শেষের পাতা
‘আদিবাসী’ শব্দ বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
স্টাফ রিপোর্টার
১৩ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবারপাঠ্য বইয়ে ‘আদিবাসী’ শব্দ বাতিল এবং এ ধরনের রাষ্ট্রদ্রোহী অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং এনসিটিবি (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড) ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামক সংগঠন ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের দাখিল নবম-দশম বাংলা ব্যাকরণ বইতে সংযোজিত ‘সংবিধান পরিপন্থি পরিভাষা’ ব্যবহার করায় এই প্রতিবাদ করেন।
গতকাল এনসিটিবির সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের নেতাকর্মীরা এনসিটিবি ভবনের সামনে সমাবেশ এবং পাঁচ দফা দাবির পর ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে আদিবাসী শব্দ বাতিল, দোষীদের শাস্তি, এনসিটিবি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ভুল স্বীকার করে লিখিত বিবৃতি এবং এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী স্লোগান দেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা জানান, পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ পরিভাষা অন্তর্ভুক্তি অনুমোদন করায় এনসিটিবি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগসাজশ থাকা কর্মকর্তাদের পদত্যাগসহ আন্দোলনকারীদের দেয়া পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারি ঘোষণা না এলে ঘেরাও কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এ সময় তদন্ত কমিটি গঠন ও জড়িতদের অপসারণসহ শাস্তি দাবি করেন তারা।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক জিয়া বলেন, গত ৮ই জানুয়ারি আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঠ্যপুস্তক থেকে বিতর্কিত ও সার্বভৌমত্ববিরোধী ‘আদিবাসী’ শব্দটি প্রত্যাহারের ঘোষণা চেয়েছিলাম। কিন্তু মন্ত্রণালয় আমাদের হতাশ করেছে। তাই দেশের স্বার্থে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার স্বার্থে এনসিটিবি ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, বইতে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংযোজন খুবই আপত্তিকর, অনাকাঙ্ক্ষিত, সংবিধানবিরোধী ও রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ, যা বিচ্ছিন্নতাবাদের পথ সহজ করবে। কারণ বাংলাদেশে একমাত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং তাদের দেশি-বিদেশি পৃষ্ঠপোষক ও দোসররাই উপজাতি তথা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ‘আদিবাসী’ বলে প্রচার চালায় ও স্বীকৃতি চায়। তাদের এই প্রচার ও স্বীকৃতি চাওয়ার পেছনে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। ছলে-বলে-কৌশলে তাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের দেশে ‘আদিবাসী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নতুন একটি তথাকথিত স্বাধীন রাষ্ট্র ‘জুম্মল্যান্ড’ তৈরির পথ সহজ হবে। এনসিটিবিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সেই পৃষ্ঠপোষক ও দোসররাই ‘আদিবাসী’ শব্দটি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সরকারকে একটি তদন্ত কমিটি করে দ্রুত এদের চিহ্নিত ও অপসারণ করতে হবে এবং শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
আন্দোলনকারীরা জানান, সংগঠনের আহ্বায়ক জিয়াউল হক জিয়ার নেতৃত্ব পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসানের দপ্তরে যান কিন্তু চেয়ারম্যান মন্ত্রণালয়ে না থাকায় প্রতিষ্ঠানের সদস্য (অর্থ) প্রফেসর রবিউল কবির চৌধুরী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সঙ্গে একমত পোষণ করে পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী শব্দ ব্যবহারের বিষয়ে ভুল স্বীকার করেন এবং অতি শিগগিরই সংশোধনের আশ্বাস প্রদান করেন। এ ছাড়া এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও আশ্বাস দেন।