ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শিক্ষাঙ্গন

মধ্যরাতে ইবিতে বিস্ফোরণ, দিনভর ছাত্রলীগের বিক্ষোভ

ইবি প্রতিনিধি

(১ বছর আগে) ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন

mzamin

মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকট শব্দে থেমে থেমে ৬টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বুধবার রাত ২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এতে জড়িতদের বিচার ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার দিনভর বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, বুধবার রাত দুইটার দিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও লালন শাহ হলের পাশে তিনটি করে অন্তত ছয়টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক লাঠিসোঁটা নিয়ে হলের অভ্যন্তর ও বাইরে মহড়া দিয়ে জড়িতদের খুঁজতে থাকেন। নেতাকর্মীদের দাবি, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণ করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের নির্দেশে অন্য নেতাকর্মীরা নিজ নিজ কক্ষে ফিরে যান। এদিকে এই ঘটনার পর প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বুধবার বেলা ১২টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও দলীয় টেন্ডে সমাবেশ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে ভিসি একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার থেকে ফেরার পথে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে তাকে অবরুদ্ধ করে দাবির কথা জানান নেতাকর্মীরা। এসময় তোপের মুখে পড়েন ভিসি। পরে তিনি তাদেরকে কার্যালয়ে দেখা করতে বলেন।

বিজ্ঞাপন
পরে দুপুর দুইটার দিকে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে ভিসির কার্যালয়ে যান নেতাকর্মীরা। সেখানে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের পাশাপাশি ভারাপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী ও উপাচার্যের পিএস’র অপসারণের দাবিতে শ্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। এসময় প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত হয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাকে পাত্তা দেয়নি তারা। এরপর ভিসি ও পরিবহন প্রশাসকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অন্যান্য নেতাকর্মীদের বাইরে বের করে দেন। পরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের সঙ্গে প্রায় আধা ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন ভিসি, প্রো-ভিসি, প্রক্টর ও শাপলা ফোরামের সভাপতি। এসময় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবির পাশাপাশি ভারাপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী ও উপাচার্যের পিএস’র অপসারণের দাবি জানায় তারা। এদিকে নিরাপত্তার দাবি থেকে হঠাৎ দুই কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেয়ার বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে নেতাকর্মী ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সি সহিদ উদ্দীন মো. তারেক বলেন, তারা হঠাৎ কেন আমার পদত্যাগের দাবি করছেন তা আমি জানি না। হয়তো তাদের অনেক কিছু ফুলফিল করতে পারছি না এজন্য হতে পারে।

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, এই দাবি যৌক্তিক। আমরা চাইনা যে এরকম মানুষগুলো এরকম দায়িত্বশীল পদে থাকুক। কারন তারা আমাদের দলীয় আদর্শের না ও তারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিও না।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এবং কি উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা জানি না। এই ঘটনার পরে নিরাপত্তার জন্য প্রক্টর ও ইবি থানার ওসির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে কেউ সাড়া দেননি। আমরা তদন্তপূর্বক জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুলিশকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তারা কাজ করছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে।

ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। সিসি টিভি ফুটেজসহ অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মিজানূর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে যে কোন ধরণের বিস্ফোরণ কখনোই মেনে নেয়া যায় না। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসনের উচিৎ তদন্তস্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্মকর্তার পদত্যাগের দবি করে ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করা ঠিক না। এছাড়া প্রমাণ ছাড়া কোন দলকে দায়ী করাও ঠিক না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম বলেন, এ ঘটনা যেহেতু তদন্তের দাবি রাখে তাই আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কাজ করছি। এর মধ্যে বিশৃঙ্খলা করা ঠিক না। আন্তর্জাতিক সেমিনারে বিদেশী মেহমানদের সামনে হট্টগোল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্ষুন্ন করা হয়েছে। কর্মকর্তার অপসারণের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দেয়া ছাত্রলীগের কাজ নয়। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমাকে জানালে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু এভাবে হঠাৎ পদত্যাগ দাবি করা অবান্তর।

 

শিক্ষাঙ্গন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শিক্ষাঙ্গন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status