ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ রজব ১৪৪৬ হিঃ

ভারত

ভারতে সেনাপ্রধানের অফিস থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক ছবিটি

বিশেষ প্রতিনিধি, কলকাতা

(১ মাস আগে) ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ পূর্বাহ্ন

mzamin

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। একাত্তরের এই দিনে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। আত্মসমর্পণের কাগজের স্বাক্ষর করছেন লেফটেন্যান্ট এ কে কে নিয়াজি। উপস্থিত ভারতের সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। এই ঐতিহাসিক ছবির একটি পেইন্টিং এতদিন ভারতীয় সেনাপ্রধানের অফিসে সগৌরবে টাঙানো ছিল ভারতীয় সেনার ঐতিহাসিক বিজয়ের স্মারক হিসেবে। বিদেশি অতিথি ও বিদেশি সেনা জেনারেলদের স্বাগত জানানো হতো যে লাউঞ্জে সেখানেই পিছনের দেওয়ালে ঝোলানো থাকতো ছবিটি। দশকের পর দশক এই ছবিটি দেখতে সকলে অভ্যস্ত হলেও সম্প্রতি দেখা গেছে সেখান থেকে ছবিটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। লাগানো হয়েছে নতুন ছবি। মিডিয়াতে এই সংবাদ প্রকাশের পর প্রবল সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সবচেয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রবীন সেনাকর্তারা। অনেক সমালোচকের মতে, রাজনীতির ছোঁয়া রয়েছে এর পেছনে। বিজয় দিবসের আগে এই কাজটি কেন করা হয়েছে সেই প্রশ্নও উঠেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্ভবত ইন্দিরা গান্ধীর সাফল্যে ও ঐতিহ্য  থেকে দূরে সরে থাকতে এই নতুন পেইন্টিং লাগানো হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই। সাবেক এক ব্রিগেডিয়ার সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, এই পরিবর্তন ঘটানোর ক্ষেত্রে সামরিক নেতৃত্ব কোনও আপত্তি করেননি। বরং রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছেন। 

সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচ এস পানাগ সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, এই ফটো পেইন্টিংটি ছিল হাজার বছরের মধ্যে ভারতের প্রথম বড় ধরনের সামরিক বিজয়ের প্রতীক। তিনি কটাক্ষ করে লিখেছেন, ভারতের উচ্চপদস্থরা সেটিকে সরিয়ে এখন বিশ্বাস করছেন আগামী দিনে বিজয়ের ক্ষেত্রে পুরাণ, ধর্ম ও ভঙ্গুর সামন্ত অতীতই প্রেরণা জোগাবে।

আরেক সাবেক  মেজর জেনারেল যশ মোর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, বাংলাদেশ যুদ্ধেও সময় অত্মসমর্পণের ছবিটি হচ্ছে আধুনিক ইতিহাসে ভারতের একমাত্র সামরিক বিজয়ের স্মৃতি। তিনি হতাশা প্রকাশ করে লিখেছেন, সেই ছবিটিকে সরিয়ে নেয়ার ফলে একই সঙ্গে প্রবীন সেনা ও ইতিহাসে উৎসুকদের সমানভাবে দুঃখ দিয়েছে।   

মিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, এখন ভারতের সেনাপ্রধানের অফিসে যে পেইন্টিংটি আত্মসমর্পণের ছবিটির জায়গায় জ্বলজ্বল করছে সেটি মহাভারতের অনুপ্রেরণাতে আঁকা হয়েছে। সেনাবাহিনী সূত্রে বলা হয়েছে, ”কর্মক্ষেত্র-ফিল্ড অব ডিডস” শির্ষক নতুন পেইন্টিংটি এঁকেছেন ভারতীয় সেনা বাহিনীর ২৮ মাদ্রাজ রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট কর্ণেল টমাস জেকব। এই ছবিতে সেনাবাহিনীকে ধর্মের অভিভাবক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। শুধু দেশ রক্ষার জন্য লড়াই নয়, ন্যায় ও জাতীয় মূল্যবোধকে তুলে ধরার প্রয়াসের কথা বলা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে প্রযুক্তগতভাবে উন্নত সেনাবাহিনী হিসেবেও।  
পেইন্টিংটিতে রয়েছে তুষারাবৃত পর্বতের প্রেক্ষাপটে  লাদাখের পানগং লেকের তীরে কামান ও হেলিকপ্টার । সঙ্গে রয়েছে কৃষ্ণের রথ, গেরুয়া বসন পরিহিত সন্ত ও পাখি। তবে একাত্তরের যুদ্ধে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবিটি কবে সরানো হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এখন সেটিকে কোথায় রাখা হয়েছে তাও জানা যায়নি। সম্প্রতি নেপালের সেনাপ্রধানের ভারতের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এই পরিবর্তন মিডিয়ার নজরে আসে।

পাঠকের মতামত

অন্য একটা দেশের ছবি, এতে ভারতের উদারতার প্রকাশ পায় না! যা বাংলাদেশের অর্জন, এর বিনিময়ে কত মূল্য দিতে হয়েছে বাংলাদেশিদের, তা এখন ভারত বুঝতে পেরেছে, ধন্যবাদ। Better late than never.

Sohela
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১:৩১ অপরাহ্ন

সত্যকে মিথ্যা র ছায়া দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। আজ সত্যিই প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশীরাই স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে ! হয়তো ভারতীয়রা নিজ স্বার্থে পিছন থেকে কিছুটা সাহায্য করেছে। সাহায্য ? বিপদে পড়লে সবাই সবাইকে সাহায্য করে যেমন বাংলার স্বৈরাচার হাসিনার পলায়নের পর ভারতীয় একমাত্র দেশে তাকে আশ্রয় দিয়েছে।

Khokon
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৪:১৯ অপরাহ্ন

এখন আপনারা খুশি তো? | যে ছবিটি বিগত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতের সেনা প্রধানের অফিসে টাঙ্গানো ছিলো, সেটা এখন সরিয়ে ফেলা হলো। সাধারণ কোন অফিস না, কোন রাজনৈতিক কার্যালয় না -একদম সরাসরি ভারতের সেনা প্রধানের অফিসে ছিলো ছবিটি। বিশ্বের যে কোন ব্যক্তি/ প্রতিনিধি যখন ভারতের এই সেনা প্রধানের অফিসে যাওয়ার ডাক পেতেন, তখন সবার সামনে সর্বপ্রথম এই বাংলাদেশের ছবিটিকেই দেখতেন। If they knew it, tis OK but if not তাহলে যখনই এই ছবি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হতো তখনই বাংলাদেশের নাম আসতো। এটি শুধু একটি ছবি না, এটি হচ্ছে বাংলাদেশ r বাংলাদেশের ইতিহাস -যা ভারতের সেনা প্রধানের অফিসে এতোদিন টাঙ্গানো ছিলো। ভাবা কি যায়? কাউকে কতটা নিকট ও আপন ভাবলে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়!? অন্য একটা দেশের ছবি, তাও আবার সেনা প্রধান অফিসে!

Truth
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৩:১৭ অপরাহ্ন

ভারত থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

ভারত সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status