ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

আবাসিক হোটেলে নারী চিকিৎসক খুন, বয়ফ্রেন্ড গ্রেপ্তার

মরিয়ম চম্পা
১২ আগস্ট ২০২২, শুক্রবার
mzamin

রাজধানীর পান্থপথের আবাসিক হোটেলে নারী চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকাকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত তার বন্ধু সাবেক ব্যাংকার রেজাউল করিম রেজাকে গতকাল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ ঘটনায় ৩ ক্লু ধরে তদন্ত করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। খতিয়ে দেখছে রেজাউলের সঙ্গে তান্নাতুলের কতোদিনের সম্পর্ক? হোটেলের সিসিটিভি ভিডিও ক্যামেরা ঘটনার  সময় রহস্যজনক কারণে বন্ধ ছিল। হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে ভোটার আইডি কার্ড কেন নেয়নি। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা ছিল কিনা এসব বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ এবং সিআইডি’র ক্রাইম সিন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজা এবং জান্নাতুল স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই আবাসিক হোটেলে উঠেছিলেন। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। জান্নাতুলের সঙ্গে রেজাউল করিমের প্রেমের বিষয়টি পারিবারিকভাবে মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার।

 এটা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে পারিবারিকভাবে অশান্তি চলছিল।  সম্পর্কের টানাপড়েন এবং বিয়ের বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে নারী চিকিৎসককে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, হোটেলে প্রবেশের সময় জান্নাতুলকে একটি কালো বোরকা এবং তার কথিত স্বামী (প্রেমিকের) রেজাউলের ফর্মাল চেক শার্ট-কালো প্যান্ট পরে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন
কিন্তু হত্যাকাণ্ড শেষে রেজাউল কক্ষের দরজায় তালা মেরে বেরিয়ে যাওয়ার সময় রহস্যজনক কারণে সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি তখন বিদ্যুৎ ছিল না। তারা যখন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামের আবাসিক হোটেল চতুর্থ তলার ৩০৫ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেয় এ সময় তাদের কাছ থেকে কোনো জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি নেয়া হয়নি। এটা কি শুধুমাত্র হোটেল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা না কি তাদের এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সেটাও তদন্ত করছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ ঘটনায় নিহতের বাবা শফিকুল আলম বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় বুধবার রাতে হত্যা মামলা করেন। মামলা নম্বর-১০। 

মামলার বরাত দিয়ে সূত্র জানায়, পূর্ব-পরিচয়ের সূত্র ধরে জান্নাতুলের সঙ্গে রেজাউলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জান্নাতুল মগবাজার কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্ত্রী রোগ ও গাইনি বিষয়ে একটি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। গত বুধবার ঘটনার দিন সকাল আনুমানিক সোয়া ৭টায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া নতুন কোর্সে ক্লাস রয়েছে বলে বাসা থেকে বের হন জান্নাতুল।  বিকাল ৫টা বেজে গেলে মেয়ে বাসায় ফিরে না আসায় তার মুঠোফোনে ফোন দেন তার বাবা। এ সময় জান্নাতুলের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরিচিতজন থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে কলাবাগান থানা পুলিশের মাধ্যমে তার মৃত্যুর বিষয়ে জানতে পারে পরিবার। পরবর্তীতে স্থানীয় থানা পুলিশ এবং ক্রাইম সিনের সহায়তায় হোটেলের চতুর্থ তলার ৩০৫ নম্বর কক্ষে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়। এ সময় তার গলা কাটা এবং বুকে-পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।  

নিহতের বাবা ডা. মো. শফিকুল আলম বলেন, জান্নাতুলের সঙ্গে রেজাউলের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি আমরা জানার পর মেনে নেইনি। রেজাউলকে ব্যক্তিগতভাবে আমরা জানি না। আমার মেয়েকে যেভাবে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়েছে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে একইভাবে তার মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি। সরজমিন পান্থপথের হোল্ডিং নম্বর-২০/২ ফ্যামিলি সার্ভিস এপার্টমেন্টের চতুর্থ তলার প্রবেশদ্বারে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। এ সময় হোটেল ম্যানেজার এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, এ ঘটনায় নিহত নারী চিকিৎসকের বাবা বাদী হয়ে তার রেজাউল করিমকে একমাত্র আসামি করে একটি মামলা করেছেন।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status