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমাসিংহে। কিন্তু তারপরেও শ্রীলঙ্কাজুড়ে চলছে লাগাতার আন্দোলন। আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসের পদত্যাগের কোনো বিকল্প নেই। যতদিন তিনি পদত্যাগ না করছেন ততদিন আন্দোলন চলবে। একইসঙ্গে তারা নতুন করে আটটি দাবিও তুলেছেন। এ খবর দিয়েছে ডেইলি মিরর।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসেকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। এমনকি পদত্যাগের পরও দেশের সরকার পরিচালনায় তিনি ও সাবেক সরকারের সদস্যরা কোনো প্রভাব ফেলতে পারবেন না। শ্রীলঙ্কা একটি অস্থায়ী সরকারের অধীনে থাকবে যাতে করে চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট সামাল দেয়া যায়। তবে সেই সরকার ১৮ মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজন করবে।
দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে চলমান সংকট মোকাবিলা করতে হবে। একে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। শ্রীলঙ্কায় যত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংকট রয়েছে তা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচিত সকল জনপ্রতিনিধিকে তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। সরকারের তরফ থেকেও নিরপেক্ষভাবে সেই হিসাব তদন্ত করে দেখতে হবে। কেউ যদি অবৈধ সম্পদের মালিক হয়ে থাকে তাহলে তা বাজেয়াপ্ত করে সরকারি তহবিলে রাখতে হবে।
শ্রীলঙ্কায় আইনের শাসন নিশ্চিতের দাবিও জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বলেছেন, দেশের সকল নাগরিক ও পর্যটকদের অধিকারকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। সবশেষে একটি স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙ্গে দিয়ে জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
আন্দোলনকারীদের একজন চামিরা দেদুওয়াগি বলেন, গত ৩৬ দিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এখন আমরা পার্লামেন্টের কাছে কিছু দাবি উপস্থাপন করছি। এই আন্দোলন শুধু গোটাবাইয়ার বিরুদ্ধেই নয়, এই আন্দোলনের লক্ষ্য শ্রীলঙ্কার প্রতিটি মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা। সোশ্যাল এক্টিভিস্ট মানুরি পবসারি বলেন, গল ফেস গ্রিনে আন্দোলনকারীরা যে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তা আমাদের জন্য প্রতীকী মুহূর্ত। এটি শ্রীলঙ্কাকে বিশ্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে পেরেছে। অনেকেই বলছেন এই আন্দোলনের প্রভাব রাজধানী কলম্বোর বাইরে নেই এবং এই আন্দোলন সব ধরনের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। কিন্তু বিষয়টি সত্যি নয়।
এদিকে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে তার সকল দায়িত্ব পালন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, যে দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছি তা আমি পালন করবো। সময়মতো আমি সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন অর্জন করবো। নতুন প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়ার বিরুদ্ধে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে যে বিক্ষোভ চলছে তাতে কোনো বাধা দেয়া হবে না। তবে বিক্ষোভকারীরা চাইলে আমি তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাই।