শেষের পাতা
চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, রবিবারপরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, চীন বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে। বিশেষ করে অবকাঠামো নির্মাণ, দেশের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। শনিবার ঢাকার পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘চায়না-বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজেস কো-অপারেশন ফোরাম ২০২২’ শীর্ষক বিজনেস নেটওয়ার্কিং প্রোগ্রামে তিনি এ কথা বলেন। চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সরবরাহকারীসহ সকল স্টেকহোল্ডারকে একত্রিত করা উক্ত আয়োজনের প্রধান লক্ষ্য বলে জানান আয়োজকরা। বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) এবং চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস এসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি)’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট গাজী গোলাম মুর্তজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, চীনে নিযুক্ত সদ্য বিদায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান, সিইএবি সভাপতি কে চাংলিয়ান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল আল মামুন মৃধা।
বাংলাদেশের অর্থনীতি সমপ্রসারণে প্রযুক্তিগত সহায়তা চেয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চীনের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি বুঝতে পেরেছিলেন এবং দ্রুত বর্ধনশীল দেশের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশকে চীনের প্রবৃদ্ধি অনুসরণ করতে হবে। চীন বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে।
বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে চীন ১৪৯টি দেশ এবং ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ২০০টিরও বেশি সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করেছে। এই বছরের প্রথমার্ধে, বিআরআই’র সঙ্গে জড়িত দেশগুলোর সঙ্গে চীনের পণ্যের বাণিজ্য মোট ১১.৮ ট্রিলিয়ন এবং এই দেশগুলোতে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ ১৪০ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। তিনি বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদ বৃদ্ধি এবং জনগণের জীবন-জীবিকা সহজ করা বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য। রাষ্ট্রদূত বলেন, সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত বন্ধুদের একজন হিসেবে চীন অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উপায়ে বাংলাদেশকে ক্রমাগত সমর্থন করে, যার মধ্যে রয়েছে রেয়াতি ঋণ, বিনিয়োগ সহযোগিতা, প্রকল্প চুক্তি এবং চীন সহায়তা প্রকল্প। বাংলাদেশে আরও চীনা বাজারমুখী বিনিয়োগ প্রয়োজন। রপ্তানি বাড়াতে চীনের বাজারে যা প্রয়োজন তা বাংলাদেশকে উৎপাদন করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
প্রথম শিল্পপার্ক হিসেবে শিগগিরই চট্টগ্রামে নির্মিত হবে চীনা অর্থনৈতিক জোন, যা যুগান্তকারী তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানান তিনি। বিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল আল মামুন মৃধা বলেন, বিসিসিসিআই বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রচার এবং সুবিধার্থে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে চীনে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬৮০.৬৫ মিলিয়ন ডলার। যেখানে ওই বছর আমদানি হয়েছে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য। বক্তারা বলেন, এ বিশাল বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। চীন আমাদের প্রায় ৯৮ ভাগ পণ্য রপ্তানির উপর ডিউটি-ফ্রি সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশ আগামী ২০২৬ সাল থেকে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করছে। চীন আরও তিন বছর বাড়িয়ে আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত এ বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে আশা বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের।