অনলাইন
কানাডা-মেক্সিকো নিয়ে বিরূপ মনোভাব, শপথ গ্রহণের আগেই চরম বিতর্কে ট্রাম্প !
সিদ্দিকুর রহমান সুমন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
(২ সপ্তাহ আগে) ৯ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:৪২ অপরাহ্ন
কানাডাকে যুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের মানচিত্র প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। গালফ অব মেক্সিকোর নাম পাল্টে দেয়ার কথাও বলেছেন তিনি । এছাড়া গ্রিনল্যান্ড দখল নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন দশদিন পর শপথ নিতে যাওয়া মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট।
কানাডা বলছে, তারা শান্তি চায়। কানাডাকে আমেরিকার অংশ করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। তবে ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে ইউনাটেড স্টেইটসকে মেক্সিকান আমেরিকান করার উল্টো প্রস্তাব দিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবম।
অন্যদিকে প্রতিটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করার আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপিয়ান কমিশনের মুখপাত্র আনিতা হিপার। গ্রিনল্যান্ড দখল নিয়ে আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের পর বুধবার তিনি একথা বলেন।
শপথ গ্রহণের আগেই ট্রাম্পের এমন উদ্ভট চিন্তাভাবনা তার সম্প্রসারণবাদী এজেন্ডাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও ট্রাম্পের এই ধরনের মন্তব্যকে অপ্রাসঙ্গিক ও বিরক্তির হিসেবে অভিহিত করে কোনো গুরত্বই দিচ্ছেন না মার্কিন নাগরিকরা।
তবে সীমান্ত সুরক্ষায় দ্বিদলীয় সমঝোতার ভিত্তিতে ডেমোক্র্যাট সদস্যরা ভূমিকা রাখতে চায় বলে জানান হাউজ মাইনোরিটি লিডার হাকিম জেফরিয। বুধবার ক্যাপিটল হিলে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।
সম্প্রতি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এবার দেশটিকে যুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেন ট্রাম্প। নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বেশ কয়েকবার কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার কথা বলে আসছেন তিনি। সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টির ট্রুডো পদত্যাগ করার পর বিষয়টি আরও আলোচনায় আসে।
নিজের প্রথম মেয়াদে গ্রিনল্যান্ড কিনে নেয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল আর্কটিক দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাওয়ার বিতর্কিত মন্তব্যে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের বাসিন্দারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তবে গালফ অফ মেক্সিকোকে গালফ অফ আমেরিকা করার যে অনানুষ্ঠানিক প্রস্তাব ট্রাম্প দিয়েছেন, তার কড়া জবাব দিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবম।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ গালফ অফ মেক্সিকো নামটির স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরা ইউনাইটেড স্টেইটসকে কেন মেক্সিকান আমেরিকা বলি না। এটা শুনতেও তো ভালোই লাগে। যাই হোক ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন বলেও কিছু আছে।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই অবৈধ অভিবাসীদের গণ বিতারন করবেন এমন হুমকি আগেই দিয়ে রেখেছেন। এতেই ক্ষেপেছেন হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট জিওমারা কাস্ত্রো। ট্রাম্পের গণবিতাড়ন নীতি হন্ডুরাসের নাগরিকদের জন্য বাস্তবায়ন করা হলে, তার দেশে আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেবেন বলে পাল্টা হুমকি দিয়েছেন তিনি।
সব মিলে শপথ গ্রহণের আগেই যেনো চিরচেনা রূপে ফিরে আসছেন ট্রাম্প। আগামী ৪ বছর কেমন চলবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি তারই যেনো আভাস পাচ্ছে বিশ্ব !
বিশ্বের দুটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিক্রিয়াশীল শাসকরা ক্ষমতাসীন। গণতন্ত্রের দুর্ভাগ্য!!