বাংলারজমিন
খুলনায় মেয়র-জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
৭ অক্টোবর ২০২৪, সোমবারখুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেসিসি’র সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ এবং জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আনিচুর রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ডাকবাংলা মোড়ের ব্যবসায়ী শেখ মেরাজ হোসেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, আদালতে মামলা দয়েরের পর আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে ডেপুটি কমিশনার সিআইডি খুলনাকে সরাসরি তদন্তের নির্দেশ নিয়েছেন এবং মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন চলতি বছরের ৮ই ডিসেম্বর। আসামিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ঘুষ, প্রতারণা, জীবননাশের হুমকির মামলাটি দায়ের করেছেন ব্যবসায়ী শেখ মেরাজ হোসেন। মামলায় ৩ জন আসামি।
মামলার এজাহারের বরাদ দিয়ে বাদী মেরাজ হোসেন বলেন, আমার পিতা শেখ মো. আবুল হোসেন জেলা পরিষদ থেকে আনুমানিক ২৮ বছর পূর্বে ডাকবাংলো মোড়স্থ জেলা পরিষদের মার্কেটের নিচতলায় অফিস ঘর যথা নিয়মে লিজ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছিলেন। তার বয়স এবং অসুস্থতাজনিত কারণে আমি বড় সন্তান হওয়ায় ব্যবসা পরিচালনা শুরু করি। আমার পিতা ২০১৮ সালের ২৩শে এপ্রিল আইনের বিধান মোতাবেক আমার অনুকূলে লিখিতভাবে আমাকে দায়িত্ব অর্পণ করেন। খুলনা সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে উক্ত প্লট তথা স্থাপনায় বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণ করে যাবতীয় আইন-কানুন মেনে ‘এ হোসেন এন্টারপ্রাইজ’ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায় এক কোটি টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে ২ জন কর্মচারী নিয়োগ করি। মাহাবুবুর রহমান আমার পিতা শেখ আবুল হোসেনকে ২০২৩ সালের ২০শে জুন জেলা পরিষদের কার্যালয়ে ডেকে দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজনের কথা বলে তফসিল বর্ণিত বন্দোবস্তকৃত জমির মূল কাগজপত্র তার নিকট জমা দিতে বলেন। বাবা আমাকে সঙ্গে নিয়ে ২৯শে জুন জেলা পরিষদের কার্যালয়ে গিয়ে তপসিল বর্ণিত সম্পত্তির যাবতীয় মূল কাগজপত্রাদি হস্তান্তর করেন।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে এবং প্রত্যক্ষ মদতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আমার বাবার হস্তান্তরকৃত মূল কাগজপত্রাদি ফেরত প্রদান করতে বিভিন্ন প্রকার তালবাহানা করেন। আমার বাবা আমাকে নিয়ে একাধিকবার ২নং আসামির সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি। এরপর ওই বছর ১২ই জুলাই তিনি ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং বলেন, অন্যথায় কাগজপত্র ফেরত দেয়া হবে না। উত্ত সম্পত্তি জেলা পরিষদ থেকে খুলনা সিটি করপোরেশনের অধীন হস্তান্তর হওয়ার কারণে উক্ত সম্পত্তির মালিক এখন খুলনা সিটি করপোরেশন হওয়ায় মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকও ১০ লাখ টাকা ঘুষ চান। টাকা না দিয়ে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমাকে এবং আমার সঙ্গের লোকদের জীবনের মায়া ত্যাগ করতে হবে বলে হুমকি দেন। আমরা এতে ভীত হয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে অনুনয়-বিনয় করলে তিনি রিভলবার প্রদর্শন করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বলেন এবং ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বলেন। এ বিষয়ে আমি মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমার সঙ্গে কোন কথা বলবেন না বলে জানান। উক্ত চাঁদা এবং ঘুষের দাবি পূরণ না করায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমার কাগজপত্র এখনো ফেরত দেননি এবং ২০২৩ সালের ২১শে জুলাই রাত ১০টার দিকে তার লোক দিয়ে হাতুড়ি-শাবল, ছানিসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রকার অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি দিয়ে তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি ভেঙে ফেলেন। এতে আমাদের দোকানে থাকা ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। সদর থানা এ বিষয়ে মামলা গ্রহণ করেনি।