ঢাকা, ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

এক্সক্লুসিভ

সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে দুর্ঘটনা

নূরে আলম জিকু
১৩ আগস্ট ২০২২, শনিবার
mzamin

দেশের সড়ক ও মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা বেড়েই চলছে। প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। দুর্ঘটনা কমাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও আদালতের নির্দেশনা থাকার পরেও সড়কে ফেরেনি শৃঙ্খলা। নিশ্চিত হয়নি নিরাপত্তা। বিভিন্ন সময়ে বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি থাকলেও দুর্ঘটনার ব্যাপকতা কিছুতেই রোধ হচ্ছে না। দুর্ঘটনা বাড়ার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের উদাসীনতার কারণে মহাসড়ক ঘিরে গড়ে উঠছে হাটবাজার, শিল্পকারখানা। নিষিদ্ধ থ্রি-হুইলারসহ অন্যান্য ছোট ছোট বাহন মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। উল্টো পথে যানবাহন চলাচলের কারণে মুখোমুখি সংঘর্ষ হচ্ছে। হতাহতের সংখ্যা  বাড়ছে।

বিজ্ঞাপন
মহাসড়কের সঙ্গে আঞ্চলিক সড়কগুলোর সংযোগ থাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত যানবাহনও অবাধে বিচরণ করছে। এ ছাড়া ধীর গতি ও দ্রুত গতির সব যানবাহন চলছে পুরো সড়কজুড়ে। অন্যদিকে ওভারটেকিংয়ের নামে চলছে প্রতিযোগিতা। তারা বলছেন, মহাসড়কগুলোর মান উন্নয়ন হলেও সার্ভিস লেন করা হয়নি। দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে হলে সবার আগে প্রয়োজন সার্ভিস লেন। সড়কের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যানবাহনের গতি। 

এ ছাড়া সড়ক নিরাপদ আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকতে হবে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে, নির্বিঘ্ন যান চলাচলের জন্য দেশের ২২টি মহাসড়কে লেন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নেটওয়ার্ক ভিত্তিতে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় অনেকটাই পাল্টে গেছে মহাসড়কের চিত্র। দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে জনসচেতনামূলক সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। সড়কে দূরপাল্লার বিভিন্ন বাসগুলোর মধ্যে সব সময় প্রতিযোগিতা দেখা যায়। যত্রতত্র ওভারটেকের প্রবণতার কারণেই দুর্ঘটনার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসছে না।  এদিকে সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনা বাড়ার পেছনে যানবাহনের ফিটনেস, রুট পারমিট ও চালকদের অদক্ষতাকে দায়ী করেছেন কেউ কেউ। তারা বলছেন, সড়ক ও মহাসড়কে চলাচল করা অধিকাংশ যানবাহনের ফিটনেস কিংবা রুট পারমিট নেই। দুর্ঘটনার পরবর্তী সময়ে এমন প্রতিবেদন দিয়ে আসছে তদন্ত কমিটিও।

গত ১৬ই জুলাই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ট্রাক চাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত। এ ঘটনায় ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে গাড়িটির ফিটনেস ছিল না।  বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য বলছে, চলতি বছরের ৩রা জুলাই থেকে ১৭ই জুলাই পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩১৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৩৯৮ জন। মোট দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৯১ শতাংশ হয়েছে জাতীয় মহাসড়কে এবং ৪৬ দশমিক ৭০ শতাংশ হয়েছে আঞ্চলিক মহাসড়কে। উল্টো পথে যানবাহন চলাচল করায় মুখোমুখি সংঘর্ষে ২৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, দ্রুতগতিতে যান চলাচল ও হাত উঠিয়ে রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে পথচারীকে চাপা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে ৫০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এ ছাড়া চালকদের বেপরোয়ার কারণে যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা ছিল ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যনুযায়ী, গত বছর ৫ হাজার ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ২ হাজার ১৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে। আঞ্চলিক সড়কে ১ হাজার ৬৭০টি, গ্রামীণ সড়কে ৯৫৪টি, শহরের সড়কে ৬৬৫টি এবং অন্যান্য স্থানে ৬৮টি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে- সড়ক ও মহাসড়কে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চলাচল, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি, গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি। খোঁজ নিয়ে যানা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দিনদিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। সড়কের ত্রিশাল অংশ এখন রীতিমতো হয়ে উঠেছে দুর্ঘটনার হটস্পট। সম্প্রতি ট্রাক চাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের দেয়া তথ্য বলছে, ময়মনসিংহে গত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪২৫টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৬৬ জনের, আহত হয়েছেন ৬৮৭ জন। এরমধ্যে শুধু ত্রিশালেই ঘটেছে ১২৯টি দুর্ঘটনা। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম , ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এখন দুর্ঘটনার হটস্পট। স্থানীরা বলছেন, রোড ডিভাইডারের কাটা অংশ দিয়ে রাস্তা পারাপার, পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানো, সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল এবং সাধারণ মানুষের অসচেতনতাভাবে পথ চলা এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। 

