ঢাকা, ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

অফিসিয়ালি কমছে সামান্য

ডলারের দর ৯৩ টাকা ৯০ পয়সা নিয়ে বিভ্রান্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, সোমবার
mzamin

দেশে ডলারের সংকট অব্যাহত রয়েছে। একইসঙ্গে দামও ১০০ টাকার উপরে। কিন্তু গুগলের তথ্যে বিভ্রান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার গ্রাহক। গতকাল দিনব্যাপী এই ঘটনা ঘটেছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স কিনছে প্রতি ডলার ১০৮ টাকা দরে। বিদেশে যাওয়ার জন্য  কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে গেলে ডলার কিনতে হচ্ছে ১১৪ টাকায়। কিন্তু গুগলের তথ্যে প্রতি ডলার লেনদেন হচ্ছে ৯৩ টাকা ৯০ পয়সায়। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, প্রতি ডলার এখন সর্বোচ্চ ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে। এতে অনেক গ্রাহক বিদেশে যেতে টিকিট কাটতে হয়রানির শিকার হয়েছেন। তবে দেশের বাজারে মার্কিন মুদ্রা ডলারের গড় ক্রয়মূল্য কমেছে।

বিজ্ঞাপন
নিম্নমুখী প্রবণতা রয়েছে বিক্রির ক্ষেত্রেও। গতকাল আন্তঃব্যাংকে ডলারের গড় ক্রয়মূল্য কমেছে ২ টাকা ৬০ পয়সা।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গুগলের তথ্য ভুয়া। ব্যাংকে এখনো ডলার সংকট চলছে। ব্যাংক নিজেই ১০৮ টাকা দরে রেমিট্যান্স কিনছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারাও বলছেন, গুগলের তথ্য সঠিক নয়। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান বলেন, গুগলে যেটা দেখাচ্ছে সেটি সঠিক নয়। কেউ হয়তো যুক্তরাজ্যের একটি ওয়েবসাইটে ৯৩ টাকার তথ্য দিয়েছে। সেই কারণে গুগল এটা শো করছে। তিনি উল্লেখ করেন,  এখন ডলারের রেট ১০৬ টাকা।

সম্প্রতি দেশে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের অস্থিতিশীলতা কমাতে দেশে আসা রেমিট্যান্স প্রতি ডলারে ১০৮ টাকা এবং রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা গত ১২ই সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস এসোসিয়েশনের (বাফেদা) শীর্ষ নেতারা গত ১১ই সেপ্টেম্বর এক সভায় বিভিন্ন লেনদেনে ডলারের সর্বোচ্চ দাম যেভাবে নির্ধারণ করেছেন, তাতে রপ্তানি আয়ের চেয়ে রেমিট্যান্স হয়ে আসা ডলারের দাম ৯ টাকা বেশি।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে একই মুদ্রার মূল্য একেক জায়গায় একেক রকম। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এলে ডলারের দাম দেয়া হচ্ছে ১০৮ টাকা। একই ডলার রপ্তানির মাধ্যমে এলে তার দাম দেয়া হচ্ছে ৯৯ টাকা। যখন আমদানির জন্য দেয়া হচ্ছে তখন মূল্য ধরা হচ্ছে ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা। আবার ফ্রিল্যান্সারসহ বিদেশ থেকে আসা অন্য আয়ে সর্বোচ্চ ৯৯ টাকা দাম দিচ্ছে। যদিও ফ্রিল্যান্সার ও ডলার আয় করা অন্য খাতের কর্মজীবীরা তাদের আয়ের জন্য আড়াই শতাংশ হারে সরকারি প্রণোদনা পাচ্ছেন। এ ছাড়া যখন কেউ বিদেশে চিকিৎসার জন্য ডলার কিনতে যাচ্ছেন তার কাছ থেকে রাখা হচ্ছে (খোলাবাজারে) ১১৪ টাকা।

বিভ্রান্তির মাঝেও দেশের বাজারে ডলারের গড় ক্রয়মূল্য কমেছে। গতকাল আন্তঃব্যাংকে ডলারের গড় ক্রয়মূল্য কমেছে ২ টাকা ৬০ পয়সা। বাজারের জোগান ও চাহিদা বিবেচনায় ডলারের দাম নির্ধারণ করেছে বাফেদা। এ দরে ডলারের ক্রয়মূল্য কমেছে। একইসঙ্গে কিছুটা কমেছে বিক্রয় মূল্যও। বর্তমানে ডলারের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৪ টাকা। একইভাবে ডলারের বিক্রয়মূল্য কমেছে ১৫ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এরআগে গত বুধবার ডলারের ক্রয়মূল্য ছিল ১০২ টাকা ৩৭ পয়সা। এদিন ডলারের গড় ক্রয়মূল্য বাড়লেও বিক্রি করা হয় আগের দামেই অর্থাৎ ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা। পরে একদিনের ব্যবধানে বৃহস্পতিবার ৪ টাকা ৫৩ পয়সা বাড়িয়ে ডলারের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০৬ টাকা ৬০ পয়সা।

গতকাল ডলারের বিক্রয়মূল্য ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১৫ পয়সা কমে ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর গড় ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৪ টাকা, যা গত বৃহস্পতিবার ছিল ১০৬ টাকা ৬০ পয়সা। সে হিসাবে ডলারের গড় ক্রয়মূল্য কমেছে ২ টাকা ৬০ পয়সা। নতুন আন্তঃব্যাংকের এ দর বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। এদিকে মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে ডলারের ক্রয় রেট চলছে ১০৭ টাকা ও বিক্রির ক্ষেত্রে চলছে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। আর খুচরায় প্রতি ডলার কেনাবেচা হচ্ছে ১১১-১১৪ টাকার মধ্যে। 
ওদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভারে ত্রুটির কারণে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ ছিল চেক ক্লিয়ারিং কার্যক্রম। চেক লেনদেন নিষ্পত্তির কাজে নিয়োজিত বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজের (বিএসিএইচ-ব্যাচ) কাজ না করায় এ সমস্যা হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অনেক গ্রাহককে। গতকাল সার্ভার ত্রুটির কারণে দুপুর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো কোনো চেক ক্লিয়ারিং করতে পারেনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলেন, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এটা হয়েছে। বিকাল ৪টা নাগাদ সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে।

 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status