ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯ শাবান ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

নির্বাচিত সরকার ‘অনির্বাচিত সরকারের’ চেয়ে ভালো

স্টাফ রিপোর্টার
২২ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবারmzamin

নির্বাচিত সরকার ‘অনির্বাচিত সরকারের’ চেয়ে ভালো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে ‘শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী এবং জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে’ এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাকে অনেকে ভুল বুঝে যে, আপনি এত নির্বাচন নির্বাচন করেন কেন? বিশেষ করে ছাত্ররা তো বলেই। এখানে নির্বাচন বলার কারণটা হচ্ছে একটাই, আমরা বিশ্বাস করি, আমি জানি এই বিষয় ভুল কিনা, যেকোনো নির্বাচিত সরকার কিন্তু অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো। আমার এক্সসেস থাকে, আমি যেতে পারি, কথা বলতে পারি, এখন আমার সেই জায়গাটা নেই। এখনই নির্বাচন করে ফেলতে হবে, আমরা তা তো বলছি না। ন্যূনতম যে সংস্কারটা সেটা করে নিয়ে নির্বাচনটা করলে সমস্যাগুলো অনেকটা সমাধান হবে।

তিনি বলেন, সংস্কারের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস যে, প্রধান উপদেষ্টা খুব শিগগিরই এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদেরকে ডাকবেন, একটা সমাধানের দিকে আসবেন, আলোচনা হবে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাবো। নির্বাচনটার কথা এজন্য তাড়াতাড়ি বলি যে, নির্বাচনটা হলে দেশের সমস্যাগুলো চলে যাবে। এখানে আপনার একটা নির্বাচিত সরকার সে একটা পিপলস ম্যান্ডেট নিয়ে বসবে, এরা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) তো এখন বসতে পারেনি, ওদের মধ্যে সেই কনফিডেন্স তো নাই। জনগণের ভাষাটা তো বুঝতে হবে, সেটা আপনার একটা নির্বাচিত সরকার সবচেয়ে ভালো বুঝে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ধৈর্য ধরে সামনের দিকে যাই। অনেক ত্রুটি আছে- আমি বিশ্বাস করি, অনেক ত্রুটিকে তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) তুলে নিয়ে এসেছে, একটা জঞ্জালের মধ্যে এসেছে, একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত জঞ্জাল, আমার ধারণা ছিল না যে, এত খারাপ হয়ে গেছে। এই পরিবর্তনের পরে আমরা যখন দুই একটা জায়গায় খোঁজখবর নেই, অফিস-আদালতে খোঁজখবর নেই, একটা ভয়াবহ কাণ্ড, দুর্নীতি-চুরি ব্যক্তি স্বার্থ ছাড়া আর কোনো চিন্তা নাই।

তিনি আরও বলেন, এই অবস্থার পরিবর্তন তো একদিনে হবে না; ধৈর্য ধরেন, গণতান্ত্রিক একটা স্টাকচার খাড়া হলে নিশ্চয়ই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো। কখনো ধৈর্য হারাবেন না, কখনো আশা হারাবেন না। কেন জানি আমাদের প্রত্যাশা অনেক, কিন্তু ধৈর্য একেবারেই কম। এই তো কয়েক মাস হয়েছে, এর মধ্যে সব পাগল হয়ে গেছে। দেখেন আমাদের এই সরকার অনেক ভুল-ত্রুটি করছে, ভুল তো করবেই কারণ তারা রাজনীতি করেনি, তারা তো রাজনীতি জানে না, বুঝে না- তাই না। তাই তাদেরকে তো সেই সময় দিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন এখন বের হচ্ছে মিছিল-দাবি দাওয়া নিয়ে, এতদিন কোথায় ছিলে বাবা? তখন তো একটা কথা বলার কেউ সাহস পাওনি, সুযোগও পাও নাই। আর এখন যেহেতু একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে, সবাই নেমে গেছো।

