ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

লালমনিরহাটে বালির পরিবর্তে মাটি কেটে জিও ব্যাগ ভরাট

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
৮ আগস্ট ২০২২, সোমবার
mzamin

তিস্তার তীব্র ভাঙন। আতঙ্কে কয়েক হাজার পরিবার। জরুরি ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ পাউবো’র। অভিযোগ জিও ব্যাগে বালির পরিবর্তে ভরাট করছে মাটি। তাও নদীভাঙা পরিবারের ভিটে-মাটি-ক্ষেত কেটে। শুধু ভিটে-মাটি কেটে জিও ব্যাগ ভরাট নয়। নদীর ধারে কৃষকের জমির মাটিও কেটেও করছে ভরাট। এমন অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে। জরুরি ভাঙন রোধের নামে পাউবো’র লুটপাট কয়েক লক্ষাধিক টাকা। জিও ব্যাগ ভরাটে অনিয়ম দুর্নীতিতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

বিজ্ঞাপন
এ কাজের ঠিকাদারের ব্যাপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ঠিকাদার তিনজন কিন্তু তাদের নাম জানা নেই। সরজমিনে লালমনিরহাট সদরের খুনিয়াগাছ চোঙ্গাদ্বারা ও দিঘলটারী হিন্দু পল্লী গেলে দেখা মেলে এ চিত্রের।  জানা গেছে, সম্প্রতি তিস্তায় বন্যা পরবর্তী লালমনিরহাট সদরের খুনিয়াগাছ ইউনিয়নে চোঙ্গাদ্বারা ও দিঘলটারী হিন্দু পল্লী এলাকায় দেখা দেয় তীব্র ভাঙন। ২ কিলোমিটার ভাঙন রোধে পাউবো জিও ব্যাগ ফেলে ভরাট করে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তও নেয়। জিও ব্যাগে বালি ভরাট করে ফেলার জন্য জরুরিভাবে টেন্ডার পায় ৩ জন ঠিকাদার। প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার বরাদ্দ হয়। প্রতি বস্তা ৫শ’ টাকা। কিন্তু পাউবো’র কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের সঙ্গে আঁতাত করে জরুরি কাজের সুযোগে জিও ব্যাগে বালির পরিবর্তে করছে মাটি ভরাট। গ্রামবাসীর অভিযোগ নদী ভাঙনের শিকার মানুষের শেষ সম্বল বসতভিটে, কৃষি জমি ও নদীর পাড় মাটি কেটে ভরাট করছে পাউবো’র জিও ব্যাগ। চোঙ্গাদ্বারা গ্রামের আনছার আলী জানান, তার বসতভিটে অর্ধেক নদীতে গেছে, বাকি অর্ধেকও মাটি কেটে জিও ভরাট করছে পাউবো’র লোকজন।  বাধা দিলেও মানছে না তারা। দিঘলটারীর হিন্দু পল্লীর মিনতি বালা বলেন, ‘স্বামীর ভিটের মাটি কাটপার নাগছে বাধা দেই তাও মানে না।’ সুবল রায় জানান, ‘আমাদের জমি ভাঙন রক্ষায় জিও ব্যাগ নদী ভাঙন রোধ করবে, কিন্তু বালি না দিয়ে তার পরিবর্তে আমাদের জমি-বসত ভিটে কেটে জিও ভরাট করে কাজ করছে। তাহলে বালির টাকা যাবে কার পকেটে।’ খুনিয়াগাছ ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাদল জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশে বালি না থাকায় বালি তোলা সমস্যার কারণে মাটি বসতবাড়ি কেটে জিও ভরাট করছে। টিআইবির সনাক এর পক্ষ থেকে ডা. আশিক ইকবাল জানান, মানুষের ক্ষতি করলো তিস্তার ভাঙন। তার ওপর পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বসতভিটে কেটে জিও পূরণ করছে। তাহলে বালুর টাকা কোথায় গেল? তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান জানান, নদী থেকে বালি উত্তোলনের সমস্যার কারণে মাটি কেটে আপাতত জিও ব্যাগ ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড উত্তরাঞ্চল প্রধান প্রকৌশলী মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঁইয়া জানান, জিও ব্যাগ মাটি দিয়ে ভরাট করে নদীতে ফেলার নিয়ম নেই, বালি দিয়ে ভরাট করে নদীতে ফেলতে হবে। যদি এ রকম ঘটনা ঘটে তাহলে খতিয়ে দেখা হবে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status