ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯ শাবান ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

প্রবীণদের ক্যান্সারে জেরিয়েট্রিক কেয়ার মডেল

ডা. মহসীন কবির লিমন
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার

বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২৫
বাংলাদেশে বাড়ছে প্রবীণ জনগোষ্ঠী, বাড়ছে ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রবীণের সংখ্যা। তাই প্রবীণ ক্যান্সার রোগীদের জন্য জেরিয়েট্রিক কেয়ার মডেল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রবীণদের শরীর ও মন অনেকটাই ভেঙে যায়। ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের সঙ্গে তাদের শারীরিক এবং মানসিক সহনশীলতা কম থাকে; ফলে তারা নিরুপায় অসহায় হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বে প্রবীণদের ক্যান্সারের চিকিৎসা ও প্রবীণদের স্বস্তিময় জীবন দেয়ার জন্য ‘জেরিয়েট্রিক কেয়ার মডেল’-এর মাধ্যমে  চিকিৎসা ও সেবা প্রদান করা হয়।  প্রবীণদের ক্যান্সারের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ‘জেরিয়েট্রিক কেয়ার মডেল’টি সম্পর্কে একটু জেনে নেয়া যাক-
* বহুমুখী পেশাজীবীদের সমন্বয়: প্রবীণ রোগীর চিকিৎসা সাধারণত একাধিক বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে হয়। যেমন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ, জেরোনটোলজিস্ট বা জেরিয়েট্রিক বিশেষজ্ঞ, প্যালিয়েটিভ কেয়ার বিশেষজ্ঞ, জেরিয়েট্রিক  ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট, ডায়েটিশিয়ান, জেরিয়েট্রিক নার্স এবং জেরিয়েট্রিক কেয়ার গিভার। একটি পূর্ণাঙ্গ পেশাজীবীদের মাধ্যমে রোগীর শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।
* টার্মিনাল কেয়ার: ক্যান্সার ধীরে ধীরে মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে, তাই রোগীকে শুধু চিকিৎসা নয়, তার যন্ত্রণা কমানোর জন্য টার্মিনাল কেয়ার বা প্যালিয়েটিভ কেয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই কেয়ারে রোগীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
* মানসিকভাবে সুরক্ষিত রাখা: প্রবীণরা অনেক সময় ক্যান্সারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে মানসিকভাবে অসুবিধায় পড়েন। একজন জেরোনটোলজিস্ট-এর তত্ত্বাবধানে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা এবং প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং ও সাপোর্ট প্রদান করা জরুরি।
* হার্ট ও কিডনির প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেয়া: প্রবীণদের শরীরের জটিলতা যেমন হাড়ের সমস্যা, হার্ট বা কিডনির রোগ থাকতে পারে, যা ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। চিকিৎসাকালীন সময়ে এই বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দেয়া জরুরি।  
* পুষ্টিকর খাবার খাওয়া: ক্যান্সারের চিকিৎসা চলাকালীন পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রবীণদের ক্ষেত্রে তাদের ডায়েটের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়া উচিত, যাতে তারা সঠিক পুষ্টি পায়।
* ফিজিক্যাল থেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন: ক্যান্সার এবং তার চিকিৎসার ফলে শক্তি হারানো, পেশির দুর্বলতা, কিংবা শরীরের ভারসাম্যহীনতা হতে পারে। এই অবস্থায়, ফিজিক্যাল থেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন কার্যক্রম রোগীর শারীরিক সক্ষমতা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে পারে।
* পারিবারিক সহায়তা: প্রবীণ রোগীর পরিবারকে চিকিৎসার প্রতিটি পর্যায়ে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা উচিত। পরিবার তাদের সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, যেমন তাদের মানসিক সাপোর্ট, দৈনন্দিন কাজের সহায়তা ইত্যাদি।
জেরিয়েট্রিক কেয়ার মডেল প্রবীণদের ক্যান্সার চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্যভাবে ভূমিকা রাখতে পারে এবং চিকিৎসা প্রক্রিয়া আরও কার্যকরী করে তোলে। প্রবীণ রোগীর ক্যান্সার চিকিৎসায় উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ‘ওজেরিয়েট্রিক কেয়ার মডেল’টি গুরুত্ব পাবে এমনটাই আশা করছি। 
লেখক: জেরোনটোলজিস্ট অ্যান্ড জেরিয়েট্রিক ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট
উপ-পরিচালক, জাপান বাংলাদেশ  ফ্রেন্ডশীপ রিটায়ারমেন্ট হোমস অ্যান্ড হসপিটাল
পূর্বাচলের পার্শ্ববর্তী রূপগজ্ঞ থানা রোড, ঢাকা।
 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status