খেলা
রেকর্ডময় রাতে জোড়া সেঞ্চুরি লিটন ও তানজিদের
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৩ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার
সকালে বাদ পড়েছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াড থেকে। প্রধান নির্বাচক শুনিয়েছেন তার প্রতি আস্থা হারানোর কথা। ফরম্যাট ভিন্ন হলেও রাতেই ব্যাট হাতে জবাব দিলেন লিটন কুমার দাস। ব্যাট হাতে মোনালিসা হয়ে ওঠার দিনে ছুঁয়েছেন মাইলফলক, পেয়েছেন স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা, গড়েছেন রেকর্ড। এদিন দারুণ সেঞ্চুরি পেয়েছেন তার সঙ্গী তানজীদ হাসান তামিমও। তামিম-লিটনের জুটিতে হয়েছে রেকর্ড, ঢাকা ক্যাপিটালস গড়েছে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। সবমিলিয়ে যেন রেকর্ডময় রাত!
বিপিএলে গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা ক্যাপিটালস-দুর্দান্ত রাজশাহী ম্যাচে রীতিমতো চার-ছক্কার বন্যা হয়। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৫৪ রান করে ঢাকা। বিপিএলের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ দলীয় রান। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল ২৩৯ রান, সেটা যৌথভাবে। ২০১৯ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ২৩৯ রান করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। একই আসরে একই আসরে একই দলের বিপক্ষে সেটা স্পর্শ করে রংপুর রাইডার্স।
এদিন মূলত রাজশাহীর বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছেন ঢাকার দুই ওপেনার লিটন ও তামিম। দুজনে মিলে গড়েছেন ২৪১ রানের জুটি। ইনিংসের শেষ ওভারে ৬৪ বলে ১০৮ রান করা তামিম আউট হলে ভাঙে তাদের বিষ্ফোরক জুটি। ওপেনিং তো বটেই বিপিএলের ইতিহাসে যে কোনো উকেটেই এটা সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল ২০১ রানের। ২০১৭ সালে ঢাকা ডাইনামাইটেসের বিপক্ষে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রংপুরের হয়ে দ্বিতীয় উইকেটে এই জুটি গড়েন ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম ও ক্রিস গেইল। আর ওপেনিংয়ে এই রেকর্ড ছিল লু ভিনসেন্ট ও শাহরিয়ার নাফিসের। খুলনার আবু নাসের ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০১৩ সালে রাজশাহীর বিপক্ষে তারা ওপেনিংয়ে ১৯৭ রানের জুটি গড়েন। এদিন তামিম ও লিটন মিলিয়ে হাঁকিয়েছেন ১৭ ছক্কা ও ১৬ চার। ৬ চার ও ৮ ছক্কা হাঁকান তামিম আর লিটনের ব্যাট থেকে আসে ১০ চার ও ৯ ছক্কা। এছাড়া সাব্বির রহমান শেষ ওভারে নেমে হাঁকান আরও একটি ছক্কা। সঙ্গী হারালেও শেষ বলে ছক্কা মেরেই ইনিংসের ইতি টানেন লিটন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৫ বলে ১২৫ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে। এদিন ঝড়ের শুরু করেন তানজীদ হাসান তামিম। প্রথম দুই ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে দুটি চার। পঞ্চম ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে সমান দুটি করে চার ও ছক্কা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভার দিয়ে ঝড়ে যোগ দেন লিটন। রাজশাহীর স্পিনার মেহরাব হোসেনকে ওই ওভারে হাঁকান দুই চার ও ১ ছক্কা। এতে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন লিটন। পরের ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে আরও দুই চার ও ১ ছক্কা। এরপর লিটনের ব্যাট থেকে বৃষ্টির মতো চার-ছক্কা বেরিয়েছে। ইনিংসের নবম ওভারে সাব্বির হোসেনের নো বল ও ফ্রি হিট-দুটোতেই ছক্কা হাঁকান লিটন। তার ব্যাটিংয়ে শুরুতে ঝড় ওঠানো তানজীদ হাসান তামিমই আড়ালে পড়ে যান একপর্যায়ে। ২৪তম ফিফটি পূর্ণ করেন লিটন। ১২তম ওভারে আবার লিটনের সামনে মেহরাব। ওভারের শেষ দুই বলে টানা দুই ছক্কা হাঁকান ঢাকার এই ওপেনার। ১৫তম ওভারে সোহাগ গাজীকে আবার চার ও ছক্কা মেরে পৌঁছে যান সেঞ্চুরির আরও কাছে। পরের ওভারে একটা সিঙ্গেল নেওয়ার পরের বলে ব্যক্তিগত ৪৪ বলে চার মেরে পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। বিপিএল তো বটেই, স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতেই এটা লিটনের প্রথম সেঞ্চুরি। বিপিএলের ইতিহাসে যৌথভাবে দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। এর আগে ২০১২ সালে রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে লিটনের সমান ৪৪ বলে সেঞ্চুরি করেন বরিশাল বার্নসের ক্রিস গেইল।