ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দেশ বিদেশ

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের গবেষণা:

প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণের আধিক্যে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, লবণের সর্বোচ্চ মাত্রা নির্ধারণ জরুরি

স্টাফ রিপোর্টার

(১ বছর আগে) ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবার, ৫:৫০ অপরাহ্ন

mzamin

বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রক্রিয়াজাত প্যাকেট খাবারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশে (৬১%) নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি লবণ পাওয়া গেছে। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ পরিচালিত ‘অ্যাসেসমেন্ট অব সল্ট কন্টেন্ট অ্যান্ড লেবেল কমপ্লায়েন্স অব কমনলি কনজিউমড প্রোসেসড প্যাকেজড ফুডস অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে একটি সেমিনারে এই ফলা ফল প্রকাশ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের রিজলভ টু সেইভ লাইভস সহায়তায় সম্পাদিত গবেষণাটি।
গবেষণায় প্রতি ১০০ গ্রাম খাবারে সর্বোচ্চ ৭৫০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণকে নিরাপদ মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে দেখা গেছে, বাজারে বহুল প্রচলিত ৬১ শতাংশ বিস্কুট, চিপস, চানাচুর, নুডলস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ, ঝালমুড়ি, আচার, চাটনি ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত প্যাকেট খাবারে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি লবণ রয়েছে। আর ৩৪ শতাংশ খাবারে নিরাপদ মাত্রার দ্বিগুণ অর্থ্যাৎ ১.৫ গ্রামের বেশি লবণ পাওয়া গেছে।

বহুল প্রচলিত চানাচুর, নুডলস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ ও ঝালমুড়ির কোনোটিতেই নির্ধারিত মাত্রার লবণ পাওয়া যায়নি, বরং এগুলোতে দ্বিগুণের বেশি লবণ রয়েছে। একইভাবে আচার ও চাটনির ৮৩ শতাংশ, চিপসের ৬৩ শতাংশ এবং ডাল-বুট ভাজার ৬০ শতাংশে দ্বিগুণ লবণ রয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। তবে চিপস, ডাল-বুটের একটিতেও নির্ধারিত মাত্রার লবণ নেই।

গবেষণাটিতে বাজারে বহুল প্রচলিত ১০৫টি ব্র্যান্ডের চানাচুর, নুডলস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ, ঝালমুড়ি, লজেন্স, আচার-চাটনি, চিপস, ডালবুট, সস্, বিস্কুট, পাউরুটি, কেক, কোমল পানীয় ও ফ্রুট ড্রিংক্সের নমুনা পরীক্ষা করে এই ফলাফল পাওয়া গেছে।

মূলত বাংলাদেশে সরকারিভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণের সর্বোচ্চ কোন সীমা নির্ধারণ করা নেই। যার ফলে কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যে ইচ্ছেমতো লবণ যোগ করে। যদিও মোড়কাবদ্ধ খাদ্য লেবেলিং প্রবিধানমালা ২০১৭ অনুসারে, প্রক্রিয়াজাত খাবারে বিদ্যমান লবণের পরিমাণ মোড়কের লেবেলে উল্লেখক করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু গবেষণায় প্রায় অর্ধেক (৪৪%) খাবারে মোড়কে উল্লিখিত পরিমাণের চেয়ে বেশি লবণ পাওয়া গেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষই এ জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন
গড়ে একজন ব্যক্তি সপ্তাহে ১৫ বার অর্থাৎ দিনে ২ বারের বেশি এসব খাবার গ্রহণ করেন। আর অত্যধিক লবণ গ্রহণের ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

এসব রোগ প্রতিরোধ করতে হলে প্রক্রিয়াজাত খাবারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে লবণের পরিামণ নির্ধারণ করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি খাদ্যপণ্যের মোড়কে পুষ্টি সম্পর্কিত তথ্য যথাযথভাবে উল্লেখ করাও নিশ্চিত করতে হবে যাতে একজন ভোক্তা সহজেই বুঝতে পারেন খাবারটি স্বাস্থ্যকর নাকি অস্বাস্থ্যকর। গবেষণা মতে, উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও খাবারের মোড়কের সম্মুখভাগে লেবেলিং (ফ্রন্ট অব প্যাক লেবেলিং) প্রচলন করা হলে ভোক্তারা সহজে খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে তা কেনার বিষয়ে সিদ্ধা্তে নিতে পারবেন। এর ফলে মোড়কে থাকা স্পষ্ট ও পাঠযোগ্য আকারের লেখা এবং চিহ্ন দেখে একজন ভোক্তা সহজেই বুঝতে পারবেন খাবারটি স্বাস্থ্যসম্মত হবে কিনা।

গবেষণা ফলাফল প্রকাশ সেমিনারে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status