দেশ বিদেশ
‘এটা হলো ব্যানানা রিপাবলিক’
মানবজমিন ডেস্ক
১১ আগস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবারখারাপ সময় যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের। সোমবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই অঘোষিতভাবে আকস্মিক ফ্লোরিডার পাম বিচে তার বিলাসবহুল মার-এ-লাগো অবকাশ যাপন কেন্দ্রে তল্লাশি চালিয়েছে। সেখান থেকে বেশ কিছু ডকুমেন্ট জব্দ করেছে তারা। এ ছাড়া প্রতিনিধি পরিষদের হাউজ কমিটি যাতে তার আয়কর রিটার্ন হাতে পাওয়ার চেষ্টা ব্লক করে দিতে দীর্ঘদিন আদালতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার ফেডারেল আপিল আদালত তার সেই দাবিতে প্রত্যাখ্যান করেছে। এর মধ্যে সিএনএন খবর দিয়েছে নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেতিতিয়া জেমসের অফিস ডনাল্ড ট্রাম্পকে দেয়া আইনজীবীদের প্রত্যাহার করে নিতে পারে গতকাল বুধবার। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। যদি অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে ট্রাম্পের পক্ষে দেয়া আইনজীবীদের প্রত্যাহার করে নেয়া হয়, তাহলে তা হবে তার জন্য বড় এক আঘাত। এতে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের বিরুদ্ধে আর্থিক বিষয়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে যে সিভিল ইনভেস্টিগেশন চলছে, তাতে উভয় পক্ষ একে অন্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যেতে পারে। সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, রুদ্ধদ্বার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে এসব বিষয়ে।
তবে তিনি বুধবার খুব সকালে তার ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক পোস্টে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অব্যাহতভাবে সবচেয়ে বড় ডাইনি (উইচ হান্ট) হিসেবে তিনি দেখে যাবেন (লেতিতিয়া) জেমসকে। ট্রাম্প বলেছেন, আমার মহৎ কোম্পানি এবং আমাকে সব দিক থেকে আক্রমণ করা হচ্ছে। এটা হলো ব্যানানা রিপাবলিক। সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের আইনজীবীরা ত্যাগ করতে যাচ্ছেন ব্যতিক্রমী একটি আইনি সপ্তাহে। ট্রাম্পের কিছু উপদেষ্টা তাকে আগের সাক্ষ্যের মতো তাকে শপথের অধীনে আর্থিক বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অন্যরা তাকে এতে নিরুৎসাহিত করেছেন। কারণ, তিনি এক্ষেত্রে জটিল আইনি পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন। ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের বিরুদ্ধে আলাদা একটি ক্রিমিনাল বিষয়ক তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। আবার ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে চান ডনাল্ড ট্রাম্প, এমনটাই ব্যাপকভাবে প্রত্যাশা করা হয়। সেক্ষেত্রে প্রশ্নের উত্তর না দিলে তাতে রাজনীতিতে প্রভাব পড়বে বলে অন্যরা মনে করছেন। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রশ্নের উত্তর না দেয়া মানে অপরাধের একটি লক্ষণ প্রকাশ পায়। এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ট্রাম্পের একজন আইনজীবী।
একই প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে। দীর্ঘদিন ধরে নিউ ইয়র্ক রাজ্য তদন্ত করছে যে ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ঋণদাতাদের, ইন্স্যুরেন্স করেছেন যারা তাদেরকে এবং ট্যাক্স কর্তৃপক্ষকে বিভ্রান্তিকর আর্থিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিপথে নিয়েছেন কিনা তা নিয়ে। সেই তদন্ত শেষ হয়ে এসেছে। তার প্রেক্ষিতেই ট্রাম্পকে এখন সাক্ষ্য দেয়ার কথা। জানুয়ারিতে লেতিতিয়া জেমসের অফিস থেকে বলা হয়েছে, তাদের হাতে উল্লেখযোগ্য তথ্যপ্রমাণ এসেছে। তাতে ইঙ্গিত মেলে যে, ঋণ পেতে, ইন্স্যুরেন্স এবং আয়কর সুবিধা পেতে আর্থিক বিবরণে মিথ্যা অথবা বিভ্রান্তিকর সম্পদের মূল্য দেখিয়েছিল ট্রাম্প অর্গানাইজেশন। এ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সিভিল তদন্ত প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া নেয়া হতে পারে সহসাই। সাবেক এই প্রেসিডেন্ট এবং তার ট্রাম্প অর্গানাইজেশন এর আগে বলেছে- তারা কোনো অন্যায় করেনি। পাল্টা অভিযোগ তুলেছে তারা। বলেছে, লেতিতিয়া জেমস হলেন একজন ডেমোক্রেট। তার দ্বারা সিভিল তদন্ত হওয়া হলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওদিকে ভাই এরিক ট্রাম্প ও বোন ইভানকা ট্রাম্পকে সঙ্গে নিয়ে ট্রাম্প অর্গানাইজেশন পরিচালনা করেন ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র। তারা ৫ম সংশোধনীর অধিকার এবং স্টেটের প্রশ্নের জবাব দেননি। তাদেরকে কী জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এবং তারা কী বলেছেন, তা পরিষ্কার জানা যায়নি।