শরীর ও মন
স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে বাঁচার উপায়
কৌশিক আহমেদ
২৯ অক্টোবর ২০২২, শনিবারস্ট্রোক মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহের ব্যাঘাতজনিত পক্ষাঘাত যা বর্তমান বিশ্বে অসংক্রামক রোগের মধ্যে অন্যতম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি জরিপ অনুযায়ী বিশ্বে ২৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে প্রতি চার জনের মধ্যে অন্তত একজন ব্যক্তি তার জীবনকালে স্ট্রোক আক্রান্ত হন। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় দেড় কোটি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। যার মধ্যে প্রায় ৫০ লাখ রোগী মৃত্যুবরণ করেন এবং ৫০ লাখ রোগী দীর্ঘমেয়াদি প্রতিবন্ধিতার শিকার হন। অথচ একটু সচেতনতা এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন পারে এই ঘাতক ব্যাধিকে অনেকটাই প্রতিরোধ করতে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একটি গবেষণায় নিম্নোক্ত বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা হয়েছে যা স্ট্রোক প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।
১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
করণীয়: নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা। সচেতন হওয়া। (১৪০/৯০-এর ঊর্ধ্বে নয়) যদিও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির আদর্শ রক্তচাপ হচ্ছে ১২০/৮০।
২. দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত রোগ থেকে নিরাপদ থাকা: হৃদরোগ, ক্যান্সার, টাইপ-২ ডায়াবেটিসÑ এসব রোগ নীরব ঘাতক হিসেবে আমাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
করণীয়: দিনে ১৫০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ না খাওয়া।
# উচ্চ কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবার যেমন পনির, বার্গার, আইসক্রিম না খাওয়া।
# কম চর্বিযুক্ত দুধ জাতীয় খাবার, সবজি, ফল খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা।
# ধূমপান, অ্যালকোহল পরিহার করা।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ করা: শরীরের অতিরিক্ত ওজন উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ায় যা স্ট্রোকের জন্য দায়ী।
করণীয়: বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) অনুযায়ী নিজের সঠিক ওজন জানা। দিনে ১৫০০-২০০০ এর বেশি ক্যালোরি গ্রহণ না করা।
৪. নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং শারীরিক পরিশ্রম করা: নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম ওজন নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী।
করণীয়: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট নিরবচ্ছিন্ন ব্যায়াম করা। যেমন: হাঁটা বা সাইকেল চালানো।
সবশেষে, স্ট্রোক রোগের প্রতিরোধে আমাদের নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং ব্যক্তিগত ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।
লেখক: জুনিয়র কনসালটেন্ট (ফিজিওথেরাপি), স্ট্রোক রিহ্যাবিলিটেশন ইউনিট, সিআরপি।