শরীর ও মন
মলাশয়-মলদ্বারের ক্যান্সার শনাক্তে ও পরিত্রাণে কোলোনস্কপির ভূমিকা
ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল
২ নভেম্বর ২০২২, বুধবারমলাশয় ও মলদ্বারের ক্যান্সারকে একসঙ্গে বলা হয় কোলোরেক্টাল ক্যান্সার। এটি বিশ্বজুড়ে তৃতীয় সর্বাধিক প্রাদুর্ভূত ক্যান্সার। এর মধ্যে মলদ্বার ক্যান্সার হলো ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ। কোলোনস্কোপিসহ এ রোগের নিয়মিত পরীক্ষা করানো হলে মলাশয়ের ক্যান্সারজনিত কারণে মৃত্যুর প্রায় ৬০ শতাংশ প্রতিরোধ করা যেতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে মলাশয়ের ক্যান্সার সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য। প্রাথমিক শনাক্তকরণের চ্যালেঞ্জ হলো-মলাশয়ের ক্যান্সার ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। রোগটি পরবর্তী পর্যায়ে অগ্রসর না হলে প্রায়ই কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।
লক্ষণ
* পেটব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তাক্ত মল * অন্ত্রের বা মল ত্যাগের অভ্যাস পরিবর্তন * অবসাদ * বমি বমি ভাব এবং বমি করা * মলদ্বার ব্যথা * ওজন কমে যাওয়া।
কোলন ক্যান্সারের উৎস
এই ক্যান্সার সাধারণত পলিপের মাধ্যমে শুরু হয়। কিছু পলিপ থেকে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা খুব কম থাকে আর কিছু পলিপের মাধ্যমে ক্যান্সারের আশঙ্কা খুব বেশি থাকে। এই পলিপকে সাধারণত প্রিক্যান্সার বলা হয়। বংশগত কারণ, জীবনযাত্রার মান, কোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগ এসব কারণে কিছু পলিপ হতে পারে।
রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা
কোলোনস্কোপি মলাশয়ের ক্যান্সারের সবচেয়ে সংবেদনশীল স্ক্রিনিং পরীক্ষা। এর মাধ্যমে রোগের পরিস্থিতি সূক্ষ্মভাবে ধরা যায়। তাই যত আগে পরীক্ষাটি করা যায়, তত বেশি মৃত্যুর ঝুঁকি কমে। কোলোনোস্কোপির বিকল্প পরীক্ষাগুলো হলো- সিগময়েডোস্কোপি ও ফিকাল অকাল্ট রক্ত পরীক্ষা। কোলোনোস্কোপির মাধ্যমে নির্ভুলভাবে পলিপ ও অস্বাভাবিক টিস্যুর বৃদ্ধি শনাক্ত করা যায়। এই পরীক্ষার সময় পাওয়া প্রাথমিক পর্যায়ের টিউমারের মতো ক্যান্সারজনিত বৃদ্ধি তখনোই অপসারণ করা যায়। ক্যান্সারজনিত সব টিস্যু অপসারণ করা পর্যন্ত রোগীর সাধারণত কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশনের মতো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। এক বছর পরে কোলোনোস্কোপি পুনরায় করা হলে ক্যান্সারের পুনরাবৃত্তি হওয়ার লক্ষণগুলো পরীক্ষা করে দেখা সম্ভব হয়।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, কোলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ কোলোরেক্টাল, ল্যাপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
চেম্বার: ১৯ গ্রিন রোড, এ. কে. কমপ্লেক্স, লিফট-৪, ঢাকা।
যোগাযোগ: ০১৭১২৯৬৫০০৯