ঢাকা, ১৪ মে ২০২৫, বুধবার, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

মেহেরপুর সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা, কৃষকদের মধ্যে অসি'রতা

মেহেরপুর প্রতিনিধি
১৪ মে ২০২৫, বুধবার

মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে বিজিবি এবং বিএসএফ’র যৌথ সতর্কতায় সীমান্ত এলাকায় চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সীমান্তের ওপারে কৃষিকাজ চললেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি ও টহল। সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিসি'তিতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এতে স'ানীয় কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসি'রতা।
প্রায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত জুড়ে বিশেষ করে মুজিবনগর, গাংনী এবং মেহেরপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে। এতে করে সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসি'রতা। দুই দেশের সীমান্তে অবসি'ত নো ম্যানস ল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের কৃষকরা ভারতীয় অংশের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। এসব জমির মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমি রয়েছে ইচাখালী সীমান্তে। এখানে প্রায় দুই হাজার বিঘা ভারতীয় জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে থাকেন বাংলাদেশের কৃষকরা। প্রতি বিঘা জমির জন্য তারা বছরে গড়ে ৮-১০ হাজার টাকা বর্গা দিয়ে থাকেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে উত্তেজনার জেরে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ওইসব জমিতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
স'ানীয় কৃষকরা জানান, বিএসএফ’র পক্ষ থেকে সীমান্ত এলাকায় মাইকিং করে জানানো হয়েছে, ভারতের অংশে থাকা ১৫০ মিটারের মধ্যে কোনো বাংলাদেশি যেন প্রবেশ না করে। এর ফলে কৃষকরা ফসল সংগ্রহ তো দূরের কথা, জমির কাছাকাছিও যেতে পারছেন না। কেউ কেউ ভয়ে গোপনে ফসল তুলছেন, আবার কেউ কেউ ফসল তুলে আনার আগেই মাঠ ছেড়ে দিচ্ছেন। ঝাঁঝাঁ ক্যাম্প এলাকার কৃষক রাহুল আমিন জানান, বিএসএফ ক্যাম্প থেকে সরাসরি মাইকিং করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এতে অনেকেই ভুট্টা ও অন্যান্য ফসল জমিতেই ফেলে রেখেছেন। একই গ্রামের সাইদ হোসেন জানান, তিনি প্রতিবছর দেড় বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষ করতেন। এবারো ভুট্টা চাষ করেছেন, কিন' বিএসএফ’র কড়াকড়ির কারণে সেই জমিতে যেতে সাহস পান না।
বিজিবি’র ঝাঁঝাঁ ক্যাম্পের কমান্ডার হারুন অর রশিদ জানান, কৃষকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে স'ানীয় মসজিদ থেকে প্রতিদিন মাইকিং করে বারণ করা হচ্ছে যাতে কেউ বর্গা নেয়া জমিতে না যায়। এসব জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়ে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হলেও কোনো স'ায়ী সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ইচাখালী সীমান্তে ৫৬টি দাগে মোট ৭৪ বিঘা ৫ কাটা জমি রয়েছে। যার মালিক ২৮ জন ব্যক্তি। এদের অধিকাংশই বুড়িপোতা ইউনিয়নের গোভীপুর গ্রামের বাসিন্দা। দেশভাগের সময় এসব জমি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলেও দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের কৃষকরা বর্গা নিয়ে সেখানে চাষাবাদ করছেন। বিএসএফ’র নিষেধাজ্ঞার ফলে কৃষকদের পাশাপাশি ভারতের কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ তারা বাংলাদেশ অংশের জমি পার না হলে নিজ জমিতেই প্রবেশ করতে পারছেন না। এদিকে এ বিষয়ে বিজিবি’র পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status