ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শরীর ও মন

ক্যান্সার পরিত্রাণে হোমিওপ্যাথিতে সাফল্যের নেপথ্যে

মাহমুদুল হাসান সরদার
২২ অক্টোবর ২০২২, শনিবার
mzamin

হোমিওপ্যাথি ওষুধ যেহেতু শক্তিকৃত ওষুধ। তাই  এককভাবে কম মাত্রায় হোমিওপ্যাথি ওষুধ প্রয়োগের বিধান রয়েছে। তাই একসঙ্গে একাধিক ওষুধ প্রয়োগ হোমিওপ্যাথির নীতিবিরুদ্ধ কাজ। একাধিক কিংবা বড় মাত্রার ওষুধ অনেক সময় জীবনের সংশয় ডেকে আনতে পারে। হোমিওপ্যাথি ওষুধের সঠিক প্রয়োগ রোগীর জন্য উপকার বয়ে আনে। অন্যদিকে অপপ্রয়োগ রোগীর জন্য সংকট তৈরি করে। মনে রাখা প্রয়োজন, ক্যান্সার চিহ্নিতকরণ (identification) এবং তার স্তর বিন্যাস (stage) এবং বিস্মৃতি  (metastasis)  সম্পর্কে ভালো জ্ঞান না থাকলে সঠিকভাবে হোমিওপ্যাথি ওষুধ প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। এজন্য ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা (Patient pathway through disease management stage) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ক্যান্সার রোগীর ব্যবস্থাপনায় রেফারাল (Referral) পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। নির্দিষ্ট ক্যান্সার চিকিৎসায় নির্দিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতালে রোগীকে প্রেরণ করা আধুনিক চিকিৎসার অংশ।

বিজ্ঞাপন
হোমিওপ্যাথিতে এ ধরনের ব্যবস্থা এখনো গড়ে ওঠেনি। তাছাড়া এককভাবে ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা দেয়াটাও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই গ্রুপভিত্তিক টিউমার বোর্ড (tumour board) গঠন করে চিকিৎসা দেয়া নিরাপদ। এজন্য ক্যান্সার-বিষয়ক কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এ ধরনের চিকিৎসা পরিকল্পনা হাতে নেয়া যেতে পারে (বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক ক্যান্সার সোসাইটি এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে)। ক্যান্সার চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে, উপশমগত চিকিৎসা (palliative care)। এ অবস্থায় রোগীর লাক্ষণিক চিকিৎসা  (symptom control) গুরুত্বপূর্ণ। সাইকোলজিক্যাল (Psychological) কিংবা মনো-সামাজিক চিকিৎসা এ সময়ে খুবই প্রয়োজন। হসপিস কেয়ার (Hospice care)  অথবা বিরিভমেন্ট কেয়ার (Bereavement care), যা-ই বলি না কেন, শেষ সময়ে ক্যান্সার রোগীর মানসিক প্রশান্তি খুব প্রয়োজন। এ সময়ে রোগীর ঘুম কমে যায়। ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়, ওজন কমে যায়, মানসিক শক্তি হারিয়ে যায়, কারও কারও আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়। এসব ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি ওষুধ রোগীকে আরাম দিতে সক্ষম। এ ধরনের রোগীর ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ চিকিৎসকের বিকল্প নেই। কিন্তু রোগীর এ বিশেষ অবস্থার সুযোগ নিয়ে ব্যবসা করা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এ সময় অনেকে রোগীর শারীরিক শীর্ণতা এবং দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নানা ধরনের টনিক বেচার চেষ্টা করেন। কিছু কিছু ওষুধের মাদার টিংচার, যেমন-আলফাআলফা (Alfaalfa) মাদার টিংচার অনেক ডাক্তারই রোগীকে এ সময় দিয়ে থাকেন। এ ধরনের মাদার টিংচার রোগীকে সাময়িকভাবে উত্তপ্ত করলেও পরক্ষণেই রোগীকে নির্জীব করে দেয়। এতে অ্যালকোহলের মাত্রা বেশি থাকে বলে রোগী নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অথচ এ আলফাআলফা শক্তিকৃত অবস্থায় প্রয়োগ করলে রোগী ভালোভাবে উপকৃত হতে পারে। ক্যান্সার রোগীর জীর্ণ-শীর্ণ অবস্থা, যাকে ক্যাকেক্সিা (cachexia) বলে অভিহিত করা হয়, তার জন্য হোমিওপ্যাথিতে অনেক ভালো ভালো ওষুধ রয়েছে, যা রোগীকে চমৎকার ফল দিতে পারে। মনে রাখতে হবে, এ সময় রোগীকে কোনোভাবেই কোনো ওষুধের মাদার টিংচার প্রয়োগ না করে শক্তিকৃত ক্ষুদ্র মাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। কারণ, ক্যান্সারের মতো রোগীর জন্য ওষুধ উত্তেজনা সৃষ্টি করা থেকে চিকিৎসককে খুব সতর্ক থাকতে হবে।

লেখক: হোমিও চিকিৎসক ও ক্যান্সার রোগ গবেষক
চিফ কনসালটেন্ট, সরদার হোমিও হল, ৬১/সি, আসাদ এভিনিউ মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭। চিকিৎসা নিতে যোগাযোগ করতে পারেন। সেল-০১৭৪৭৫০৫৯৫৫

 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

   

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status