অনলাইন
সহযোগীদের খবর
নির্বাচনের চাপ বাড়ছে
অনলাইন ডেস্ক
(৮ মাস আগে) ৩১ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৯:৪১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:৩২ অপরাহ্ন

আজকের পত্রিকা
দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরেনাম ‘নির্বাচনের চাপ বাড়ছে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে। সমমনা কয়েকটি দলও একই দাবি জানাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী সংস্কারে গুরুত্ব দিলেও বিলম্বিত নির্বাচন চায় না।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দু-একটি ঘটনায় বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের অবস্থানের বদল হয়েছে। এর একটি রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের উদ্যোগ। বিএনপি এর বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করেছে। দলটির কোনো কোনো নেতা বলেছেন, এতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে এবং নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি জনগণের মধ্যেও আশ্বাস তৈরি হবে।
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার চাপের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এমন আশ্বাস তৈরির পদক্ষেপ হিসেবে গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য দুই বিচারপতির সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি করেছে। একই দিন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, সরকার নির্বাচনের পথে অগ্রসর হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের। ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। চলতি বছরের মধ্যেই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। এরপর রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সবার পরামর্শের ভিত্তিতে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।
বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগে সমর্থন দেয়। তবে বিএনপি শুরু থেকেই সরকারকে সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বলে আসছে। তবে জামায়াতের অবস্থান কিছুটা ভিন্ন, দলটি সংস্কারের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে সে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আভাস দেওয়া হয়নি।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এটিকে সেনাপ্রধানের ‘ব্যক্তিগত মত’ বলে উল্লেখ করেন।
এর পর থেকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা ডালপালা মেলে। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবি করলে বিএনপি এতে আপত্তি তোলে। দলটি বলছে, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হবে। ছাত্র নেতৃত্ব ও জাতীয় নাগরিক কমিটি তাদের দাবির বিষয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে বিএনপির অবস্থান বদলায়নি। এর পর থেকেই দলটি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জোরালো করে।
সমকাল
দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম ‘গ্যাস সংকটে থমকে গেছে উৎপাদন, হুমকিতে শিল্প’। প্রতিবেদনে বলা হয়, সরবরাহ না বাড়ায় দেশে গ্যাস সংকট বেড়েই চলছে। দিনে গ্যাসের ঘাটতি প্রায় ১৩৫ কোটি ঘনফুট। গ্যাসস্বল্পতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাত হচ্ছে শিল্প। চাহিদার চেয়ে ৩০ শতাংশ কম গ্যাস পাচ্ছে শিল্পকারখানা। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, চট্টগ্রাম, নরসিংদীসহ দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে এই সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
গ্যাস সংকটে ব্যাহত হচ্ছে কারখানার উৎপাদন। অনেক কারখানা হুমকিতে, আবার কোনোটি বন্ধের পথে। বাধ্য হয়ে শ্রমিক ছাঁটাই করছেন মালিকরা। উৎপাদন কম হওয়ায় কমছে পণ্য রপ্তানি, বিদেশ থেকে বাড়ছে কাঁচামাল আমদানি। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ পড়ছে। গ্যাস সংকটের দ্রুত সমাধান না হলে অর্থনীতিতে অশনিসংকেত দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভোগান্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, কারখানা চালু রাখার চেয়ে বন্ধ রাখলেই লাভ। গ্যাস সংকটের কারণে সিএনজি স্টেশনে দীর্ঘ হচ্ছে গাড়ির সারি। তবুও মিলছে না চাহিদার অনুপাতে গ্যাস। সরকার বলছে, গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির নানা পদক্ষেপ এবং শিল্পে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, শিগগিরই গ্যাস সংকট দূর হবে না। বিগত দিনগুলোতে দেশীয় গ্যাসের অনুসন্ধানের চেয়ে আমদানিতেই সরকারের ঝোঁক বেশি ছিল। সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস অনুসন্ধানে চরম অবহেলা করা হয়েছে। এতে গ্যাসের উৎপাদন কমেছে। অন্যদিকে চাহিদা দিন দিন বেড়েছে। ফলে সংকট ঘনীভূত হয়েছে। উচ্চমূল্যের কারণে পর্যাপ্ত এলএনজি আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না।
বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে দিনে প্রায় ৪২০ কোটি ঘনফুট। বিপরীতে এলএনজিসহ গড়ে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ২৮৫ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে আমদানি করা গ্যাস (এলএনজি) ৮৯ কোটি ঘনফুট। বিদ্যুতে দেওয়া হচ্ছে ৯৩ কোটি, শিল্পে ১০২ কোটি, সার কারখানায় ২০ কোটি, সিএনজিতে ১ কোটি এবং আবাসিক ও বাণিজ্যে ৫৭ কোটি ঘনফুট।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘নির্বাচনী সমঝোতা, নাকি অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো’। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর ছয় নেতাকে এলাকায় জনসংযোগ ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে বিএনপির দেওয়া চিঠি নিয়ে নিজ দল ও শরিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এই চিঠি কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন সমঝোতার ইঙ্গিত, নাকি নির্বাচন সামনে রেখে এসব নেতাকে কাছে রাখার কৌশল, তা স্পষ্ট নয়।
২২ অক্টোবর সমমনা শরিক জোটের ছয় নেতাকে নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগে সহযোগিতা করার জন্য ছয়টি জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ‘অতীব জরুরি’ নির্দেশনা–সংবলিত চিঠি দেয় বিএনপি। এই ছয় নেতা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন উল্লেখ করে চিঠিতে তাঁদের নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগসহ সাংগঠনিক কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য স্থানীয় নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এই নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট সংসদীয় এলাকার থানা, উপজেলা বা পৌরসভায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অবহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে বলা হয়। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে এই চিঠি দেওয়া হয়।
ওই ছয় নেতা হলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২-দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা।
এই চিঠি নিয়ে দলের ভেতরে–বাইরে প্রতিক্রিয়ার পর সব জেলায় আরেকটি চিঠি পাঠানো হয়। উল্লেখ্য, আ স ম রব লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি–কমলনগর), মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-৪ (শিবগঞ্জ), জোনায়েদ সাকি (ঢাকা-১২ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬), নুরুল হক পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা), রাশেদ খান ঝিনাইদহ-২ (সদর ও হরিণাকুণ্ডু), এহসানুল হুদা কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে নির্বাচন করতে চান।
বিএনপির এই চিঠি নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ওই সব জায়গায় নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হতে আগ্রহী নেতারা প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও ভেতরে-ভেতরে বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না।
এই চিঠি নিয়ে দলের ভেতরে–বাইরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে সব জেলায় আরেকটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে বিগত আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে যেসব সমমনা রাজনৈতিক দল সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছে, সেসব দলের শীর্ষ নেতারা নিজ আসনে যাতে নির্বিঘ্নে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন, সে জন্য সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ নির্দেশনা নিয়েও মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
যুগান্তর
‘সরকার চাইলে ছয় মাসে ভোটের প্রস্তুতি সম্ভব’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সীমানা পুনর্নির্ধারণ, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন এবং নির্বাচনি মালামাল সংগ্রহের মতো প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো আবারও করতে হবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে।
এসব কার্যক্রম একসঙ্গে পুরোদমে চালালে আগামী ছয় মাসে তা শেষ করা সম্ভব বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। ওইসব কাজ শেষ করার পর নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করতে পারবে নতুন নির্বাচন কমিশন। সাধারণত তফশিল ঘোষণার ৪৫-৬০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ হয়। সেক্ষেত্রে সরকার চাইলে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।
তবে প্রস্তুতিমূলক কাজের সব কিছুই নির্ভর করছে অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো ও নিয়োগ পেতে যাওয়া নতুন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর। কারণ সংবিধান এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে দুটি কমিশন কাজ করছে। ওই কমিশন দুটি যেসব সংস্কার প্রস্তাব দেবে, সেগুলো বাস্তবায়নের সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজের সরসারি সম্পর্ক রয়েছে। সংবিধান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও বিধিমালায় সংশোধনী আনা হলে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে গেলে এই সময়সীমার হেরফের হবে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, সংস্কার ও নির্বাচন কমিশনের কাজ যদি একই সঙ্গে চলে তাহলে প্রস্তুতি নিতে খুব বেশি সময় লাগবে না। তিনি বলেন, আমরা নির্ধারিত সময় ডিসেম্বরে সুপারিশ করার আশা করছি। একটি নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজন করা যায়, সেখানে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে সেই লক্ষ্যে আইনি সংস্কারের সুপারিশ সরকারের কাছে করব। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘প্রভাবশালী ২২ জন কর গোয়েন্দাজালে’। খবরে বলা হয়, ক্ষমতা হারানোর পর আওয়ামী লীগ আমলের দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটের খবর বের হচ্ছে একে একে। শুধু মন্ত্রী আর এমপিই নন, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা আমলা, পুলিশ, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, ছাত্রনেতা, ব্যবসায়ীসহ কমবেশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিলেন। এই রকম বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২২ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির কর ফাঁকি এবং মুদ্রাপাচারের তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। সন্দেহে থাকা প্রভাবশালী ২২ জনের নামের তালিকা কালের কণ্ঠের এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
তালিকায় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শামীম ওসমান, নাজমুল হাসান পাপনসহ আরো অনেকেই রয়েছেন। এসব ব্যক্তির অবৈধ আয় ও কর ফাঁকি ধরতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কর গোয়েন্দাদের। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তালিকার ব্যক্তিরা হলেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমু, শেখ পরিবারের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, দুই ভাই শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমান, সিরাজগঞ্জের এমপি শফিকুল ইসলাম এবং কিশোরগঞ্জের এমপি ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
তালিকায় আরো আছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র, পরিবহন শ্রমিক নেতা মশিউর রহমান রাঙ্গা, পরিবহন নেতা ও এনা পরিবহনের মালিক কাজী এনায়েত উল্লাহ, দুদকের দুই প্রসিকিউটর খুরশীদ আলম ও মোশারফ হোসেন কাজল এবং ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি লিয়াকত শিকদার।
সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী জান্নাত আরা হেনরী, বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলমের দুই পুত্র আসাদুল আলম মাহির ও আশরাফুল আলম আছেন এই তালিকায়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই প্রধান প্রকৌশলীও আছেন এই তালিকায়। তাঁরা হলেন আশিকুর রহমান ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন।
ইত্তেফাক
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকার নিয়ে দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ‘সরকার এখনো নির্বাচনের রূপরেখা চূড়ান্ত করেনি’। প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনসূ বলেছেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ‘ফ্যাসিবাদের সব বৈশিষ্ট্য’ প্রকাশ করেছে। স্বল্প মেয়াদে হলেও নিশ্চিতভাবেই তার (শেখ হাসিনা) এবং তার দল আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা নেই বাংলাদেশে। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে প্রধান উপদেষ্টা এসব মন্তব্য করেন। গতকাল বুধবার পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে এই সাক্ষাত্কার প্রকাশ করা হয়েছে।
পত্রিকাটি বলেছে, এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ও বৃহত্ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে অবস্থান স্পষ্ট করলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অধ্যাপক। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে চলে যান দলটির প্রধান ও টানা ১৫ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা শেখ হাসিনা।
সাক্ষাত্কারে ড. ইউনূস বলেন, তার সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের রূপরেখা চূড়ান্ত করেনি। তার সরকারের কাজ সবকিছু স্বাভাবিক করা এবং সংস্কার সম্পন্ন করা। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময়সূচি (এখনই) টানা হবে না। আমাদের কাজ বিভিন্ন বিষয়ের নিষ্পত্তি করা ও নতুন সংস্কার এজেন্ডার বাস্তবায়ন।’
সাক্ষাত্কারে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তার সরকার এখনই ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইবে না। পত্রিকাটি বলছে, সর্ববৃহত্ প্রতিবেশী দেশের (ভারত) সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক উত্তেজনায় উসকানি সৃষ্টিকারী মুহূর্ত এড়াতেই হয়তো এ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হয়েছে।
নয়া দিগন্ত
‘আসছে ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের প্রতিনিধিরা’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশ থেকে অর্থ পাচারকারীদের পাকড়াও করার সক্ষমতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের একদল প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসছে। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ৬০ জন প্রতিনিধি প্রাথমিকভাবে ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সচিব হিউ ম্যাককুলোকের মাথা থেকে বের হয় সিক্রেট সার্ভিস প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা। আব্রাহাম লিংকন মারা যান ১৮৬৫ সালের ১৪ এপ্রিল রাতে। সে দিন দুপুরেই সিক্রেট সার্ভিস প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা লিংকনের কাছে বর্ণনা করেন হগ। তার পরের দিন সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে সিক্রেট সার্ভিস। সংক্ষেপে বলা হয় ইউএসএসএস। তবে সিক্রেট সার্ভিস প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল অর্থ জালিয়াতদের পাকড়াও করা। কিন্তু আব্রাহাম লিংকনের মৃত্যু বদলে দেয় সিক্রেট সার্ভিসের মূল উদ্দেশ্য।