এ ছাড়া উল্টো পথে চলাচল করছে বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল, সিএনজি, অটোরিকশা, নসিমন, করিমন, ভটভটিসহ ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার। মহাসড়কগুলো বেশির ভাগ ৪ থেকে ৬ লেন থাকলেও কয়েকটি লেনে ধীর গতির এসব পরিবহন চলাচল করছে। দূরপাল্লার দ্রুতগতির যানবাহন চালকদের পড়তে হয় বিপাকে। সিগন্যাল না দিয়েই লেন পরিবর্তন করায় অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এসব কারণেই মহাসড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেড়েই চলেছে। এর আগে ২০১৫ সালে দেশের ২২টি মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকার। এর কিছুদিনের মধ্যেই তা অনেকটাই কার্যকর করা হয়। তিন-চার মাস যেতে না যেতে আবার সেগুলো চালু হয়। পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও মহাসড়কে থ্রি-হুইলার বন্ধের জন্য আল্টিমেটাম দেয়া হলেও কোনো কাজ হয়নি। সর্বশেষ হাইকোর্ট থেকে মহাসড়কে থ্রি-হুইলার বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় প্রশাসন ও হাইওয়ে পুলিশের নির্লিপ্ততা, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব এবং কার্যকর তদারকির অভাবে মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ ধীরগতির যানবাহন বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাচ্ছে না। 

 বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এবং এর প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এসব দুর্ঘটনার কারণে বছরে জিডিপি’র ২ থেকে ৩ শতাংশ হারাচ্ছে দেশ। গবেষণা বলছে, যানবাহনের অতিরিক্ত গতি এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাব ৯০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। মহাসড়কে অপরিকল্পিত স্পিডব্রেকার বা গতিরোধকগুলোও দুর্ঘটনার জন্য অনেকাংশে দায়ী। এ ছাড়া ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, সড়কের পাশে হাটবাজার বসা, চালকদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব ইত্যাদি কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে।  রোড সেফটি ফাউন্ডেশন-এর নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।  বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, আমাদের দেশে যে মহাসড়কগুলো আছে এগুলো করিডোরভিত্তিক নয়। ফলে বিভিন্ন মিশ্র যানবাহন চলছে।

 একদিকে মহাসড়কে দ্রুত গতিতে যান চলাচল করছে অন্যদিকে মানুষ, হাত তুলে রাস্তা পারাপার করছে। এটা জাতীয় মহাসড়কে চলতে পারে না। উল্টো পথে যানবাহন চলাচল করছে। যেখানে রোড ডিভাইডার আছে, সেখানে অনায়াসে আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে দ্রুত গতিতে যানবাহন উঠে আসছে। নিয়ম নীতির কোনো পরোয়া করছে না। যার কারণে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, দুর্ঘটনা রোধে জাতীয় মহাসড়কগুলোকে করিডোর ভিত্তিতে করা অত্যন্ত জরুরি। ধীর গতি ও দ্রুত গতির যানবাহনের জন্য আলাদা আলাদা লেন হওয়া দরকার। মহাসড়কের উপর দিয়ে অনেক জাতীয় রোড ক্রসিং রয়েছে, সেগুলোকে আন্ডারপাস কিংবা ওভারপাসের ব্যবস্থা করা গেলে দুর্ঘটনার সংখ্যা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব। সড়ক দুর্ঘটনায় নিয়ন্ত্রণে বিআরটিএ’র কার্যক্রম নেই। তারা একটি নামে মাত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা। দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে তাদের কোনো দৃশ্যমান কাজ নেই। তারা শুধুমাত্র যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস দিয়ে যাচ্ছে।

 নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কাজ হচ্ছে রাস্তায় নেমে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি মনে করে যানবাহন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। টেকনিক্যাল কৌশল তাদেরকে অবলম্বন করতে হবে। একইসঙ্গে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের মূলদায়িত্ব পালন করতে হবে। শুধু মাত্র যানবাহনের ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন দিলেই হবে না, এসব যানবাহনগুলো সড়কে চলছে কিনা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে কিনা সেগুলো নজরদারি করতে হবে। পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক এবং পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক মানবজমিনকে বলেন, সড়কে বিশৃঙ্খলা থেকে দুর্ঘটনা ঘটে। আগে সড়কে যে বিশৃঙ্খলা ছিল, তা এখনো আছে। এই বিশৃঙ্খলা যতদিন পর্যন্ত থাকবে, দুর্ঘটনাও ঘটবে। বিশেষ করে দ্রুত গতির কারণে। বর্তমান সময়ে সবাই দামি গাড়ি কিনে, নতুন বাস কিনে, সবই দ্রুত গতিতে চলতে চায়। চালকের দূরপাল্লার পথে ভারী গাড়ি কিংবা মহাসড়কে চালানোর অভিজ্ঞতা আছে কিনা সেটা দেখা হচ্ছে না। মহাসড়কে ধীরগতি বা স্থানীয় পর্যায়ের ধীরগতির গাড়ি থাকার কথা নয়। অনেক ড্রাইভারদের হাইওয়ে চলার অভিজ্ঞতা নেই অথচ মহাসড়কে চলে আসে। সড়ক ডিভাইডার দেয়া হয়েছে যাতে মুখোমুখি সংঘর্ষ না হয়। কিন্তু উল্টো দিক দিয়ে গাড়ি চলে, এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। গাড়ি হাইওয়েতে পার্ক করার কথা না, অথচ মহাসড়কের যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হচ্ছে।

 স্থানীয় প্রশাসন সড়কের পাশে বড় বড় হাটবাজার বসানোর অনুমতি দিচ্ছে। যা মোটেও সঙ্গতিপূর্ণ না। এসব কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। দুর্ঘটনা রোধে করণীয় হিসেবে ড. শামসুল হক বলেন, হাইওয়ের পাশে যেসব বাজার রয়েছে এগুলো শুধু দুর্ঘটনা না, যানজটও সৃষ্টি করছে। যারা রাস্তার পাশে হাটবাজার বসানোর অনুমতি দিচ্ছে তাদেরকে সতর্ক হতে হবে। মহাসড়ক হচ্ছে দ্রুত গতির যানবাহনের জন্য। তার পাশে হাটবাজার, দোকানপাট করা অবৈধ। আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ব্যাপারে সরকারকে কঠোর অবস্থানে যেতেই হবে। পাশাপাশি যাদেরকে হাইওয়ে পুলিশ রাখা হয়েছে, তারা শুধু সরঞ্জামাদি কিনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাদের যে একটা নিবিড় দায়িত্ব আছে সেটা তারা পালন করছেন না। দুর্ঘটনা ঘটলেই সেই প্রমাণ পাওয়া যায়। কোনো কোনো গাড়ির ৫/৭ বছর পর্যন্ত ফিটনেস নাই। তাহলে এতদিন ধরে একটা গাড়ি যে চলছে, সেটাই বলে দেয় ফিটনেসবিহীন গাড়ি তাদেরকে ম্যানেজ করে চলাচল করছে। তিনি বলেন, যদি গাড়ির ফিটনেস না থাকে দীর্ঘমেয়াদি ভাবে, এবং ভারী গাড়ি চালানোর জন্য যদি চালকের যোগ্যতা না থাকে তাহলে এরসঙ্গে হাইওয়ে পুলিশকেও যুক্ত করে মামলা হওয়া উচিত।

 কারণ দীর্ঘদিন যাবৎ হাইওয়ে পুলিশের চোখ কীভাবে ফাঁকি দিয়ে সড়কে চলাচল করলো। তারা দুর্ঘটনার আগে শনাক্ত করলো না কেন? তাদের দায়িত্বটা কি? এসব কারণেই দুর্ঘটনা বাড়ছে। দুর্ঘটনা রোধে যাদের কাজ করার কথা তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছেন না। আর এ কারণে দুর্ঘটনাও কমিয়ে আনার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।  হাইওয়ে পুলিশ বলছে, প্রতিদিনই মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযানে ফিটনেস, লাইসেন্স ও গাড়ির গতিবেগ চেক করা হচ্ছে। মহাসড়কে দ্রুত গতির গাড়ির সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রতিটি গাড়ি চেক করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার মানবজমিনকে বলেন, বিআরটিএ যাচাই-বাছাই করে যানবাহনের রুট পারমিট, ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং চালকের লাইসেন্স দেয়। সড়ক ও মহাসড়কে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। হাইওয়ে পুলিশ গাড়ির পারমিট, ফিটনেস সার্টিফিকেট ও চালকের লাইসেন্স রয়েছে কিনা সেটা যাচাই-বাছাই করে। প্রয়োজনে জরিমানা করে। রুট পারমিট ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামানো অপরাধ। যারাই আইন অমান্য করবে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status