ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

'ইরানে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর আগে মাহসা আমিনিকে 'নির্যাতন ও অপমান' করা হয়েছিল'

মানবজমিন ডিজিটাল

(১ বছর আগে) ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, সোমবার, ১২:২৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৫:০৩ অপরাহ্ন

mzamin

পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যু ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, মৃত্যুর আগে মাহসাকে "নির্যাতন ও অপমান" করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তার চাচাতো ভাই। স্কাই নিউজের সাথে একান্ত সাক্ষাত্কারে এরফান মোর্তেজাই তার চাচাতো বোনের সাথে কী হয়েছিল এবং কীভাবে তিনি "ইরানী জনগণের ক্ষোভের কণ্ঠস্বর" হয়ে উঠেছেন সে সম্পর্কে বলেছেন। এরফান বোনের মৃত্যুর জন্য ইরানের সরকারকে দায়ী করতে  আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ১৬ সেপ্টেম্বর তেহরানে পুলিশ হেফাজতে মাহসার মৃত্যুর পর তিনি আমিনির পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি পশ্চিমা মিডিয়ার সাথে কথা বলেছেন। মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগে, ২২ বছর বয়সী মাহসাকে পুলিশ আটক করেছিল। অভিযোগ ছিল তিনি তার হিজাবটি খুব ঢিলেঢালাভাবে পরেছিলেন। ২২ বছরের এই তরুণীর মৃত্যু এখন দেশের সবচেয়ে গুরুতর বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, ইরান সরকার অস্থিরতা বন্ধ করতে চাইলে কয়েক ডজন লোক নিহত হয়েছে। মোর্তেজাই একজন রাজনৈতিক কর্মী এবং ইরানী সীমান্তের কাছে ইরাকে বসবাসকারী একজন পেশমার্গ যোদ্ধা। উত্তর ইরাকের কুর্দি অঞ্চলের সুলায়মানিয়াহতে স্কাই নিউজের সাথে কথা বলার সময় তিনি বলেছিলেন যে আমিনি তার ভাই আশকান সহ আত্মীয়দের সাথে তেহরানে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন। সেইসময়ে তাঁরা নীতি পুলিশের দ্বারা আক্রান্ত হন।

বিজ্ঞাপন
"আশকান তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে তারা এই শহরের নয় , তেহরানে নতুন। তাই দয়া করে এটি বিবেচনা করুন।'' যদিও তাতে কর্ণপাত না করে পুলিশ অফিসাররা আশকানের মুখে গোলমরিচ স্প্রে করে মাহসাকে ভ্যানে চাপিয়ে থানায় নিয়ে যায়। মোর্তেজাই বলেন, ভ্যানে থাকা একজন প্রত্যক্ষদর্শী পরিবারকে বলেছে এরপর কী ঘটেছিল। মাহসাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে নির্যাতন  এবং অপমান করা হয়েছিল। থানায় আসার পর আমিনি  দৃষ্টিশক্তি হারাতে শুরু করেন এবং অজ্ঞান হয়ে পড়েন। অ্যাম্বুলেন্স কর্মীদের তার কাছে পৌঁছাতে ৩০ মিনিট সময় লেগেছিল এবং হাসপাতালে পৌঁছাতে আরো দেড় ঘন্টা লেগে যায়। কাসরা হাসপাতালের [তেহরানের] একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে  মাহসাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়  চিকিৎসার দৃষ্টিকোণ থেকে ততক্ষণে তিনি মৃত । তাঁর মাথার আঘাত গুরুতর ছিল। শুধু তাই নয় এখন ইরানি টিভিতে উপস্থিত হওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মাহসার পরিবারের উপর চাপ দেওয়া হয়েছে এবং তার বাবা-মা, ভাইকে মুখ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ইরানের সরকার-সমর্থিত কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা সত্ত্বেও আমিনির রাজনীতির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই বলেই জানিয়েছেন তাঁর চাচাতো ভাই। আমিনির মৃত্যুর প্রভাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, মোর্তেজাই বলেন: "মাহসার মৃত্যু ইরান এবং কুর্দিস্তান জুড়ে এই প্রতিবাদ আন্দোলনের জন্য একটি স্ফুলিঙ্গ হয়ে উঠেছে। মাহসা এখন ইরানি জনগণের ক্ষোভের কণ্ঠস্বর।" আমিনির মৃত্যুর জন্য ইরান সরকারকে কাঠগড়ায় তুলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে  আহ্বান জানিয়েছে মৃত তরুণীর পরিবার। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি  জানিয়েছে  যে গত সপ্তাহান্তে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে ২৬ জন বিক্ষোভকারী এবং পুলিশ নিহত হয়েছে, অন্য প্রতিবেদনে এই সংখ্যা ৪১ জনের মতো বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, ইরানকে অবশ্যই "দেশের নিরাপত্তা কায়েম রাখতে শান্তির বিরোধিতাকারীদের মোকাবেলা করতে হবে। ‘’দেশের নারীরা ইসলামিক ড্রেস কোডকে চ্যালেঞ্জ করে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। উগ্র জনতা সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পতনের আহ্বান জানিয়েছেন। আমিনি ছিলেন কুর্দি, ইরানের একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠী যারা বেশিরভাগই দেশের পশ্চিমে বাস করত। যদিও উল্লেখযোগ্যভাবে, বিদ্রোহ ইরান জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এবং রাজধানী তেহরান সহ প্রায় প্রতিটি প্রদেশে বিক্ষোভ দেখা গেছে। পুলিশ প্রধান হোসেন আশতারি বিক্ষোভ থামানোর প্রয়াসে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন- ''জনগণের নিরাপত্তা আমাদের মূল লক্ষ্য। যারা নাশকতার সাথে জড়িত তাদের জানা উচিত যে তাদের কঠোরভাবে মোকাবেলা করা হবে।''

সূত্র : news.sky.com
 

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status