তিনি আরও বলেন, মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট সোমবার বেরিয়েছে, এতগুলো ছেলেমেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে তার মধ্যে মনে হয় সাড়ে পাঁচ হাজার ভর্তির সুযোগ পেয়েছে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে, বাকিরা কী করবে? সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, হাইস্কুলে লটারি করে ভর্তি হয়। আমি একটা উদাহরণ দিচ্ছি- ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুল সেখানে লটারি করে ঠাকুরগাঁওয়ের ছেলেরা পরীক্ষা দিয়েছে, ক্লাস থ্রিতে যে ছেলেটা ভর্তি হবে তাকে যেতে হচ্ছে গাইবান্ধা স্কুলে। এটা কোনো ব্যবস্থা? কী লাভ এটাতে? কী তৈরি হচ্ছে আমি কিচ্ছু বুঝতে পারি না। এই যে একটা আমি বলবো যে, উন্মাদনা চলছে শিক্ষার ক্ষেত্রে, এটার ব্যাপারে কেউ দৃষ্টিও দিচ্ছে না, কথাও বলছে না, বিষয়গুলো পরিবর্তন করার জন্য কোনো চেষ্টা করা হচ্ছে না।
ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাংলাদেশের অনেক সমস্যা; তার মধ্যে লেখাপড়াটা একেবারে শেষ হয়ে গেছে, শিক্ষা এবং শিক্ষাব্যবস্থা এটা একদম শেষ, এটার মধ্যে কিছু অবশিষ্ট আছে বলে আমার মনে হয় না। আপনি প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে একেবারে ইউনিভার্সিটি, সব জায়গায় দেখবেন যে এত নিচুতে চলে গেছে তার মান- তা বলে বুঝানো যাবে না। 

তিনি বলেন, সরকার অনেকগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন। কিন্তু শিক্ষা বিষয়ক কোনো সংস্কার কমিশন হয় নাই। যেটা আপনার আগে প্রয়োজন ছিল, যেটা আগে দরকার ছিল বলে আমি মনে করি। গোটা সমস্যার মূলে ওই জায়গাটা। আমার যদি শিক্ষাটা ঠিক না হয়, পরিকল্পনা যদি আমার না থাকে- তাহলে আমি কী দিতে পারবো বা সমাজে কী পরিবর্তন আমি আনতে পারবো, আমি নিজে পরিবারের জন্য কী পরিবর্তন আনতে পারবো। 

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রনেতা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির সঞ্চালনায় সভায় শিক্ষাবিদ প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ, পলিসি গবেষক মাহাদী আমিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগী আফরোজা খানম রীতা, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, সোশ্যাল এক্টিভিস্ট সাইয়িদ আবদুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
 

পাঠকের মতামত

হাসিনা ২০৪০ পর্যন্ত টার্গেট দিয়েছিল। কাজেই অপেক্ষা করুন। আপনারতো ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ কোনটাতেই পারলেন না। পারতেনও না।

এম. এ. হুদা
২২ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ৪:১৭ অপরাহ্ন

তা তো সবাই জানে কিন্তু যারা নির্বাচিত সরকার হয়ে আসতে চায় তাদের শুদ্ধিকরণ খুবই দরকার তাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন দরকার জনকল্যাণের দিকে সম্পৃক্ত হওয়া দরকার বাস্তবতারই চিন্তা করা প্রয়োজন হবে। নতুন দল গঠন দেখে ভয় পেলে চলবে না।

সাহিল
২২ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ১০:১১ পূর্বাহ্ন

আপনি ঠিকই বলেছেন তবে পুরানো বস্তা পচা রাজনৈতিক স্বার্থ আর ক্ষমতা লেপসু দল গুলোকে পুনর্গঠিত হতে হবে মন মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে নতুন দলের ব্যাপারে ভয়-ভীতি পরিহার করে সত্তিকারের স্মৃতিশীল সমৃদ্ধশীল শান্তির বাংলাদেশ তৈরি করতে হবে।

সাহিল
২২ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ৮:৪৭ পূর্বাহ্ন

ইয়ে, মানে আগেই ভালো ছিলাম। এইতো?

Eyaqub
২২ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ৮:২২ পূর্বাহ্ন

সকল ক্ষেত্রে ভাল না, সেটা মাগুরা নির্বাচলে আপনারা প্রমান করেছিলেন। তাই যা করার ইউনুস সরকারেরই করা উচিত।

Nader
২২ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ৭:৪১ পূর্বাহ্ন

আপনারা যাতে "হাসিনা" হয়ে উঠতে না পারে সেই বন্দবস্ত করার পর নির্বাচন হবে।

Noor Mohammad
২২ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ৭:০৮ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status