ঢাকা, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার, ১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শাবান ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

গাজায় পূর্ণমাত্রার যুদ্ধবিরতি

হামাস-ইসরাইলের চুক্তিকে স্বাগত জানালেন ট্রম্প-বাইডেনসহ বিশ্ব নেতারা

মানবজমিন ডেস্ক

(৪ সপ্তাহ আগে) ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০১ পূর্বাহ্ন

mzamin

অবশেষে বহুল কাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরাইল। ঐতিহাসিক এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বহু দেশ। চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা। যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর অন্যতম ছিল কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশর।  

১৫ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধের উত্তাপ ছড়িয়েছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে। যুদ্ধের শুরু থেকেই বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরাইল। তাদের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও তারা তাদের হত্যাযজ্ঞ থেকে পিছ পা হয়নি। ২০২৩ সাল থেকেই একটি কার্যকরী যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে গভীর আলোচনা পর্যালোচনায় সরাসরি যুক্ত ছিল উল্লিখিত ওই তিন দেশ। তারা এই চুক্তিটিকে স্বাগত জানিয়েছে। 

প্রাথমিকভাবে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। এর মধ্যে ধীরে ধীরে গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে ইসরাইল। এছাড়া হামাসের হাতে থাকা জিম্মি এবং ইসরাইলি কারাগারে বন্দিদের মুক্ত করবে উভয় পক্ষ। 

কাতারের রাজধানী দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আল থানি বলেছেন, আগামী রোববার থেকে কার্যকর হবে যুদ্ধবিরতি। তিনি বলেন, মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো হামাস ও ইসরাইলের সঙ্গে এ বিষয়ে সরাসরি কাজ করছেন। 

এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, ঐতিহাসিক এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আমি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে পারি কেননা ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে জিম্মি বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হবে। এই চুক্তির মাধ্যমে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করা হবে এবং ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে যেসকল জিম্মি আটক রয়েছে তারা তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পারবে বলেও জানিয়েছেন বাইডেন।

প্রথম পর্যায়ে ছয় সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে। এ সময়ে হামাস ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে। প্রতিজন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে ইসরাইল বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।

এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে জিম্মিদের জন্য একটি নতুন চুক্তি হয়েছে, তাদের খুব শীঘ্রই মুক্তি দেয়া হবে। ধন্যবাদ!’ ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মের একটি পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার জাতীয় নিরাপত্তা দলের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ- গাজায় যেন পুনরায় ‘সন্ত্রাসীদের’ আশ্রয়স্থল হতে না পারে সেজন্য ইসরাইলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে।’
এক বিবৃতিতে বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার বলেছেন, কয়েক মাসের ভয়াবহ রক্তপাত এবং অসংখ্য প্রাণহানির পর, এটি সেই দীর্ঘস্থায়ী সংবাদ যার জন্য ইসরাইলি এবং ফিলিস্তিনি জনগণ মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করেছে। তিনি আরও বলেন, যেসব নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি রাতারাতি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে এবং যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য এই যুদ্ধবিরতি মানবিক সহায়তার বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করবে। এই মুহূর্তে গাজার দুর্দশা নিরসনে যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন স্টারমার। 

হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুঁতেরা। তিনি বলেছেন, এই চুক্তি বাস্তবায়নে সমর্থন জানায় জাতিসংঘ। অগণিত ফিলিস্তিনিদের জন্য টেকসই মানবিক সরবরাহ বৃদ্ধি করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। 
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি আরও বলেন, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে তুরস্ক।

এক্স-এর একটি পেস্টে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিও গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং গাজায় দ্রুত মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার ওপর গুরুত্বের দিতে জোর দিয়েছেন।

ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তিকে আমি আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। কেননা জিম্মিরা তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হবে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে পারবে। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে আলোর আশা দেখিয়েছে। সেখানের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অপরিসীম দুর্ভোগ সহ্য করে আসছে। উভয় পক্ষকেই যথাযথভাবে এই চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কেননা তাদের কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনাই একটি সমাধানের পথ স্থির করবে।

বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু বলেছেন, বেশ কয়েক মাস ধরে চলা সংঘাতের পর, জিম্মিরা তাদের পরিবারের কাছে ফেরত যেতে পারবে। এছাড়া গাজার জনগণের জন্য প্রচুর স্বস্তি অনুভব করছি। এই যুদ্ধবিরতি সংঘাতের অবসান ঘটাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। 

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, আশা করা যায় যে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেয়া হবে এবং গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হবে।

পাঠকের মতামত

ওই বেটা যাবার সময় নিজের কৃতিত্ব রক্ষায় তড়িঘড়ি করে একটি দলিল করেছে, ওর গুরুত্ব আছে কি ?

Khokon
১৭ জানুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার, ২:৫০ অপরাহ্ন

গাজায় অবশিষ্ট কি রয়েছে?

Tareq
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৫:২০ অপরাহ্ন

যুদ্ধ তো বাইডেন ই করেছে এবং যাবার আগে যবনিকা টেনে চলে যাচ্ছেন। এখন পরবর্তী খেলা ট্রাম্পের ! গাজায় কি আছে ? মাটিও তো নেই, তাই জগৎ বাসীকে দেখিয়ে নামে মাত্র যুদ্ধ বন্ধ করা হয়েছে।

Khokon
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২:৪৬ অপরাহ্ন

শোকর আলহামদুলিল্লাহ ।ফিলিস্তিনি ভাইদের দুর্দশা আশাকরি কিছুটা লাগব হবে। আল্লাহ তাদের সব হারানোর শোককে ভুলে সুন্দর ও নিরাপদ আগামী দান করুন ।

আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১:১৭ অপরাহ্ন

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট/ আবারো ঢাকা-দিল্লি কূটনৈতিক উত্তেজনা

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status