অনলাইন
নাহিদ ইসলাম
বিএনপি মহাসচিবের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আরেকটা ১/১১ সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে
স্টাফ রিপোর্টার
(৩ সপ্তাহ আগে) ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৫:২৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০০ পূর্বাহ্ন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মূলত আরেকটা ১/১১ সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে তার ফেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার বিবিসি বাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে না পারলে নির্বাচন করতে পারবেন না।’ তার এই সাক্ষাৎকারের পরই তথ্য উপদেষ্টার কাছ থেকে এমন মন্তব্য এলো।
ওই ফেসবুক পোস্টে মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মূলত আরেকটা ১/১১ সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে। ১/১১ এর বন্দোবস্ত থেকেই আওয়ামী ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটেছিলো। বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে সামনে আরেকটা ১/১১ সরকার, সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতা এবং গুম-খুন ও জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার আলামত রয়েছে। ছাত্র ও অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকে মাইনাস করার পরিকল্পনা ৫ই আগস্ট থেকেই শুরু হয়েছে। ৫ই আগস্ট যখন ছাত্র-জনতা রাজপথে লড়াই করছে, পুলিশের গুলি অব্যাহত রয়েছে, তখন আমাদের আপসকামী অনেক জাতীয় নেতৃবৃন্দ ক্যান্টনমেন্টে জনগণকে বাদ দিয়ে নতুন সরকার করার পরিকল্পনায় ব্যস্ত ছিলেন (অনেকে ছাত্রদের কথাও বলেছেন সেখানে)। আমরা ৩ই অগাস্ট থেকে বলে আসছি আমরা কোনো প্রকারের সেনা শাসন বা জরুরি অবস্থা মেনে নেব না। আমাদেরকে বারবার ক্যান্টনমেন্টে যেতে বলা হলেও আমরা যেতে অস্বীকার করি। শেষ পর্যন্ত বঙ্গভবনে আলোচনা ও বার্গেনিং এর মাধ্যমে ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।’
জাতীয় সরকার চেয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ও নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে একটা জাতীয় সরকার। জাতীয় সরকার হলে ছাত্রদের হয়তো সরকারে আসার প্রয়োজন হতো না। জাতীয় সরকার অনেকদিন স্থায়ী হবে এই বিবেচনায় বিএনপি জাতীয় সরকারে রাজি হয় নাই। কিন্তু অভ্যুত্থানের পরেই দেশে জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি ছিল। অথচ বিএনপি জাতীয় সরকারের কথা বলতেছে সামনের নির্বাচনের পরে। ছাত্ররাই এই সরকারের এবং বিদ্যমান বাস্তবতার একমাত্র ফ্যাক্টর যেটা ১/১১ এর সরকার থেকে বর্তমান সরকারকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করে। বিএনপি কয়েকদিন আগে মাইনাস টু-এর আলোচনা করলেও এখন ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম করার জন্য নিরপেক্ষ সরকারের নামে আরেকটি ১/১১ সরকারের প্রস্তাবনা করছে। এ ধরনের পরিকল্পনা গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে এবং ছাত্র-জনতা কোনোভাবেই এটা মেনে নেবে না। এবং আমি মনে করি এটা বিএনপির বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র। আর এই সরকার জাতীয় সরকার না হলেও সরকারে আন্দোলনের সব পক্ষেরই অংশীদারত্ব রয়েছে এবং সব পক্ষই নানান সুবিধা ভোগ করছে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘সরকার গঠনের আগেই ৬ই আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল এবং পুলিশের আগের আইজির নিয়োগ হয়েছিল যারা মূলত বিএনপির লোক। এরকমভাবে সরকারের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত নানান স্তরে বিএনপিপন্থী লোকজন রয়েছে। নির্বাচনের নিরপেক্ষতার কথা বললে এই বাস্তবতায়ও মাথায় রাখতে হবে। রাষ্ট্রপতির পরিবর্তন, সংস্কার, নতুন সংবিধান, জুলাই ঘোষণা সব ইস্যুতেই বিএনপি বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অথচ এগুলা কোনোটাই ছাত্রদের দলীয় কোনো দাবি ছিল না। কিন্তু দেশের স্থিতিশীলতা, বৃহত্তর স্বার্থ এবং জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার জন্য ছাত্ররা বারবার তাদের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। কিন্তু এর মানে এই না যে গণতন্ত্রবিরোধী ও অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বিরোধী কোনো পরিকল্পনা হলে সেখানে আমরা বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেবো।’
তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ বিষয়ে ভারতের প্রধান দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সম্ভব হয়েছে অথচ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ বিষয়ে আমরা ঐক্য করতে পারি নাই এত হত্যা ও অপরাধের পরেও। হায় এই ‘জাতীয় ঐক্য’ লইয়া আমরা কি রাষ্ট্র বানাবো!’’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে দুর্বল করা সহজ। কারণ বাংলাদেশকে সহজেই বিভাজিত করা যায়। এ দেশের বড় বড় লোকেরা অল্পমূল্যে বিক্রি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। আমি মনে করি না সমগ্র বিএনপি এই অবস্থান গ্রহণ করে। বরং বিএনপির কর্মী সমর্থকদের বড় অংশই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন চায়।’
বিএনপির দেশপ্রেমিক ও ত্যাগী নেতৃত্বের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিএনপির দেশপ্রেমিক ও ত্যাগী নেতৃত্বকে আহবান করব, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে না গিয়ে ছাত্র-জনতার সাথে বৃহত্তর ঐক্য ও সংহতির পথ বেছে নিন।’
পাঠকের মতামত
নাহিদ সাহেবের কথা ১০০% যৌক্তিক।
কেয়ারটেকার সরকার গঠিত হলে তা হবে ৩ মাসের জন্য।আর ১/ ১১ সরকার ছিল ২ বছরের।দুটি এক হয় কিভাবে!
নির্বাচন দেন জনগন যাকে ভোট দিবে সে ক্ষমতায় আসবে,,, নির্বাচনের কথা শুনলেই জিহবা শুকায় যায় কেন?
ট্রেনিং এ ইন্ডিয়া যাচ্ছে আপনার মন্ত্রলায় থেকে, তো এই স্মপ্রকে কিছু তো বলেন!
জনাব নাহিদ সাহেবের কথার সাথে ১০০% একমত।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব সঠিক কথা বলেছেন।।।।।।।। পদত্যাগ করে দল গঠন করুন।।।।।
নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি এবং ১/১১ কোনভাবেই সমার্থক নয়।
100%সত্যিই
100 % agreed with MD. Nahid Islam.
Agreed
ছাএ জনতাকে আবার জেগে উঠতে হবে
Totally Agree ... Don't give any change to BNP
yessssssssssssssssssssssssssssss
আমি জানি মানবজমিন আমার এ মন্তব্য প্রকাশ করবে না তারপরও বলব বিএনপির বর্তমান আচরণে আমরা হতাশ।
শিবের গীত। সর্বশেষ উপদেষ্টার উপদেশ।
ঠিক কথা
বাহাসে না জড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে দেশ গঠন করুন।
Exactly....
আপনার মতামতে দেশের ৭০% জনগন একমতপোষণ করবেন।
তর্ক বিতর্ক না করে সংস্কার করে গনতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া জরুরি
Yes
Nahid Islam, you are 100% right,
বিএনপি মহাসচিব সঠিক কথাই বলেছেন। সত্য কথা বললেই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে না, সেটা আপনাকে বুজতে হবে। আপনারা পদত্যাগ করে ১০০ টা দল করেন, অসুবিধা তো নাই।
আমরা কেন ঐক্য ধরে রাখতে পারলাম না???
Yes