ঢাকা, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯ রজব ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

কে এই মোস্তফা আমীন

স্টাফ রিপোর্টার
২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবারmzamin

বিনাসুদে ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সারা দেশ থেকে গাড়িতে গাড়িতে লোক আনা হয় ঢাকায়। লক্ষ্য ছিল শাহবাগে বড় জমায়েত। সেখানে অবস্থান নিয়ে বিশৃৃঙ্খলা তৈরি করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীদের তৎপরতায় ভেস্তে যায় সেই উদ্যোগ। কিন্তু শাহবাগের বড় জমায়েত চেষ্টার উদ্দেশ্য নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। হঠাৎ কেন এ জনসমাগমের আয়োজন। উদ্দেশ্যই বা কী? এর পেছনে কারা নাড়ছেন কলকাঠি। জানা গেছে, ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন এ কর্মসূচির ডাক দেয়। যে সংগঠনের আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমিন। রাজনীতির মাঠে যিনি নানা পক্ষের হয়ে কাজ করে থাকেন। এক এগারোর সময় তাকে নানা কর্মসূচিতে তৎপর হতে দেখা যায়। এ ছাড়া সময়ে সময়ে নানা প্ল্যাটফরমের নাম নিয়ে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। পুস্তিকা তৈরি করে বিতরণ করেন। 

তার এবারের কর্মসূচির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারা তাকে মাঠে নামিয়েছে, অর্থ দিয়েছে সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে। যেসব মানুষকে ঢাকায় আনা হয়েছিল তারা কোনো দল বা মতের কিনা তাও স্পষ্ট নয়। সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অংশ হিসেবে শাহবাগে বড় জমায়েতের টার্গেট ছিল সংগঠনটির নেতাদের এটি অবশ্য পরিষ্কার। ঢাকার বাইরে থেকে আনা লোকদের বলা হয়, সকাল ১০টায় রাজধানীর শাহবাগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা হবে, যেখানে ঋণসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর বিনিময়ে প্রত্যেককে এক হাজার করে টাকা দেয়া হয়। এ ছাড়াও আসা যাওয়া ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। কর্মসূচিতে যোগদানের উদ্দেশ্যে প্রত্যেককে একটি ফরম পূরণ করতে হয়। যার মাধ্যমে বিনাসুদে এক লাখ করে ঋণ দেয়া হবে বলে জানানো হয়। 
এই কর্মসূচির ডাক দেয়া মোস্তফা আমিন ফরওয়ার্ড পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দলেরও আহ্বায়ক। মোস্তফা আমিন বেশ কিছুদিন ধরেই ঢাকায় বড় ধরনের একটি জমায়েতের চেষ্টা করে আসছিলেন। শাহবাগে সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতিও চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। তারপরও গোপনে তিনি সমাবেশ করার চেষ্টা চালান। এর অংশ হিসেবে প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্য ও গোপনে বেশ কয়েকটি সভা করেছেন তার অনুসারীরা। সর্বশেষ কর্মসূচিও সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়। সমাবেশ সফল করার উদ্দেশ্যে ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেটের ব্যবস্থাও করেন তিনি। সমাবেশে আসা ব্যক্তিদের হাতে থাকা ছোট লিফলেটে লেখা ছিল ‘লুণ্ঠিত অর্থ উদ্ধার করবো, বিনা সুদে পুঁজি নেবো’। মোস্তফা আমিনের এ কর্মকাণ্ডের পেছনে সক্রিয় ছিলেন সদস্য সচিব মো. মাহবুবুল আলম চৌধুরী। ১৫ই নভেম্বর মোস্তফা আমিন ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে ২৫শে নভেম্বর ২০২৪ শাহবাগ মোড়ে, সকাল ১০টায়। ইতিহাসে নাম লিখান।’

ওদিকে মোস্তফা আমিনকে গ্রেপ্তারের পর তার কর্মসূচির লক্ষ্য নিয়ে তথ্য জানার প্রাথমিক চেষ্টা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার কাছ থেকে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে।

