প্রথম পাতা
অবস্থান কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার
২৪ মার্চ ২০২৫, সোমবারবকেয়া বেতন-বোনাসের দাবিতে রাজধানীর শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে রামপ্রসাদ সিং (৪০) নামে এক গার্মেন্টসের এক্সিকিউটিভের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রামপ্রসাদ সিং গাজীপুরের চান্দনা এলাকায় স্টাইল ক্রাফট লিমিটেডে নামে এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তিনি বর্তমানে রাজধানীর মিরপুরের পশ্চিম শেওড়াপাড়া এলাকার ৪৭৪/১ বাসায় ভাড়া থাকতেন।
রামপ্রসাদ সিংকে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্টাইল ক্রাফট লিমিটেডের সুইং ম্যানেজার মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, আমরা ১৪ মাস ধরে বেতন-ভাতা-বোনাসসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধা কিছুই পাইনি। এসবের দাবিতে আমিসহ আমাদের সহকর্মীরা শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় হঠাৎ রামপ্রসাদ সিং অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, শ্রম ভবনের সামনে বকেয়া বেতন বোনাসের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে অসুস্থ অবস্থায় এক গার্মেন্টসের এক্সিকিউটিভকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানিয়েছি।
এর আগে গত ৬ই মার্চ এক সভায় সিদ্ধান্ত হয় বিশ রমজানের মধ্যে সকল শ্রমিকের বকেয়া পরিশোধ ও ঈদ বোনাস দেয়া হবে। কিন্তু মালিকপক্ষ ও সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা বাস্তবায়ন না করায় স্টাইল ক্রাফট গার্মেন্টসের শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে আসছেন। মিজান নামে আন্দোলনরত এক শ্রমিক বলেন, আমাদের শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে মালিকপক্ষ। বারবার আন্দোলনের পর সরকার উদ্যোগ নিয়ে শ্রমিকদের পাওনার হিসাব চূড়ান্ত করলেও এখনো তা পরিশোধ করা হয়নি। সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এবং মালিকের বাড়ির সামনে একাধিকবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেও কোনো কার্যকর সমাধান আসেনি। মালিকপক্ষ কালক্ষেপণ করছে, অথচ শ্রমিকদের পরিবার অভুক্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এই অমানবিক পরিস্থিতির দায় সরকার ও মালিকপক্ষকেই নিতে হবে।
পাঠকের মতামত
১৪ মাস বেতন ছাড়া চলেছে কিভাবে? আমরাও চাকরি করি। একমাসের বেতন না পেলে পরের মাসে পরিস্থিতি নাজুক হবে। তার পরের মাসেও যদি বেতন না পাই তাহলে আর টেকা সম্ভব হবেনা। তল্পি-তল্পা গুছিয়ে গ্রামে চলে যেতে হবে।