ঢাকা, ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

ঘুষ ছাড়া কাজই হয় না সোনাইমুড়ী নির্বাচন অফিসে

সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
৮ আগস্ট ২০২২, সোমবার
mzamin

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাচন অফিসে ঘুষ বাণিজ্য ওপেন সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই হয় না। ভোটারের তালিকায় নাম উঠানো, সংশোধন ও স্থান পরিবর্তনসহ নানা কাজে ঘুষ না দিলে মাসের পর মাস ঘুরতে হয় অফিসের বারান্দায়। এতে ভোগান্তিতে এ উপজেলায় হাজারো সেবাপ্রার্থীরা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা নির্বাচন অফিসার অনলাইনে এনআইডির ভেরিফিকেশন কপি নেয়ার জন্য ফি তালিকায় ১১৫ টাকা লেখা থাকলেও তিনি নিচ্ছেন ২০০ টাকা। ভোটার স্থানান্তরে সরকারি কোনো ফি না থাকলেও ২৩০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এনআইডি কার্ডের কোনো প্রকার ভুল সংশোধন করতে হলে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। তবে অনলাইন কপি আনতে গেলে অফিস সহকারী ২০০ টাকা নিয়ে আবার শিখিয়ে দিচ্ছেন কেউ জানতে চাইলে বলবেন ১১৫ টাকা নিয়েছে। বিদেশ যাত্রীদের আইডি কিংবা পাসপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতা হলে তো কথাই নেই, তখন ঘুষের অঙ্ক ৫০ হাজার থেকে লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে গেলে যেখানে ব্যাংক স্লিপ নিয়ে যাওয়ার কথা, সেখানে অফিস সহকারী নগদ টাকার বিনিময়ে করিয়ে দিচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন
এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।  সেবাপ্রার্থী হেলাল উদ্দিন জানান, তিনি একটি এনআইডির নামের আক্ষরিক ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করলে নির্বাচন কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কালক্ষেপণ করেন। পরে নির্বাচন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার সহকারী শাকিলের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা দিলে এনআইডি সংশোধন হয়। ভুক্তভোগী মিজান, রাজু, ইয়াছিন আরাফাত, ইস্রাফিলসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, টাকা ছাড়া এখানে কোনো প্রকার সেবা নেয়া সম্ভব নয়। প্রতিনিয়ত নির্বাচন অফিসের সামনে ঘুষের টাকা নিয়ে ভুক্তভোগী ও অফিসের লোকজনের মাঝে হট্টগোল লেগে থাকে। তারা আরও বলেন, এনআইডি’র অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে গেলে তাদের ধার্য ২০০ টাকা করে দিতে হয়। একটু কম দিতে চাইলে কাজ হয় না। এ ছাড়াও নতুন এনআইডি করতে গেলে ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা দিতে হয়। কোনো ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয়পত্রের আক্ষরিক ভুল সংশোধন করতে গেলে অফিস সহকারী বলে দিচ্ছেন ৫-৬ মাস সময় লাগবে, তার আগে হবে না। ভুক্তভোগী সাজিদ খান পিতার নামের ভুল সংশোধন করতে গেলে তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে বলে তিনি অভিযোগ করেন। একাধিক ভুক্তভোগী জানান, এখানে তাদের নির্দিষ্ট ৪-৫ জন দালাল রয়েছে, তাদের মাধ্যমে চাহিদা মোতাবেক টাকা দিলে কাজ করতে অসুবিধা হয় না। তিনি আরও জানান, বিগত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের নমিনেশন ফরম দাখিলের সময় এনআইডি’র নেটকপি বাধ্যতামূলক জমা দিতে হবে বলে প্রায় সাড়ে ৬ শতাধিক প্রার্থীর প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। সে সময় অফিস খরচের কথা বলেও প্রার্থীদের কাছ থেকে আরও ৫০০-১০০০ টাকা করে আরও কয়েক লাখ টাকা নিয়েছিলেন এই অসাধু কর্মকর্তা ও তার সহযোগীরা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের সহকারী শাকিল বলেন, অনলাইন কপির ফি ১১৫ টাকা করে রাখা হয়। অন্য কাউকে বেশি দিয়ে থাকলে তা আমি জানি না। ভুল সংশোধনের জন্য টাকা নেয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, অফিস আমার কথায় চলে না, স্যারের কথায় চলে। এ ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ ফরিদ বলেন, অফিস চলবে আমার কথায়, এখানে কারও কিছু করার নেই। জেলা নির্বাচন অফিসার মেজবাহ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত  করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক/ এবারো ভোগাতে পারে ১৩ কিলোমিটার

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status