ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শরীর ও মন

প্রতিদিনের কর্মচঞ্চলতা বৃদ্ধি যেভাবে

ডা. মো. বখতিয়ার
৫ অক্টোবর ২০২২, বুধবার

প্রতিদিন কিছু শারীরিক ব্যায়াম এবং নিয়মকানুন মেনে চললেই শরীর থাকবে রোগমুক্ত, কর্মচঞ্চল, ফুরফুরে। আর হালকা হাঁটা বা জগিং হলো উত্তম প্রন্থা। এ ছাড়া রয়েছে আর কিছু করণীয়। তাই আপনি অলসতা ছেড়ে দিয়ে নিজেকে গড়ে তুলুন ডায়নামিক ডিরেক্টর হিসেবে। উপায়গুলো জেনে নেয়া  হলো-
পর্যাপ্ত পানি পান
ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। আর এটা করতে হবে সকালে দাঁত ব্রাশ করার পূর্বে। সারা রাত ঘুমের জন্য আমাদের শরীর প্রায় ৭-৮ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় পানি পায় না। সুতরাং এ সময়টাতে পানির চাহিদা খুব বেশি থাকে। আবার ব্যায়াম শুরুর আগে অতিরিক্ত না খেয়ে পানি পানই যথেষ্ট। যদি শরীর দুর্বল লাগে তবে হালকা কিছু খেয়ে নিতে পারেন যেমন- বিস্কুট, রুটি  ও ভাজা বা সিদ্ধ ডিম ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন
 
যে ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন
শারীরিক সুস্থতার জন্য কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম হলো আদর্শ। তবে শরীরের গঠন অনুযায়ী ব্যায়ামের পদ্ধতি নিজেই বাছাই করুন বা কোনো অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের পরামর্শ  বা সহায়তা নিতে পারেন।
হাঁটাহাঁটি
এটি হলো সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম। তবে এটা অফিসে যাওয়া বা আসার পথে হাঁটাহাঁটি হলে তেমন কোনো কাজেই লাগবে না। ব্যায়ামের উদ্দেশ্যে আপনাকে অবশ্যই মনস্থির করে আলাদাভাবে সময় দিতে হবে। হাঁটাহাঁটির জন্য পার্কে যেতে পারেন।
যদি পার্কে যেতে না পারেন তা হলে নিজের এলাকার রাস্তা ব্যবহার করতে পারেন। সকালের বায়ু খুব নির্মল ও প্রচুর অক্সিজেন সমৃদ্ধ থাকে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যদি ওজন কমানোর লক্ষ্যে হাঁটতে চান, তা হলে আপনাকে কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটতেই হবে। ওজন স্বাভাবিক হলে কমপক্ষে ১৫ মিনিট হাঁটুন।
প্রতিদিন  ৩০ মিনিট হাঁটার  ফলাফল
- হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে ও  স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
- নিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ বজায় থাকে।
- অতিরিক্ত ওজন কমায়।
- সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে।
- হাড় মজবুত করে এবং ভারসাম্যের উন্নতি সাধন করে।
হালকা  দৌড়ানো
হালকা দৌড়ানোর জন্যও পার্ক সবচেয়ে উত্তম জায়গা। পার্কে সম্ভব না হলে রাস্তা ব্যবহার করতে পারেন। অতিরিক্ত ওজন কমাতে হলে আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন ৩০ মিনিট দৌড়াতে হবে। দৌড়ের গতি কখনোই নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাবে না। তা হলে খুব তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন।
দৌড়ানোর সময় খেয়াল রাখুন
- গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
-  দৌড়ের স্টেপের সঙ্গে ব্রেথিং করুন, যেমন ৪ স্টেপে শ্বাস ভরুন এবং পরবর্তী ৪ স্টেপে শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে করলে কষ্ট কম হয়।
- দৌড়ানোর সময় শরীরের ভর যেন গোড়ালির ওপর না পড়ে, পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে দৌড়ানোর অভ্যাস করবেন।
দৌড়ালে শরীরের অতিরিক্ত ওজন খুব তাড়াতাড়ি হ্রাস পায়। ফলে শরীর-মন কর্মচঞ্চল থাকে, কাজে-কর্মেও গতি বৃদ্ধি পায় এবং শরীরে রোগ-জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে না। পায়ের মাংসপেশি ও হাড় অনেক মজবুত হয়। কোষ বিভাজিত হয়ে নতুন কোষ তৈরির গতি বাড়ে। ফলে ত্বক সুন্দর হয়।
দড়ি লাফ
এটি অল্প জায়গার মধ্যে দড়ি লাফ খুব চমৎকার একটা ব্যায়াম। কমপক্ষে ৫ মিনিট অবশ্যই করবেন। নিজের ওজন ও দক্ষতা অনুযায়ী গতি নিয়ন্ত্রণ করবেন। বারবার ঘড়ি  দেখতে সমস্যা হলে বিভিন্ন সংখ্যায় গুণে করতে পারেন  যেমন- ১০০, ২০০, ৩০০ ইত্যাদি। প্রথমে ঘড়ি  দেখে মিলিয়ে নেবেন যে ১ মিনিটে কতবার করতে পারেন।  সে হিসেবে ৫ মিনিটে কতবার করতে পারেন  সেটা হিসাব করে  নেবেন। এ  ক্ষেত্রেও  খেয়াল রাখবেন লাফ দিয়ে মাটিতে নামার সময় ভর যেন  গোড়ালিতে না পড়ে পায়ের পাতার ওপর পড়ে।
সতর্কতা
-রাস্তায় হাঁটলে ধুলো বালি এড়াতে  মাস্ক ব্যবহার করবেন। অন্যথায় এলার্জি বা অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে।
-হাঁটার সময় খালি পায়ে হাঁটা বিপজ্জনক।  সম্ভব হলে   স্পোর্টস সু পরতে পারেন।
-শরীরচর্চার পর তাড়াতাড়ি  পোশাক বদলাতে হবে।
-ঘাম শুকানোর আগে গোসল করবেন না। শরীর ঠাণ্ডা হলে  গোসল করুন।
হাঁটার ব্যায়ামের পাশাপাশি  স্ট্রেচিং, পেটের ব্যায়াম ইত্যাদি করতে হবে। হাঁটার উপকারিতা পেতে স্ট্রেচিং, পেটের ব্যায়াম ইত্যাদিও  দরকার। 
লেখক: জনস্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষক  এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খাজা বদরুদদোজা মডার্ন হাসপাতাল, সফিপুর, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।

 

 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

   

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status