খেলা
রংপুরের বিদেশিরা দেখালেন ক্রিকেট এতটাও সহজ না
স্পোর্টস রিপোর্টার
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার
ক’দিন আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল আন্দ্রে রাসেল, টিম ডেভিড, জেমস ভিন্সকে প্লে-অফের ম্যাচে খেলাবে রংপুর রাইডার্স। তবে নকআউট ম্যাচের আগের দিনও তারা ঢাকায় আসেননি। গতকাল এলিমিনেটর ম্যাচে দুপুর দেড়টায় খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি হয় রংপুর। সকাল সাড়ে ১১টায় যখন দলের বাকি ক্রিকেটাররা মাঠে আসার জন্য হোটেল লবিতে চলে এসেছেন, তখন রাসেল-ডেভিডরা হোটেলে পৌঁছান। পরে শৃঙ্খলা ছিল না রংপুর রাইডার্সের খেলায়ও। খুলনার বিপক্ষে হেরে আসর থেকে ছিটকে গেছে শিরোপাপ্রত্যাশী দলটি। ম্যাচের দুই ঘণ্টা আগে ঢাকায় আসা বিদেশিদের কেউই পারফর্ম করতে পারেননি। বিমানের জেটল্যাগ কাটাতে না পারা এই ক্রিকেটাররা দেখালেন ক্রিকেট আসলে এতটাও সহজ না।
বিপিএলের প্রত্যেক আসরের চিত্রই এটি। বিদেশি ক্রিকেটাররা থাকেন আসা-যাওয়ার মধ্যে। এবার তো তারকার উপস্থিতিই ছিল না। প্লে-অফে রংপুর বেশ ক’জন তারকা ক্রিকেটার নিয়ে আসে দলে। খুলনা টাইগার্সের একাদশেও ছিলেন গতকালই ঢাকায় আসা শেমরন হেটমায়ার ও জেসন হোল্ডার। তবে রংপুরের ব্যাটারদের ব্যর্থতায় তাদের খুলনার জয়ে কোনো ভূমিকা রাখার প্রয়োজন হয়নি।
রাসেল-টিম ডেভিডরা দুবাইয়ে খেলছিলেন আইএল টি-টোয়েন্টি। রোববার রাতেও ম্যাচ খেলেছেন রাসেল। পরের দিন সকালে ঢাকায় রংপুর শিবিরে যোগ দিলেও মাঠে আসতে পারেননি টিম বাসে। এমনকি টসের সময়েও মাঠে ছিলেন না তিনি। ম্যাচ শুরুর ১৮ মিনিট আগে ড্রেসিংরুমে প্রবেশ করেন এই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। টিম ডেভিড সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছেন শনিবার। একই দিনে ম্যাচ ছিলও জেমস ভিন্সেরও।
গতকাল টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে রংপুর। খুলনার বোলিং তোপে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে তারা। নতুন করে একাদশে যুক্ত হওয়াদের মধ্যে শুধু ব্যাটিং অর্ডার ঠিক ছিল ভিন্সের। ওপেনিংয়ে নেমে ৭ বলে ১ রান করেন তিনি। নাসুম আহমেদের বলে আনাড়ি শট খেলে ফিরতি ক্যাচ দেন এই ইংলিশ ব্যাটার। তবে এরপর রংপুরের টিম ম্যানেজমেন্ট একের পর এক স্থানীয় ব্যাটারদের নামাতে থাকেন। ৪ নম্বরে শেখ মেহেদী ৫ নম্বরে নামেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। অথচ সাধারণত এই দুজন নামেন ৬ বা ৭ নম্বরে আবার কখনও আরও নিচে। টিম ডেভিড আর আন্দ্রে রাসেল সাধারণত টি-টোয়েন্টিতে খেলে থাকেন ৪-৫ নম্বরে। অনেক সময় সেটা ৬ নম্বর হতে পারে। অথচ গতকাল টিম নামেন ৭ নম্বরে আর রাসেল ৮ নম্বরে। শুরুতে ধাক্কা খাওয়া দলকে সামলাতে দরকার ফ্রেশ খেলোয়াড়। কিন্তু যেসব বিদেশিরা গতকাল রংপুরের একাদশে ছিলেন সবাই ভ্রমণ ক্লান্তি নিয়েই মাঠে আসেন। ঢাকায় নেমে নেট সেশন দূরের কথা, সামান্য নকিং করার সুযোগও মেলেনি তাদের। দুজনেই খেলেন সমান ৯ বল। টিম করেন ৭ রান আর রাসেলের ব্যাট থেকে আসে ৪ রান। বাঁচা-মরার ম্যাচে তাদের ওপর ছিল দলের ভরসা। তবে ক্রিকেট যে এতটাও সহজ না যে সকালে এসে দুপুরেই বাজিমাত করবেন সেটাই দেখালেন রাসেল-টিম ডেভিডরা।
বিপিএলে অবশ্য এমন কিছু নতুন নয়। প্রায় প্রতি আসরেই প্লে-অফের আগে বড় তারকা আনে দলগুলো। তবে সকালে নেমে দুপুরে ভালো খেলেছেন এমন উদাহরণ নেই। গত আসরে তারা প্লে অফের আগে নিকোলাস পুরানকে দলে ভেড়ায়। কোয়ালিফায়ারের কোনো ম্যাচেই পুরান রান পাননি এবং দুইবার সুযোগ পেয়েও ফাইনাল খেলতে পারেনি রংপুর। এবার টানা ৮ জয়ে আসর শুরুর পর টানা ৫ হারে বিদায় ঘটলো তাদের।