পূজামণ্ডপে আনসার মোতায়েন, সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ

দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সারা  দেশের সব পূজামণ্ডপে বাধ্যতামূলকভাবে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিমও গঠন করতে হবে আয়োজনকারীদের। সরকারের পক্ষ থেকে মণ্ডপগুলোতে পূজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ীভাবে আনসার মোতায়েন থাকবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি বাড়াতে হবে। এ ছাড়া সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালতও সক্রিয় থাকবে। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, এবার সব মণ্ডপে আনসার সদস্যরা স্থায়ীভাবে থাকবে। আমরা বলেছি, প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি থাকতেই হবে। নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। পাশাপাশি, ভ্রাম্যমাণ আদালতও তৎপর থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, মণ্ডপ কর্তৃপক্ষ আনসারদের থাকার ব্যবস্থা করে দেবেন। দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি এবার গতবারের চেয়ে মণ্ডপের সংখ্যা বেশি। আমরা বিস্তারিত আলোচনা করে কতোগুলো সিদ্ধান্তে এসেছি। ১ থেকে ৫ই অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবার ৩২ হাজার ১৬৮ মণ্ডপে পূজা হবে। এসব মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী, এটা পুলিশ হতে পারে আনসার হতে পারে, যেখানে যেটা প্রয়োজন সেভাবে ব্যবস্থা করা হবে। মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বেচ্ছাসেবক রাখা হবে। তাদের যেন আর্মড ব্যান্ড থাকে এটা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, যাতে করে আমরা বুঝতে পারি কারা স্বেচ্ছাসেবক। বড় মণ্ডপে নিরাপত্তা বাহিনী টহলে থাকবে। মণ্ডপে আসা নারী এবং শিশুদের ইভটিজিং ও মাদক সেবন বা যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা রোধে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নেবেন। যেকোনো ইমার্জেন্সিতে ৯৯৯-এ ফোন করতে বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতি মণ্ডপে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা পথ রাখতে হবে। এটাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আজান-নামাজের সময় মসজিদের পার্শ্ববর্তী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা চলাকালীন এবং বিসর্জনের সময় শব্দযন্ত্রের ব্যবহার সীমিত রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। পূজামণ্ডপে জুয়া ও মাদক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের অশুভ তৎপরতা রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় থাকবে। মণ্ডপে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য আলোচনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার ও গুজব রোধে এগুলো মনিটরিং করা হবে। কেউ এ ধরনের অপচেষ্টা করলে কঠোর অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে। গত বছর আমরা সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলাম, কিন্তু তা মানা হয়নি। গত বছর শারদীয় দুর্গোৎসবে কুমিল্লায় যে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছিল সরকারের নির্দেশনা মানলে তা হতো না। আজকে মিটিংটা সে কারণেই। বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এখানে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবাই মিলেই এ দেশ। আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সেই দেশে কেউ পূজা করতে পারবে না, বড়দিন করতে পারবে না, বৌদ্ধ পূর্ণিমা হবে না কিংবা মুসলমানদের ধর্মকর্মে কেউ বাধা দেবেÑ এটা হতে দেয়া হবে না। সবাই যার যার ধর্ম পালন করবে।