বাংলারজমিন
লক্ষ্মীপুরে দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবারলক্ষ্মীপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর স্টেনোটাইপিস্ট মো. আশরাফুজ্জামানকে মারধরের ঘটনায় দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারা হলেন আইনজীবী আশিকুর রহমান ও মিরাজ উদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছেন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান।
সোমবার দুপুরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইমারান হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরআগে রোববার রাতে আহত আশরাফুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত আইনজীবী আশিক লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের দক্ষিণ মজুপুর এলাকার আলী আজ্জমের ছেলে ও মিরাজ রামগতি উপজেলার চরসীতা গ্রামের হরমুজুল হকের ছেলে।
এজাহার উল্লেখ করা হয়, ঈদের ছুটি শেষে রোববার আদালতের প্রথম কার্যদিবস ছিল। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে অভিযুক্ত আইনজীবী মিরাজ ও আশিক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর এজলাসে আসে। একপর্যায়ে তারা চিৎকার চেচামেচি করে জোরপূর্বক বিচারপ্রার্থীদেরকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু বিচারপ্রার্থীরা বের হতে অস্বীকার করে। এতে অভিযুক্তরা এজলাসের দরজা বন্ধ করে দেয় ও পরে লাথি মেরে দরজা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। এসময় স্টেনোটাইপিস্ট আশরাফুজ্জামান ও জারিকারক আনোয়ার হোসেন সুমন তাদেরকে বাধা দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আশরাফুজ্জামানের মাথায় আঘাত করে। আইনজীবী আশিকের আঘাতের তার বাম চোখের কোনায় রক্তাক্ত জখম হয়। একপর্যায়ে তার পড়নে জামা ছিঁড়ে ফেলে। তাকে বাঁচাতে এলে জারিকারক সুমনও মারধরের শিকার হয়।
আদালত সূত্র জানায়, গত ৬ জুন সদর মডেল থানায় লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব একটি চুরির মামলা দায়ের করে। এতে রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহমেদ কাউসার উদ্দিন জামান ও ট্রাক চালক রুবেল হোসেন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। ৯ জুন তারা আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়- মামলার বাদি আইনজীবী, এজন্য আদালতে আসামিদের পক্ষে কোন আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নেয়নি। আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য আসামিরা লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনী সহায়তা চায়। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। ১০ জুন সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রোববার আইনজীবীরা আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। এতে আদালতের কার্যক্রম চলাকালে তারা এসে বাধা সৃষ্টি করে। পরে তারা কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায়। লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. রফিক উল্যাহ বলেন, আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনাটি নিয়ে এখনো আমরা কোন সিদ্ধান্ত নিইনি। মামলা নিয়ে অফিসিয়ালভাবে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।