বাংলারজমিন
শান্তিগঞ্জে কয়েকশ’ হেক্টর জমির ফসল হুমকির মুখে
শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সোমবারসুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে হাওরের কয়েকশ’ হেক্টর বোরো ফসলি জমিতে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে ফেটে গেছে ফসলি জমি। হাওরের জলমহাল পলিমাটিতে ভরাট হওয়ার ফলে স্বল্প সময়ে পানি শুকিয়ে গেছে। জমিতে সেচ করার ব্যবস্থা না থাকায় এবং বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা তাদের আবাদি ফসল নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।
জানা যায়, উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের সুরাইয়া বিল জলমহালটি বিদ্যমান রয়েছে। সরজমিন দেখা যায়, সবুজ রঙের ধান গাছ বাতাসে দোল খাচ্ছে। হাওর জুড়ে বোরো ফসল রোপণ করেছেন কৃষকরা। তবে জমিতে চরম সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। সুরাইয়া বিল জলমহালটিতে কোনো পানি নাই। জলমহালের সমিতির লোকজন কিছু কিছু জায়গায় নিজ উদ্যোগে খনন করে ডোবা তৈরি করছেন। তবে সেটি খুবই সীমিত। কৃষক মো. এনামুল হক জানান, আমাদের হাওরে চরম সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। সুরাইয়া বিল জলমহালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমাদের এমন দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এই হাওরের কৃষি জমিগুলো বাঁচাতে জলমহালটি খনন করতে হবে। বিলের ইজারাদাররাও প্রতি বছর খনন করেন। তবে এটি খুবই সামান্য। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপকভাবে জলমহালটি খনন করা হলে কৃষি জমি বাঁচবে, অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
কৃষক সোহেল মিয়া জানান, জলমহালটি একেবারেই ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমাদের জমি আর বিল সমান্তরাল হয়ে গেছে। এ বছর বৃষ্টি না হলে আমাদের রোপণকৃত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জলমহালের ইজারাদার জীবদাড়া আদর্শ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি সাজিরুল ইসলাম জানান, বোরো মৌসুমের শুরুতেই হাওরের কৃষকরা আমাদের বিলের পানি দিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। কিন্তু জলমহালটি একেবারেই ভরাট হয়ে গেছে। আমরা প্রতি বছরই নিজেদের অর্থে বিলের কিছু কিছু অংশ খনন করে ডোবা তৈরি করি। কিন্তু এটায় কুলায় না। বৃহৎভাবে খনন করা প্রয়োজন। বিলটি ইজারা নিয়ে আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিব জানান, এই হাওরে আমাদের প্রচুর পরিমাণে বোরো জমি চাষাবাদ হয়েছে। এখানে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটিকে অবহিত করবো। সেইসঙ্গে সেচ সংকট নিরসনের জন্য বিএডিসিকেও অবগত করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা জানান, বিলটি ভরাট হওয়ার ফলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ লিখিত আবেদন করেননি। তবে প্রতিটি জলমহালই খনন করা প্রয়োজন। বিলটি খননের জন্য আবেদন করলে আমরা যাচাই-বাছাই করে খননের জন্য অনুমতি দিতে পারবো বা কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে সেটি খনন করাতে পারবো।