এখন তারা অর্থ পাচারকারীদের পাকড়াও ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক প্রেসিডেন্টদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। সাইবার নিরাপত্তাসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে এই ইউএসএসএস। তাদেরকে কঠোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সিক্রেট সার্ভিসের একজন এজেন্টকে একাই ১০ জনের সমান হয়ে উঠতে হয়।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রথম পাতার খবর ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাসের জোগান নিয়ে বিপত্তি, শিগগিরই মিলছে না সমাধান’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে দেশে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় প্রতিদিন গ্যাস প্রয়োজন ১২০ কোটি ঘনফুট। সরবরাহ হয় প্রায় ৯২ কোটি ঘনফুটের মতো। বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের এ অসামঞ্জস্য চলছে দীর্ঘদিন ধরে। সরবরাহ না থাকায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এখন গ্যাসের বড় ও অত্যাধুনিক ব্যয় সাশ্রয়ী কেন্দ্রগুলো চালু রাখতে পারছে না। বিদ্যুতের চাহিদামাফিক উৎপাদন না হওয়ায় সম্প্রতি লোডশেডিং করতে হয় বিপিডিবিকে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিপিডিবির কর্মকর্তাদের ভাষ্য হলো পেট্রোবাংলার বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু রাখার মতো প্রয়োজনীয় গ্যাসের সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে লোডশেডিং করতে হয়।
জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর গ্যাস সরবরাহ বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া রয়েছে। এ অর্থের পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। বিপিডিবি ও গ্যাসভিত্তিক আইপিপিগুলোর কাছে আটকে থাকা এ বকেয়া পাওনা নিয়ে বিতরণ কোম্পানিগুলো কোনো ধরনের আশ্বাসও পাচ্ছে না।
উচ্চ মূল্যে এলএনজি কিনে সরবরাহ করে অর্থ পাওয়া না গেলে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের জন্য পর্যাপ্ত সক্ষমতা নেই তাদের কাছে। আবার বিদ্যুতের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারাও বলছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বিপিডিবির কাছে কেন্দ্রগুলোর যে পরিমাণ অর্থ বকেয়া পড়েছে, সে টাকা না পেলে তারা গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে পারছেন না।
দেশ রূপান্তর
‘উচ্চ সুদ জ্বালানি সংকটে চাপে শিল্পবাণিজ্য’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তনের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনীতির সংকটের সময় একটি দেশের যেসব সূচকের অবনতি দেখা দেয়, তার প্রায় সবই বাংলাদেশে বিদ্যমান। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, উচ্চ সুদহার, জ্বালানি সংকট, ডলার সংকট, তারল্যের পাশাপাশি পুঁজিবাজারেও ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে টানা দরপতনে সর্বস্ব হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
আবার অনেক ব্যাংকে আমানতের টাকাও ফেরত না পেয়ে শাখায় তালা ঝুলিয়ে দিচ্ছেন গ্রাহকরা। আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ ও গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটে শিল্পের চাকা থমকে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে কঠিন সংকটের মুখোমুখি ব্যবসায়ীরা।
অর্থনীতিতে এখন সম্ভাবনার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এসব অনিশ্চয়তা সামলানো। কিন্তু শ্রম অসন্তোষ, জ্বালানি সংকট, মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি ঋণের উচ্চ সুদ ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে তুলছে। ইতিমধ্যেই উৎপাদনমুখী অনেক শিল্প লোকসানে পড়েছে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি সামাল দিতে তারল্য কমানোর পাশাপাশি সুদহার বাড়ানো হলেও তা কাজে আসছে না। বরং তা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য সংকট আরও বাড়িয়ে তুলছে। এমন পরিস্থিতি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আরও কমিয়ে দিচ্ছে।
ডেইলি স্টার
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্কের বক্তব্য নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘All killings, rights abuses must be probed’ অর্থাৎ ‘সকল হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করতে হবে’।
বুধবার তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ৫ই অগাস্টের আগে ও পরে সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত। কোনও ধরনের মব জাস্টিস গ্রহণযোগ্য নয় এবং সেজন্য আইনের শাসন প্রয়োজন। অন্যথায়, সহিংসতা থেকেই সহিংসতা জন্ম নেবে যেমনটি আমরা বিশ্বজুড়ে অনেক পরিস্থিতিতে দেখি।’
ভলকার তুর্ক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে ও পরে নিহত ব্যক্তিদের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল সে সময় শত শত মানুষ নিহত হয়। কিন্তু তিনি ভারতে চলে যাওয়ার পর পাল্টা গুলিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীসহ বহু মানুষ নিহত হন। এছাড়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে।’
গণঅভ্যুত্থান সফল করতে যারা কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হবে না-এমন সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত।’