ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির আধুনিক চিকিৎসা ও পদ্ধতিসমূহ

অধ্যাপক ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল
১২ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার

ত্বকের হারানো রং ও জেল্লা খুঁজে পাওয়া এখন খুবই সহজ। লেজার চিকিৎসা থেকে ব্লিচিং-ত্বকের রং হালকা করার অনেক রকম উপায় আছে। 
ত্বক ফর্সা করার চিকিৎসার উদ্দেশ্য হচ্ছে ত্বকের অতিরিক্ত মেলানিন দূর করে দেয়া। যেহেতু আপনার ত্বকের কালো দাগ, রঙের অসামঞ্জস্য ইত্যাদির জন্য মেলানিনই দায়ী, তাই এর পরিমাণ কমলে ত্বকের রংও হালকা হয়ে যায়। ত্বক ফর্সা করার চিকিৎসা করালে মেচতা, রোদ থেকে হওয়া ক্ষতি, ফ্রেকেলস এবং অন্যান্য দাগও কমে যায়।
ত্বক ফর্সা করার সেরা চিকিৎসাসমূহ
ত্বক ফর্সা করার অনেক রকম চিকিৎসা করা যায়। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আপনার মুখ বা শরীরের অন্য অংশ ফর্সা করার জন্য আপনি নিম্নের একটি পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন। 

১. কেমিক্যাল পিল:
এই প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক নির্যাস থেকে সংগৃহীত কিছু আলফা হাইড্রক্সি এসিডের সল্যুশন লাগিয়ে ত্বকের উপরের ক্ষতিগ্রস্ত স্তরটি, যেখানে মেলানিন জমে, সেটিকে সরিয়ে দেয়া হয় যাতে নিচ থেকে সুস্থ নতুন ত্বক দেখা দেয়। কনসেনট্রেশনের উপর নির্ভর করে কেমিক্যাল পিল তিন রকমের হতে পারে- হালকা, মধ্যম ও গভীর। বিবর্ণ ত্বকের দাগ, ট্যান, কালো ছোপ বা রঙের অসামঞ্জস্য কমানোর জন্য কেমিক্যাল পিল একটি মৃদু পদ্ধতি। 

২. লেজার চিকিৎসা
লেজার চিকিৎসায় ত্বকের উপর একটি কেন্দ্রীভূত আলোর রশ্মি ফেলা হয়। এই আলো উচ্চশক্তিসম্পন্ন হয় এবং এটি ত্বকের অতিরিক্ত মেলানিনকে ভেঙে দেয়; এই মেলানিনকে ত্বকের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা শক্তি সরিয়ে দেয়। এর ফলে সুস্থ, উজ্জ্বল ত্বক দেখা দেয়। এই নতুনভাবে তৈরি হওয়া ত্বক নিখুঁত হয়। এই প্রক্রিয়াকে লেজার পিল বা লেজেব্রেশন-ও বলা হয়। এই লেজার চিকিৎসা ত্বকের কালো দাগ, সানট্যান, নিষ্প্রভতা ইত্যাদি সমস্যায় কার্যকরী। 

৩. ইনজেকশন
ত্বক ফর্সা করার ইনজেকশনে উপাদান হিসেবে থাকে গ্লুটাথায়োন, একটি ত্বকের রঙ হালকা করার দ্রব্য। এটি টাইরোসিনেজ নামের একটি এনজাইম তৈরিতে বাধা দেয়; এই এনজাইমটি শরীরে মেলানিন সৃষ্টিতে সাহায্য করে। একটি জনপ্রিয় মতামত হলো এই ইনজেকশন শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে পারে, ত্বককে ক্ষতিকর ইউভি আলো থেকে বাঁচাতে পারে এবং ত্বক ফর্সা করে দেয়। “ন্যাচারাল মেডিসিন কমপ্রিহেনসিভ ডেটাবেস” অনুযায়ী এই ইনজেকশন “হয়তো নিরাপদ” শ্রেণিতে পড়ে, যদিও এই ডেটাবেসে গ্লুটাথায়োনের ত্বক ফর্সা করার কার্যকারিতা সম্পর্কে কিছু বলা নেই। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি ডোজে গ্লুটাথায়োন ক্ষতিকর এবং এর কিছু খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। গ্লুটাথায়োনের ফলাফল নির্দিষ্টভাবে বলার আগে আরও কিছু গবেষণার প্রমাণ পাওয়ার প্রয়োজন আছে। এই ইনজেকশন অল্প কিছু স্কিন ক্লিনিকে পাওয়া যায়। তবে এই পদ্ধতি অনুসরণ করার আগে ভালোভাবে খোঁজ নেয়া উচিত।

৪. ত্বক ফর্সা করার কিছু প্রোডাক্ট
বাজারে বহু ধরনের রাসায়নিক ও ফর্সা হওয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পাওয়া যায়। অধিকাংশ প্রোডাক্টে উপাদান হিসেবে থাকে অ্যাজেলিক অ্যাসিড, আর্বুটিন, রেটিনল , হাইড্রোকুইনোন, গ্লাইকোলিক এসিড, ল্যাকটিক এসিড, কোজিক এসিড ইত্যাদি। এর মধ্যে কিছু উপাদান তাদের ব্লিচিং ক্ষমতার জন্য জনপ্রিয়। যদিও কিছু প্রোডাক্ট খুব তাড়াতাড়ি ত্বকের রঙ হালকা করে দিতে পারে, এই ফল দীর্ঘস্থায়ী হয় না এবং এগুলোতে ব্লিচিং করার রাসায়নিক থাকায় কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়। 

৫. ত্বক সাদা করার সার্জারি
আজকাল কালো দাগের সমস্যা কমানোর জন্য ইনভেসিভ প্রক্রিয়ায় আগ্রহ বেড়েছে। কিন্তু “ত্বক সাদা করার সার্জারি” বলে কিছু হয় না। অধিকাংশ ত্বক ফর্সা করার চিকিৎসাগুলো, যেমন লেজার টোনিং ও কেমিক্যাল পিল, নিরাপদ, কার্যকরী, নন-ইনভেসিভ প্রক্রিয়া যা ক্লিনিকেই করা যায়-হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত চর্ম বিশেষজ্ঞরা এই প্রক্রিয়াগুলো নিয়মিত করে থাকেন। আমাদের সেন্টারে এই পদ্ধতিগুলোর  অনেকগুলোর সার্ভিস আছে।
লেখক: চিফ কনসালট্যান্ট, কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার। চেম্বার: বিটিআই সেন্ট্রা গ্রান্ড, দ্বিতীয় তলা, গ্রীন রোড, ফার্মগেট, ঢাকা। প্রয়োজনে- ০১৭১১৪৪০৫৫৮
 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status