খেলা
এমন ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা নেই জ্যোতিদের
স্পোর্টস ডেস্ক
৭ অক্টোবর ২০২৪, সোমবারশক্তিমত্তা, অভিজ্ঞতা সবকিছুতেই ইংল্যান্ড এগিয়ে। তবে ফরম্যাটটা টি-টোয়েন্টি বলেই বাংলাদেশের কিছুটা হলেও আশা ছিল। বোলাররা অবশ্য জয়ের ভিতই গড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটারদের সেই পুরনো রোগে, বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে ইংল্যান্ডকে হারানোর সুযোগ হারায় নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। শনিবার চলতি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২১ রানে হারে বাংলাদেশ। বোলারদের দাপুটে পারফরমেন্সে ইংল্যান্ডকে ১১৮ রানে বেঁধে রাখা গেলেও ব্যাটাররা কখনোই জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেননি। লক্ষ্যটা ১১৯, বাংলাদেশকে পাওয়ার প্লেতে ভালো শুরু করতে হতো। সেখানেই ব্যর্থ বাংলাদেশের দুই ওপেনার। শুরুতে যেখানে আগ্রাসী হওয়া দরকার ছিল, সেখানে দুই ওপেনার দিলারা আক্তার ও সাথী রানী আটকে ছিলেন খোলসে। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার কিছুই দেখাতে পারছেন না তারা। এদিন ৯ বলে ৭ রান করে আউট হন সাথী। ৬ রান করতে দিলারা খেলেন ১২ বল। পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে হারিয়ে মোটে ২০ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। কার্যত এখানেই ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে যায় টাইগ্রেসরা। ম্যাচ শেষে একই সুর শোনা যায় অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির কণ্ঠেও। তিনি বলেন, ‘পাওয়ার প্লেতে আমরা ভালো করতে পারিনি, উইকেট ছুড়ে দিয়েছি। পাওয়ার প্লের পর খেলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি আমরা। ভালো জুটি দরকার ছিল আমাদের। আমি ও সোবহানা মোস্তারি ভালো জুটি গড়েছি, কিন্তু আমি বাজে সময়ে আউট হয়ে গেছি।’ শুরুটা ভালো না হলেও জ্যোতি ও সোবহানার জুটিতে আশা দেখছিল বাংলাদেশ। তবে তাদের জুটিতেও রানের গতি ছিল শ্লথ। তৃতীয় উইকেটে তারা ৩৫ রানের জুটি গড়লেও বল লাগে সেখানে ৪৪টি। আস্তে আস্তে যখন দল ম্যাচে ফিরছিল তখনই জ্যোতির রান আউটে আবার ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। দুটি চার মারলেও ২০ বলে ১৫ রান করেন তিনি। আর যেভাবে রান আউট হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, তাতেও কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না তিনি। এরপর সোবহানা চেষ্টা করলেও অন্যপ্রান্ত থেকে ন্যূনতম সাপোর্ট পাননি। ১৯তম ওভারে আউট হওয়া এই ব্যাটার ৪৮ বল খেলে দলের সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন। প্রথম ২৬ বলে কোনো ছিল না কোনো বাউন্ডারি। পরে একটি চার ও একটি ছক্কায় নিজের রান-বলের ব্যবধান কমিয়েছেন। কিন্তু শুরুতে একাধিক ডট দিয়ে দল ও নিজের ওপর চাপ বাড়ান, পরে সেটা থেকে আর বের হতে পারেননি। ফলে লক্ষ্যটা সহজ থাকলেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ইংলিশ পরীক্ষায় ফেল করে বাংলাদেশ। কোনো ব্যাটারকে দেখে মনেই হয়নি তারা জয়ের জন্য খেলছে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ১৮ রানে ২ উইকেট নেয়া ফাহিমা আক্তার। তিনিও ব্যাটারদেরই কাঠগড়ায় দাঁড় করান, ‘ইংল্যান্ড অনেক বড় দল। তাদের বিপক্ষে আমরা খুব ভালো শুরু করেছিলাম। আমি আশাবাদী ছিলাম, দলের সবাই আশাবাদী ছিল যে, আমরা এটা অর্জন করতে পারবো। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের শুরুটা (ব্যাটিংয়ের) ধীরগতির হয়ে গেছে এবং হ্যাঁ, আমরা মিস করেছি (সুযোগ)।’ একজন বোলার হিসেবে ব্যাটারদের এই ব্যর্থতায় আক্ষেপই ঝরলো ফাহিমার কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘বোলিং গ্রুপ হিসেবে আমরা সত্যিই ভালো করেছি। এই লক্ষ্য তাড়া করার মতোই ছিল। কিন্তু আমরা পাওয়ার প্লেতে ভালো ব্যাট করতে পারিনি। ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে আমাদের আরও বেশি তাড়না দেখানো উচিত ছিল। ব্যাটিং খুবই হতাশাজনক ছিল।’