প্রথম পাতা
আওয়ামী লীগের ঘোষণায় উত্তেজনা, কড়া হুঁশিয়ারি সরকারের
স্টাফ রিপোর্টার
১০ নভেম্বর ২০২৪, রবিবারজুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের পর থেকে রাজনীতির মাঠে নেই আওয়ামী লীগ। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ অনেক নেতা। আত্মগোপনে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের নেতারা। এমনকি অভ্যুত্থান পরবর্তী দলটির হয়ে বক্তব্য-বিবৃতি দেয়ার মতো লোকও নেই। দিশাহারা নেতাকর্মীরা। এমতাবস্থায় আজ ১০ই নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবসকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে আসতে চায় দলটি। অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বিকাল ৩টায় রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তবে কর্মসূচি নিয়ে এখনো প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য বিবৃতি দেননি শীর্ষ নেতার। অবশ্য দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার একটি ‘ফোন রেকর্ড’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে তিনি কলের অপরপ্রান্তে থাকা জনৈক ব্যক্তিকে কর্মসূচি বাস্তবায়নের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। কিন্তু সরকারের তরফে বলা হয় গণহত্যাকারী ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও রাজনৈতিক দলগুলোও আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো।
এমতাবস্থায় উত্তেজনা বিরাজ করছে দেশব্যাপী। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরকারে স্থান পাওয়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বলেছেন, গণহত্যাকারী ও নিষিদ্ধ সংগঠনের কেউ কর্মসূচি করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড পেজে দেয়া এক পোস্টে শহীদ নূর হোসেনের স্মরণে ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, শহীদ নূর হোসেন দিবস এমন সময়ে সমাগত যখন বাংলাদেশে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। অগণতান্ত্রিকভাবে একটি অবৈধ ও অসাংবিধানিক সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে। দেশের জনগণের ইচ্ছা-অভিলাষের প্রতি তোয়াক্কা না করে তারা জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে। একটি আন্দোলনকে হস্তগত করে তার দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভূ-লুণ্ঠিত করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এই অবৈধ ও অসাংবিধানিক সরকার পক্ষপাতদুষ্টুভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধেকে নির্বাসিত করছে।
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আওয়ামী লীগসহ গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল মানুষদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে। অবৈধ সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গণহত্যা ও বাছ-বিচারহীনভাবে গণগ্রেপ্তার চালানো হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক, মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠলেও সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। যেহেতু সরকারের কোনো আইনগত, রাজনৈতিক ও সামাজিক বৈধতা নেই সেহেতু জনসাধারণের প্রতি তারা কোনো দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করছে না। তারা রাষ্ট্রে ও সমাজে বিদ্যমান গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধ্বংস করে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায়ে রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হচ্ছে এবং অভূতপূর্ব নৈরাজ্যবাদ কায়েম করেছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে সঠিক পন্থায় আনতে হলে গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী জনগণকে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে এবং এই অগণতান্ত্রিক অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চলমান রাখতে হবে। আগামী ১০ই নভেম্বর বিকাল ৩টায় শহীদ নূর হোসেন চত্বরে অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত মিছিলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী সাধারণ মানুষকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। একই সঙ্গে দেশব্যাপী সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক কল রেকর্ডে শেখ হাসিনাকে দলের এক নেতাকে কর্মসূচি নিয়ে দিকনির্দেশনা দিতে দেখা যায়। যেখানে তিনি দলীয় ওই নেতাকে কর্মসূচিতে ট্রাম্পের ছবি প্রদর্শনের নির্দেশনা দেন। অডিওতে শেখ হাসিনার কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, মিছিলে তাদের হাতে ট্রাম্পের ছবি থাকবে। এতে কেউ যদি বাধা দেয়, কোনো হামলা করে তাহলে তো সেটা ট্রাম্পের ছবিতে হামলা হবে। সেই ছবি তোলার জন্য আলাদা লোক থাকবে। তখন সেই হামলার ছবি আমি ট্রাম্পের কাছে পাঠাবো। ট্রাম্পের সঙ্গে আমার ভালো যোগাযোগ আছে। শেখ হাসিনা বলেন, বাধা দেয়ার ছবি ট্রাম্পকে পাঠিয়ে বলা যাবে দেখো ইউনূস সরকার কী করছে। সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার তো ইউনূস। ২৫০ জন এসআইয়ের (ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর) চাকরি দিলো না, তাদের বের করে দিলো। তিনি আরও বলেন, মিছিলে ভালো লোক জমায়েত যেন হয়, সে ব্যবস্থা করবা। মিছিলে নূর হোসেনের ছবি থাকবে। ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা প্লেকার্ড রাখবা। আমাদের অনেক ঘরবাড়ি, দোকান-পাট পোড়ানো হয়েছে। এর তথ্য বের করতে হবে। আমরা সব হিসাব কড়ায়-গণ্ডায় করে নেবো।
অন্যদিকে দলটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একাধিক পোস্টে নেতাকর্মীদের কর্মসূচিতে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। সেখানে বলা হয়, সব আন্তর্জাতিক মিডিয়া উপস্থিত থাকবে। পুলিশও আন্তর্জাতিকভাবে চাপে আছে তাই কোনো বাধা দেয়া হবে না। জেলা উপজেলা পর্যায়েও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। এদিকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির ঘোষণার এক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে বলেছেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিস্ট দল। বাংলাদেশে এই ফ্যাসিস্ট দলকে বিক্ষোভ করতে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশে যদি কেউ র্যালি, সমবেত হওয়া ও মিছিলের চেষ্টা করে তাহলে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ শক্তির মুখোমুখি হতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো ধরনের সহিংসতা কিংবা আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা সহ্য করবে না। জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, আমাদের অফিসিয়ালি কোনো কর্মসূচি সম্পর্কে জানানো হয়নি। কোনো ফেসবুক পেজে দেয়া কর্মসূচি সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। এরপরও কেউ যদি পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যা যা করার প্রয়োজন ডিএমপি তাই করবে।
lets bring hasina to justice asap.
High opportunity to ban BAL .
স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা করবে গণতন্ত্র। হাহাহা। নির্লজ্জ, বেহায়া।
Soirachari Hasi kono kothai adeshe prochar kora jabe na.
আওমীলীগের মাঠে নামার মতো শক্তি নেই। এটা বর্তমান সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্যই এমন ঘোষনা দেয়া হয়েছে
সব লীগ শেষ করে এইবার ট্রাম্প এর ছবি নিয়ে সৈরাচার এর প্রেতাত্মারা... what a Joke?
ট্রাম্প কী আওয়ামীলীগের নুতুন জাতির পিতা?
Just ban AL and other Leagues forever!
এই দেশের জনগনের কথা আওয়ামীলীগের ভাবার আর কোন প্রয়োজন নাই।
Fascist is still Barking ?
মানুষ তার ভয়ে মরে যায়।এমনিই দেখতেছি। হায়রে গাধার দল।।।।।
স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা করবে গণতন্ত্র। হাহাহা। নির্লজ্জ, বেহায়া।