শেষের পাতা
আলিফ হত্যা
চিন্ময় সমর্থক আইনজীবীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
৩০ নভেম্বর ২০২৪, শনিবারচট্টগ্রাম আদালতের সামনে আইনজীবী এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকাণ্ড এখনো টক অব দ্যা কান্ট্রি। সাইফুলের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে উত্তাল বন্দরনগরীসহ সারা দেশ। এরমধ্যে ওইদিন পুলিশের অবহেলার পাশাপাশি উঠে এসেছে সনাতনী জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর সমর্থক আইনজীবীদের অপেশাদারমূলক আচরণ। আদালতকে জিম্মি করে চিন্ময়কে জামিন নিতে ব্যর্থ হওয়ার পর অস্ত্রধারী বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আদালতে ভাঙচুর চালাতে উস্কানি দিয়েছেন তারা। এদের কয়েকজন আবার ভাঙচুরেও অংশ নিয়েছেন। সর্বশেষ তাদের প্রকাশ্য উস্কানিতেই অস্ত্রধারীরা এডভোকেট সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
সূত্রমতে, বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের আইনজীবী ছিলেন দু’জন। তবে শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন ২০-২৫ জন আইনজীবী। এদের মধ্যে কয়েকজন আইনজীবী অপেশাদার আচরণ করেছিলেন। এদের মধ্যে কেউ জয় শ্রীরামসহ বিভিন্ন উস্কানিমূলক স্লোগান দিয়েছেন, কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন। এমনকি আসামি চিন্ময় কৃষ্ণকে পা ধরে বসে থাকতে দেখা যায় কয়েকজনকে। অস্ত্রধারী ইসকন কর্মীদের এজলাসের ভেতরে যেতেও সহযোগিতা করেন তারা।
সাইফুল হত্যাকাণ্ডের সময় আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকা এক আইনজীবী মানবজমিনকে বলেন, ‘ওইদিন আমাদের কয়েকজন সহকর্মীর অপেশাদার আচরণের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। তারা তাদের পেশাদারিত্ব ভুলে গিয়ে সম্পূর্ণ সন্ত্রাসীরূপে এসেছিলেন। মূলত তারাই বাইরে থেকে অস্ত্রধারীদের এনে আদালতকে জিম্মি করে ফেলেন। তারা হ্যান্ডমাইক এনে একজন রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধীকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ করে দেন।’
তিনি বলেন, আমাদের কিছু সহকর্মীই মূলত সাইফুল হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড। তারা নিজেরাই আদালতে বিশৃঙ্খলা করেছিলেন। আবার এই অস্ত্রাধারী সন্ত্রাসীদের আদালতের মতো পবিত্র জায়গায় এনে আমাদের সহকর্মীকে হত্যা করিয়েছেন। কাজেই এই বহিরাগত সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি পতিত স্বৈরাচারের এই প্রেতাত্মা আইনজীবীদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী আরেক আইনজীবী বলেন, ‘আদালতের শুরু থেকেই এই আইনজীবীরা সেখানে খুব বাড়াবাড়ি করতে থাকেন। তাদের দাবি এখনই জামিন দিতে হবে, এক ঘণ্টার মধ্যে দিতে হবে। তখন সিএমএম আদালত অনেকটা বাধ্য হয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে আদেশ দেন। তখন তারা বিচারককেও প্রকাশ্যে গালিগালাজ করতে থাকেন। এরমধ্যে তারা বিশেষ কায়দায় সেই রায়ের কপি নিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতে যান। সেখানে গিয়ে বলেন, এখনই জামিন শুনানি করেন। এখনই জামিন দেন। না হলে আপনাকে এজলাস থেকে নামতে দিবো না। তারা বাইরে থেকে আসা সন্ত্রাসীদের নিয়ে বিচারককে অনেকটা রুমের মধ্যে বন্দি করে ফেলেন। সে সময় পুলিশও নির্বিকার ছিল। একপর্যায়ে বিচারক জামিন না দেয়ায় তারা আদালতে ভাঙচুর শুরু করেন। অনেক যানবাহন ভাঙচুর করেন।’
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সাইফুল হত্যাকাণ্ডে উল্লেখিত আইনজীবীদের পাশাপাশি আদালতের কিছু কর্মচারীও জড়িত ছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- আদালতের ক্লার্ক সমিতির সেক্রেটারি রিপন কান্তি নাথ। মূলত তার নেতৃত্বে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু কর্মচারী সেদিন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়েছিল। তাদের অনেকে সরাসরি হামলায় জড়িত ছিল। যে কারণে সাইফুলের জানাজা শেষে আইনজীবীরা ক্লার্ক সমিতির কার্যালয়ে আগুন দেন।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, আইন পেশা একটা মহৎ পেশা। আর এখানে পেশাদারিত্ব বজায় রাখা উচিত। তবে ওইদিন আমাদের কিছু আইনজীবী যা করেছেন, তা খুব দৃষ্টিকটু হয়েছে। কোনোভাবেই এটাকে পেশাদারিত্ব বলা যায় না।
ভাঙচুর ও হামলায় নেতৃত্ব দেয়া আইনজীবীদের বিষয়ে সমিতি কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আসলে আদালতের ব্যাপার। আর প্রশাসন বিষয়টি ভালো বুঝবেন। অপারাধীদেরকে উনারা নিশ্চয়ই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবেন।’
এদিকে আইনজীবী সাইফুল হত্যাকাণ্ডের দিন আদালতে ভাঙচুরের মামলায় আরও ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে ওইদিনের ঘটনায় পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় মোট ৩৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন মুসলিম আইনজীবীও আছেন। আটককৃতদের মধ্যে তিনজনের সাইফুলের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তবে সাইফুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মামলা করা হয়নি।
কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত সৈয়দ ওমর বলেন, ২৬শে নভেম্বর আদালতে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৩ মামলায় এ পর্যন্ত ৩৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন সরাসরি সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয় নিশ্চিত হয়েছি। তবে সাইফুলের পরিবার এখনো মামলা না করায় আপাতত তাদের পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ইসকনের সমর্থকরা চরম উগ্রতা দেখিয়েছে। প্রমাণসহ জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রমাণগুলো আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমকে পর্যবেক্ষণর আওতায় আনা উচিত সেইসাথে আ'লীগ নিষিদ্ধ কারী দের সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে বয়কট করা উচিৎ
ইস্কনের আইনজিবীদের বহিস্কার চাই।
ন্যায় বিচার চাই
They just exposed themselves. Now the government only needs to neutralize them through legal processes, and activists need to use this information for the information war.
এই সংবাদ পড়ে যা বুঝলাম তাতে ইস্কন নিষিদ্ধ করার আগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা উচিত। ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা আর মোদির সরকার এই সরযন্ত্রে ঘি ঢেলে দিচ্ছে। আমারা এর কঠিন প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইস্কন খেদাও দেশ বাঁচাও
এতকিছু হয়ে গেছে কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনী কি করছিল।এমন একটা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কেন আগে থেকেই সতর্ক থাকতে পারেননি গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যগণ।