১৮ জন কারাগারে 
ওদিকে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অভিযোগে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ও অন্যতম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম চৌধুরীসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া মামলার প্রধান আসামি ও সংগঠনটির আহ্বায়ক এ বি এম মোস্তফা হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছেন। এই মামলায় ১৯ জনকে এজাহারনামীয় এবং ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। কারাগারে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের সমর্থক সৈয়দ ইসতিয়াক আহমেদ (৪৭), মো. মেহেদী হাসান (৩৪), অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের নেত্রকোনার আহ্বায়ক মো. রাহাত ইমাম নোমান (৩৩), মো. মাসুদ (৩৭), ইব্রাহিম (২৯), মো. আলেক ফরাজী (৪৪), মো. সাইফুল ইসলাম (৪৮), মো. আবু বক্কর (৪৯), মো. রিংকু (২১), মো. নিজাম উদ্দিন (৩২), সৈয়দ হারুন অর রশিদ (৬০), মো. আফজাল মণ্ডল (৪২), আব্দুর রহিম (৩০), নুরনবী (৪৫), মো. শহিদ (২৮) ও মোছা. কহিনুর আক্তার (৫০)। 

এদিন তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে সোমবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশের চেষ্টা করে অহিংস গণঅভ্যুত্থান নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটি সারা দেশের খেটে খাওয়া গরিব মানুষকে টার্গেট করে। তাদের বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত এনে সেগুলো বিনাসুদে ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসে। এর বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ জনপ্রতি এক হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেয় সংগঠনটি। এই ঘটনায় সোমবার রাতে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন শাহবাগ থানার এসআই হারুন অর রশিদ। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১২০বি/১৪৩/১৪৭/১৪৯/১৮৬/৩৩২/৩৫৩/৪২৭/১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামের ব্যানারে আসামিরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটনার জন্য সাধারণ জনসাধারণকে বিনাসুদে ঋণ দেয়ার কথা বলে শাহবাগ মোড়ে জমায়েত হয়। আসামিরা শাহবাগ মোড়ে থাকা ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের রোড ডিভাইডার ভেঙে অনুমানিক বিশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। এরপর পুলিশ ফোর্স গেলে আসামিদের অনেকেই পালিয়ে যায়।
 

পাঠকের মতামত

অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী। শিরোনাম এর সাথে ব্যাখ্যার মিল নেই।

আব্দুল হালিম (প্রভাষ
২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৭:৩২ পূর্বাহ্ন

His objective behind the proposed gathering be unearthed and legal action be taken against him immediately.

Prof Md Shah Jahan
২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ৮:৫৬ অপরাহ্ন

সে একজন আওয়ামী লীগের উচ্ছিষ্টভোগী ভারতীয় দালাল। ১০০ বছরের জন্য জেলে বন্দী করে রাখুন। বেচে থাকলে বাকি জীবন আর দালালী করবে না!!

বন্ধু খান
২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ৪:৫১ অপরাহ্ন

তাঁর পরিচয় স্পষ্টভাবে লিখুন।

আবু মকসুদ খান
২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ৯:০৩ পূর্বাহ্ন

পরিচয়টা পরিস্কার হল না। আরও বিশদভাবে জানতে চাই।

কামরুল হাসান
২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ৮:১৩ পূর্বাহ্ন

শাহাবাগে জমায়েত করার পরিকল্পনা রাতারাতি হয় নাই। এতো দির্ঘ্য সময় আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ কি করছিল? বুঝা যায় গোয়েন্দা বিভাগেই আ ব ম মোস্তফা আমিনের লোকবল রয়েছে অথবা এমনও হতে পারে সরকার তাদের (মোস্তাফা আমিনের) সকল সদস্যকে চিহ্নিত করা আটক করার জন্য একত্রিত হাওয়ার সুযোগ দিয়েছে।

শাজিদ
২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ৩:৫৯ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status