শরীর ও মন
চুলের গল্পকথা
ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল
৭ অক্টোবর ২০২২, শুক্রবারচুল নিয়ে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরা বেশ চিন্তিত থাকে। কিন্তু বর্তমানে দেখা গেছে চুলের যত্ন-আত্তি নিয়ে ছেলেরা খুবই সচেতন। বিশেষ করে ছেলেদের চুল যখন আস্তে আস্তে কমতে থাকে তখন তাদের সচেতনতা বেড়ে যায়। আর চুল নিয়ে গবেষণার শেষ নেই। মানুষের মাথায় চুল কেন সব সময় বাড়তে থাকে। চুল থাকা সত্ত্বেও মাথা কেন ঠাণ্ডা থাকে, এ নিয়েও রয়েছে রহস্য। এই রহস্যগুলোর সঙ্গে চুলের মজার তত্ত্ব রয়েছে।
চুল বা লোম হচ্ছে ত্বকের বহিঃস্তরে অবস্থিত ফলিকল থেকে উৎপন্ন হওয়া লম্বা সুতার মতো প্রোটিন তন্তু। চুলের প্রধান উৎপন্ন হছে কেরাটিন। মানুষ ব্যতীত অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর শরীরে যে নরম সুন্দর চুল পাওয়া যায় তাকে “ফার” বা লোম বলে।
ত্বকের উপরিতলের কোষ বা এপিডারমাল সেল থেকে চুলের উৎপত্তি। হেয়ার ফলিকল তৈরি হয় এপিডারমাল সেল থেকে।
একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের মাথায় প্রায় ১,০০০,০০ (এক লক্ষ চুল থাকে)। মানুষের চুল প্রতিদিন ০.৫ মি.মি. বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মাথায় চুল সমানভাবে বাড়ে না। রাতে চুল খুব ধীরে বাড়ে। সকালে এর গতি বাড়তে থাকে। বেলা ১০-১২টার মধ্যে চুল সবচেয়ে বেশি বাড়ে। কিন্তু দুপুর থেকে চুল বাড়ার গতি কমতে থাকে। বিকালে আবার বাড়ে কিন্তু সন্ধ্যায় গতি কমতে থাকে। চুল বৃদ্ধি পাওয়া ও গজানো শীত কাল থেকে গরম কালে বেশি। মজার ব্যাপার হলো গরম কালে চুল দ্রুত বাড়ে। দৈনিক কিছু চুল স্বাভাবিক ভাবে পড়ে যায়, একই ভাবে আবার কিছু গজায়।
এখানে জানার বিষয় হলো, চুল পড়া ও চুল গজানোর সমতা যখন থাকে না তখনই চুল পাতলা হতে শুরু করে। দিনে প্রায় ১০০টি চুল পড়া স্বাভাবিক। অনেক রকম ইনজেকশন, বিভিন্ন রোগ, ওধুষের ব্যবহার এবং খাদ্যের ভিন্নতার কারণে সাধারণত চুল পড়ে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে ৯৫ ভাগ চুল পড়ার কারণ জিনগত বা বংশগত।
এ অবস্থাকে বলা হয় অ্যান্ডোজেনিক অ্যালেপেসিয়া বা অ্যানড্রোজেন অর্থাৎ পুরুষ হরমোন এ সমস্যার জন্য দায়ী। মূলত একারণেই ছেলেদের চুল বেশি বাড়ে। বৃদ্ধ বয়সে চুল ঝরার হার বেশি।
লেখক: হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ও চিফ কনসালট্যান্ট, কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার। চেম্বার: বিটিআই সেন্ট্রা গার্ডেন, দ্বিতীয় তলা, গ্রীন রোড, ফার্মগেট, ঢাকা। প্রয়োজনে: ০১৭১১৪৪০৫৫৮