শেষের পাতা
অনশনে যাওয়ার ঘোষণা ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের
স্টাফ রিপোর্টার
৩১ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবারসাত কলেজ সংস্কার কমিশন বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন গঠনের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। গত দু’দিন ধরে তারা সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ব্লকেড পালন করছেন। এ ছাড়াও আগামী রোববার তারা আবারো সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ব্লকেডের পাশাপাশি অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। এই কর্মসূচির কারণে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। ভোগান্তিতে পড়ছেন জনতা। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রসঙ্গে বিবৃতি দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।
স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করছেন ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকালও বেলা ১১টা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে সায়েন্স ল্যাব এলাকা সংলগ্ন সড়কেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মিরপুর-আজিমপুর সড়ক, শাহবাগ-ধানমণ্ডি সড়ক, ধানমণ্ডি-মোহাম্মদপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আশপাশের এলাকাগুলোও স্থবির হয়ে পড়ে। তীব্র যানজটে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রীরা।
গতকাল সন্ধ্যা ৫টায় সায়েন্স ল্যাব মোড়ে সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি আব্দুর রহমান বলেন, বৈষম্য দূর করে সাত কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা একমাত্র সমাধান। আমরা আমলাতান্ত্রিক কমিটি প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের দাবি শিক্ষাবিদ, গবেষক, শিক্ষা প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন গঠন করবেন এই প্রত্যাশা রাখছি। শিক্ষা উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি একজন শিক্ষাবিদ। আপনি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিকে মূল্যায়ন করবেন। দীর্ঘ সাত বছরের বৈষম্য দূর করবেন এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি পূরণ করে দেবেন।
এদিকে বিবৃতি দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, শিক্ষা খাতের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের দাবিপূরণের সুদূরপ্রসারী প্রভাব থাকে এবং এর জন্য তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়া কঠিন। বিবৃতিতে বলা হয়, একটি সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল অবস্থায় পাওয়া শিক্ষা খাতে শৃঙ্খলা ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। একটি বৈষম্যবিরোধী দাবি মানলে অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হতে পারে। অথচ সব কয়টি দাবির পেছনের আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিকেই সবচেয়ে অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছেন এবং দাবিগুলোকে শুধু রাস্তায় আন্দোলন করে তাৎক্ষণিক সমাধানযোগ্য মনে করছেন। এতে একদিকে যেমন রাস্তা অবরোধের ফলে অপরিসীম জনদুর্ভোগ হচ্ছে; সরকারও দাবিগুলো যথাযথ বিবেচনার সুযোগ পাচ্ছে না।
শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনার জন্য সরকার ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে যা ছয় সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে। সমস্যাটির শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে ঢাকার সাতটি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতা থেকে বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করার একটি অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাত কলেজের উভয়পক্ষেরই সমস্যা তৈরি হয়েছে। যে কারণে ওই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নানা অসুবিধা ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে। সমস্যাগুলো জটিল এবং এগুলোর সুষ্ঠু সমাধান কী হতে পারে তা বিবেচনায় ন্যূনতম কিছু সময়ের প্রয়োজন। এরইমধ্যে একটি কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করেছেন। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২শে অক্টোবর সাত কলেজ সংস্কারে একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১৩ সদস্যের কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন গঠনের দাবি জানায়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। গত ২১শে অক্টোবর এবং ২৩শে অক্টোবর সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ২ দফায় ২৪ ঘণ্টা করে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়। এরপর গত ২৪শে অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনকল্পে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এরা কি করে জাতিকে নেতৃত্ব দিবে? যে সরকার একটা ভঙ্গুর অবস্থার উপর দাঁড়িয়ে দেশ পরিচালনা করছে তাদেরকে দাবী বাস্তবায়নের হাতিয়ার বানানো বৈষম্য বরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কোন মানুষের কাজ হতে পারে না। এটা একমাত্র ফ্যাসিস্ট ও তার দোসরদের কাজ। তাদেরকে তাদের কাজ করতে দিন। অযৌক্তি কোন দাবী মানতে তারা বাধ্য নয়। তোমাদের দরকার যুগপতোগি শিক্ষার পরিবেশ এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায় বসা। শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের অনুরোধ তারা যেন তাদের অযৌক্তি দাবী থেকে সরে আসে।
দাবী আদায়ের নামে এতালেবম্বা@রা তো যথারীতি লাখ লাখ মানুষের উপর জুলুম করতেছে। গণমানুষের চরম ভোগান্তি তৈরী করে তারা তাদের ক্ষুদ্র স্বার্থ আদায় করতে চায়। এরা কি করে ছাত্র হতে পারে? এরা তো জনগণের উপর ক্রমাগত অত্যাচার করে চলেছে। এরা কি করে দেশের ভবিষ্যৎ হতে পারে? এরা নিশ্চয়ই ছাত্র নামধারী যালিম যারা অন্যদের কষ্টের কারণ হচ্ছে, দেশের ক্ষতির কারণ হচ্ছে। অসময়োপযোগী এবং ক্ষুদ্র স্বার্থে এরা লাখ লাখ মানুষকে জিম্মি করে, ব্লাকমেইল করছে। এরা কখনো দেশের উন্নতি চায়না, মানুষের মঙ্গল চায়না। এরা আগের স্বৈরাচার সরকারের চরিত্রের।