প্রথম পাতা
নেতৃত্ব চূড়ান্ত টানাপড়েন কাটেনি
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার
টানাপড়েনের মধ্যেই নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব চূড়ান্ত করেছেন গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র নেতারা। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও নাগরিক কমিটির শীর্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আগামী ২৪শে ফেব্রুয়ারি নতুন দলের আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগে একদফার ঘোষণা দেয়া স্থান শহীদ মিনার থেকেই ছাত্রদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তার আগে তিনি উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করবেন। আর সদস্য সচিব পদে দায়িত্ব পাচ্ছেন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। এ ছাড়া মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। আর মুখপাত্রের ভূমিকায় থাকবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির জন্য নাম চূড়ান্ত করা হচ্ছে। রোববারের সভায় প্রায় ৭৫ জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়।
এদিকে নেতৃত্ব নিয়ে টানাপড়েন থাকলেও এক পক্ষ কমিটি চূড়ান্ত করেছে। সদস্য সচিব পদের অন্যতম আরেক দাবিদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদের অনুসারীরা এখন কী করবেন সেটিই আলোচনা হচ্ছে। তারা আগামী ২২শে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবী কাউন্সিলের ব্যানারে এক সমাবেশের ডাক দিয়েছেন। যেখানে জুলাই বিপ্লবের ১৩৫টির মতো সংগঠন অংশ নেবে বলে জানা গেছে। আখতার ও জুনায়েদ অনুসারীরা গত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জুলাই আন্দোলনে তাদের অংশীদারিত্বের বিষয় নিয়ে একের পর এক পোস্ট করছেন। গতকাল আলী আহসান জুনায়েদ এক ফেসবুক পোস্টে আস্থা ও বিশ্বাস মিলে গঠিত লক্ষ্যই জুলাইয়ের বড় শক্তি উল্লেখ করে বলেন, ‘সামনের দিনের যাত্রা সম্মিলিত হোক কিংবা স্বতন্ত্র ও আলাদা হোক না কেন, আমি মনে করি আস্থা ও বিশ্বাসেই এগিয়ে যাবো বহুদূর। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমরা আজ এমন এক দেশে আছি যেখানে মুক্ত আলোচনা হচ্ছে, আলোচনা সম্ভব হচ্ছে। হয়তো কিছু মাস আগে হলেও এই আলোচনা-সমালোচনা কিংবা বিতর্কের সুযোগটাই আমরা পেতাম না। আমি আসলে প্রচণ্ড আশাবাদী আর পজিটিভ একটা মানুষ, তাই আমি দেখি আশার গল্প।’ নাগরিক কমিটির এক সদস্য সচিব নাহিদ-আখতারের নেতৃত্বে নতুন দলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়াও মূল দলের আগে ছাত্র সংগঠন আসবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র সংগঠনের আবির্ভাব নিয়ে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তারা জানান, ‘স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’- স্লোগানকে সামনে রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, নতুন এই ছাত্র সংগঠনটি লেজুড়বৃত্তিক হবে না, স্বতন্ত্রভাবে কাজ করবে। নতুন ছাত্র সংগঠনের নীতি-আদর্শ হবে ‘স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’। শিগগির এই ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর আগে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জনমত জরিপ করবো। সেখান থেকে এই ছাত্র সংগঠনের নামসহ বিভিন্ন বিষয় নির্ধারণ করে ছাত্র সংগঠনটির আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করবে।
পাঠকের মতামত
প্রথমত, নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে অপরিহার্য। কিন্তু সেটা গতানুগতিক ধারার রাজনৈতিক দল হলে ফেইল করবে। দ্বিতীয়ত, নেতৃত্ব নির্বাচনে ভুল করলে নতুন দল ফেইল করবে। এখানে নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ কারণ নেতৃত্ব গুনেই সংগঠন সারাদেশে শক্তিশালী হবে। তৃতীয়ত, জুলাই আন্দোলন সারাদেশে যারা সংগঠিত ও ছড়িয়েছিলো তাদের নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ আসনে রাখতে হবে। নয়তো নতুন রাজনৈতিক দল পথ হারাবে ।
যে গণতন্ত্রের জন্য গত ১৫ বছর বিএনপি গুম খুন নির্যাতন জেল জুলুম সহ্য করে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন সেই গণতন্ত্র কি এখন সোনার হরিণ? মানুষের ভোটের অধিকার, সুশাসন, মানবাধিকার ও কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠাই বড় সংস্কার।
আপাতত এই দেশে কোনো নির্বাচন আমরা চাই না। সবাই ডক্টর ইউনুস সাহেবকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন এই আশা রাখছি সবার কাছে। ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস সাহেব আগামী ১০বছর আমাদের এই দেশ পরিচালনা করবেন। এটাই একমাত্র প্রত্যাশা। গতানুগতিক ও বিরক্তিকর রাজনীতি এই দেশে আর ফিরে আসতে দেয়া হবে না।
নতুন রাজনৈতিক দল থেকে আমরা যেন নতুন জাতি গঠনের কর্মসূচি পাই। শুধু বিপ্লব করলেই হবে না বিপ্লবের চেতনায় যুব সমাজকে জাগিয়ে তুলতে হবে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে তবে তা যেন প্রতিহিংসায় পরিনত না হয়। আর বিশেষ গোষ্ঠির প্রতিনিধিত্ব যেন না থাকে। অর্জন যেন হাইজাক না হয়। সাধু সাবধান।
Congratulations for the new party in Bangladesh. As we general peoples may we know thier income source. because next generation will follow them. should every thing is happned with under law.
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মহানায়ক যারা, বিভিন্ন প্রাইভেট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তাঁদের অনেকের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে। এর ফলে তাঁদের মধ্যে জাতীয় রাজনৈতিক আকাঙ্খা তৈরি হয়েছে। এঁরা অদম্য। কিন্তু, নেতৃত্ব নিয়ে যদি টানাপোড়েন লেগে যায় তা ভবিষ্যতে সুখকর নাও হতে পারে। 'সদস্য সচিব পদের অন্যতম আরেক দাবিদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদের অনুসারীরা এখন কী করবেন সেটিই আলোচনা হচ্ছে।' জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সকল ছাত্র সংগঠনের ভূমিকা দেখা গেছে। ফলে সবার জন্য সম্মানজনক পদপদবি থাকা বাঞ্ছনীয়, যাতে ঐক্যবদ্ধ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে তাঁদের লক্ষ পূর্ণতা পায়। কেউ যদি অসন্তুষ্ট থাকে তাহলে কোন্দল ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে শুরুতে যদি হোঁচট খায় তা ভালো লক্ষ্মণ নয়। সুতরাং, বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে কারো মনে অসন্তোষ থাকলে দ্রুত মিটিয়ে ফেলা উচিত।