অর্থ-বাণিজ্য
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: আতঙ্কে পুঁজিবাজারে বড় দরপতন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(৬ দিন আগে) ৭ মে ২০২৫, বুধবার, ৪:২৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দর পতন হয়েছে। বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ৯০ শতাংশের বেশি কোম্পানি শেয়ারের দর হারিয়েছে। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩ শতাংশের বেশি। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও ছিল প্রায় অভিন্ন চিত্র।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধজনিত ভীতির কারণে এমনটি ঘটেছে। যদিও তারা তারা মনে করেন, এই আতঙ্ক একেবারেই অর্থহীন। প্রথমত: পাকিস্তান-ভারতের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে গড়াবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত: এই সংঘাতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তেমন প্রভাব পড়বে না। অকারণ আতঙ্কে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে শেয়ার বিক্রি করলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, সুযোগ নেবে সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠি, তারা দীর্ঘ মেয়াদে অনেক লাভবান হবে।
মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানের কয়েকটি জায়গায় হামলা চালিয়েছে ভারত। এদিকে ওই হামলার জবাবে পাকিস্তান ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছে। এই সংঘাতের ঘটনা টানা মন্দাবস্থার ভেতর দিয়ে যাওয়া পুঁজিবাজারে বড় আঘাত হিসেবে নেমে আসে। আস্থার সংকটে ভুগতে থাকা বিনিয়োগকারীদের একাংশের নার্ভাস ব্রেকডাউন ঘটে। অকারণ আতঙ্কে তারা শেয়ার বিক্রির জন্য মরিয়া হয়ে উঠায় বাজার টালমাটাল হয়ে ওঠে।
বুধবার মূল্যসূচকের নিম্নমুখী ধারাকে সঙ্গী করেই লেনদেন শুরু হয় পুঁজিবাজারে। বেলা যত বাড়তে থাকে সূচক ততটাই কমতে থাকে। সকাল ১০টা ১৮ মিনিটে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গতকালের চেয়ে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ বা ৯৩ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৫৭ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে নেমে আসে।
তবে প্রাথমিক ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর বাজারে কিছুটা পুনরুদ্ধারের আভাস দেখা যায়। পরবর্তী ২০ মিনিটে সূচকের কিছুটা পুনরুদ্ধারও হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ ধারা বজায় থাকেনি। বাজার আবার উল্টোদিকে মোড় নেয়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত পতন চলতেই থাকে।
বুধবার ডিএসইএক্স ১৪৯ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা ৩.০১ শতাংশ কমে ৪ হাজার ৮০২ দশমিক ৪১ পয়েন্টে নেমে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এত বড় দরপতন হয়নি এই বাজারে। এদিন নির্বাচিত ৩০ কোম্পানির সূচক ডিএস৩০ ২ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং শরীয়াহ সূচক ৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ কমেছে।
ডিএসইতে বুধবার ৩৯৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮৫টি দর হারিয়েছে, যা লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ৯৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এই সময়ে দর বেড়েছে মাত্র ৯টির। আর দর অপরিবর্তিত ছিল ৫ টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড।
বুধবার ডিএসইতে সূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। এই বাজারে লেনদেন হয়েছে ৫১৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট, যা আগের দিনের চেয়ে ৩৩ টাকাটি ২৮ টাকা কম। গতকাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫৪৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।