শেষের পাতা
শিল্পকলায় মাঝপথে নাটক প্রদর্শনী বন্ধ নাট্যাঙ্গনে ক্ষোভ
ফয়সাল রাব্বিকীন
৪ নভেম্বর ২০২৪, সোমবারকাছাকাছি সময়ে এমন ঘটনার নজির নেই। যা ঘটেছে গত শনিবার সন্ধ্যায়। এদিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় দেশনাটক দলের প্রদর্শনী চলাকালীন বন্ধ করে দেয়া হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় নাটক ‘নিত্যপূরাণ’-এর ১২৭তম প্রদর্শনী ২৫ মিনিট পার হতেই মঞ্চে উঠে দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নাটক বন্ধের নির্দেশ দেন একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। যা নিয়ে শনিবার রাত থেকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমন ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান নাট্যঙ্গনের মানুষেরা। ঘটনার সময় মঞ্চে উঠে একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, বেশ কিছু উত্তেজিত জনতা জাতীয় নাট্যশালায় গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। অনেক কথা হয়েছে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে। কিন্তু তারা এ নাটক বন্ধের দাবি জানান। অনেক চেষ্টা করেছি তাদের বোঝানোর। যদি তারা আগুন ধরিয়ে দেয়, এইজন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে দেশ নাটকের শো বন্ধের দাবিতে বিকাল থেকেই নাট্যশালার মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে কিছু মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশ নাটকের সিনিয়র সদস্য এহসানুল আজিজ বাবু ছাত্র আন্দোলনের সময় ফেসবুকে ছাত্র আন্দোলনবিরোধী পোস্ট দিয়েছেন। গত কিছু দিন তার সরকারবিরোধী পোস্ট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়। এদিকে শনিবার বিকাল থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে একদল তরুণ অবস্থান নেয় শিল্পকলার মূল ফটকে। তারা জানাতে থাকেন, দেশ নাটকের অধিকর্তা এহসান আজিজ বাবু ফেসবুকে দেশবিরোধী নানা প্রচারণা ও বর্তমান সরকার প্রধানসহ অন্যান্য উপদেষ্টাদের ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ ও রাজাকার আখ্যা দিয়ে আসছেন। তারা আল্টিমেটাম দেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এহসান আজিজ বাবুকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। পরবর্তীতে দেশ নাটকের দল প্রধান কামাল আহমেদ প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে দেখা করেন। এহসান আজিজ বাবুকে ৩ দিনের মধ্যে বহিষ্কারের আশ্বাস দেন। এরপর প্রতিবাদকারীরা সাময়িকভাবে তা মেনে নিলেও প্রদর্শনী বাতিলের দাবি জানায়। একটি প্রতিবাদী ব্যানার জাতীয় নাট্যশালার ফটকে ঝুলিয়ে দেন তারা। প্রতিবাদকারীদের শান্ত করতে পরে সেখানে আসেন শিল্পকলার মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। তিনি বহুভাবে চেষ্টা করেন বোঝানোর। কিন্তু চলমান প্রদর্শনী বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ অব্যাহত থাকে। অবশেষে সহিংসতা এড়াতে মহাপরিচালক নাটকটির প্রদর্শনী বন্ধ করতে বাধ্য হন। এ নিয়ে শনিবার রাত থেকে সামাজিক মাধ্যমসহ নানাভাবে প্রতিবাদ জানান নাট্যঙ্গনের মানুষেরা। একজন মানুষের জন্য নাটক প্রদর্শনী বন্ধ করে দেয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান অনেকে। এরমধ্যে দেশ নাটকের সদস্য ও অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকী বলেন, একটি থিয়েটার একাধিক মানুষের সমন্বয়ে থিয়েট্রিক্যাল কার্যক্রম পরিচালনা করে। অথচ, শনিবার যা হলো, তাতে মনে হচ্ছে থিয়েটার ব্যক্তিকেন্দ্রিক। আরও বেশ ক’জন নাট্যকার, নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পী নাটক প্রদর্শনী বন্ধ না করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা ও আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন। এদিকে গতকাল সকালে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিল্পকলার মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, আওয়ামী দোসরদের বিশৃঙ্খলার কারণেই শিল্পকলার নাটক বন্ধ করতে বলা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজনের দেয়া পোস্ট থেকে এই পরিস্থিতির তৈরি। তিনি বলেন, দর্শকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নাটক বন্ধ করতে হয়েছে। এ সময় তিনি বলেন, সংস্কৃতি চর্চার জন্য এমন পরিস্থিতি শঙ্কার। তবে সংস্কৃতি চর্চার আন্দোলন অব্যাহত রাখার যুদ্ধের ছোট একটি অংশে হেরে গেলেও যুদ্ধ এখনো অনেক বাকি বলে জানান তিনি।
যারা মাঝপথে নাটক বন্ধ নিয়ে বিরূপ সমালোচনা করিতেছেন তারা ভারতে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার একনায়কতন্ত্র ডিক্টেটর শাসক বহু খুনের মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনার দোসর সুতরাং ছাত্র-জনতার প্রতি অনুরোধ করবো সময় থাকতে এদের বিষদাঁত ভেঙে দিন।
কত বড দুহসাহশ এই আজিজ বাবুর মতো ফ্যাসিস্ট পলাতক হাসিনার দোসরদের -তারা আজ তিন মাসের মধ্যে ছাত্র জনতার বিপ্লবের পরই ফেইস বুকে ডঃ ইউনুস এবং বিপ্লবি ছাত্র নেতাদের রাজাকার বলে জিন্নাহ ক্যাপ পরিয়ে কার্টুন একে মন্তব্য লিখে ।এরা আওয়ামিলীগের পতিত জারজ এদের প্রতিহতই শুধু নয় বাংলাদেশে যেখানেই পাওয়া যাবে কঠিন শাস্তি দিতে হবে।যতই ভালো নাটক মঞ্চস্থ করুক তাতে কিছুই যায় আসে না- জারজ জারজই।
২০১৩ সালে বাংলাদেশের এক বিখ্যাত থিয়েটারে অডিশনে গিয়েছিলাম, সেখানে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন নিয়ে আপনি কি ভাবেন? তখন আমি এই রাজনৈতিক প্রশ্নে অবাক হয়েছিলাম, এখন বুঝতেছি আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গন বেহাত হয়ে গেছে।
আরও বেশ ক’জন নাট্যকার, নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পী নাটক প্রদর্শনী বন্ধ না করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা ও আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন!!!!! যারা এই ধরণের কথা বলছেন তারা হয়তবা আওয়ামীলীগের দোষর। তারা এটা বুঝতে অক্ষম যে, দেশ একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গিয়েছে এবং এখনও যাচ্ছে। এখানে হাজারো মানুষ শহীদ হয়েছেন, তাদের রক্ত এখনও শুকায়নি। এখন সময় আওয়ামী শাসনের সকল এলিমেন্টকে চিরতবে নির্মুল করে দেয়া।