অনলাইন
সহযোগীদের খবর
‘আয়নাঘরে’ সাজ বদল, নষ্ট গুমের আলামত
অনলাইন ডেস্ক
(১ মাস আগে) ৪ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার, ৯:২১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন
সমকাল
‘আয়নাঘরে’ সাজ বদল, নষ্ট গুমের আলামত-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মানুষের মুখে মুখে ফেরা আয়নাঘরখ্যাত গোপন বন্দিশালার অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। শেখ হাসিনার শাসনামলে এসব বন্দিশালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুমের শিকার ব্যক্তিদের আটকে রাখা হতো। ভুক্তভোগীরা গোপন কারাগারগুলো সংরক্ষণ চাইলেও বাহিনীগুলো এরই মধ্যে কাঠামোতে পরিবর্তন এনেছে।
গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, ৪০০ অভিযোগ পাওয়া গেছে। গোপন বন্দিশালার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে। দেয়ালের লেখাগুলো রং করে মুছে দেওয়া হয়েছে।
চিলির স্বৈরশাসক অগাস্টো পিনোশের ১৬ বছরের শাসনামলে ৩ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা এবং দেড় হাজারের বেশি রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীকে গুম করা হয়। তাঁর পতনের পর সন্ধান মেলে ১৭টি নির্যাতন কেন্দ্রের। পিনোশের গোপন পুলিশখ্যাত ডিইএনএ পরিচালিত বন্দিশালাগুলো স্বৈরশাসনের দুঃসহ স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ রয়েছে, যা বাংলাদেশে হচ্ছে না।
২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয় পার্বত্য চট্টগ্রামকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফের সংগঠক মাইকেল চাকমাকে। তাঁর দাবি, ঢাকা সেনানিবাসের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কার্যালয়ের বন্দিশালায় তাঁকে রাখা হয়েছিল। পাঁচ বছরের বেশি সময় বন্দি থাকার পর ৬ আগস্ট মুক্তি পান। সাবেক ব্রিগেডিয়ার আবদুল্লাহিল আমান আযমী জানিয়েছেন, তাঁকেও আটকে রাখা হয়েছিল একই বন্দিশালায়। এতদিন এসব অভিযোগের পর্যায়ে থাকলেও কমিশনের মাধ্যমে এই প্রথম সরকারি ভাষ্যে আয়নাঘরের অস্তিত্ব সামনে এলো। যদিও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সমর্থকরা আয়নাঘরকে সব সময় কথিত বলে এসেছেন।
কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পরিদর্শনের সময়ে ডিজিএফআইর যে আয়নাঘর দেখেছি, এর সঙ্গে ভুক্তভোগীদের বর্ণনার মিল পেয়েছি। তবে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ তারা নষ্ট করেছে। বিশেষ করে দেয়ালের লেখাগুলো পেইন্ট করে মুছে দেওয়া হয়েছে। মৌখিকভাবে তাদের বলেছি এবং লিখিতভাবেও জানিয়েছি– যে অবস্থায় আয়নাঘর দেখে এসেছি, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর কোনো পরিবর্তন যেন না হয়।’
মাইকেল চাকমা সমকালকে বলেছেন, যদি গোপন বন্দিশালার পরিবর্তন আনা হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলো অপকর্মের দায় নিজেদের ওপর নিচ্ছে, সরকারের দোষ আড়ালের চেষ্টা করছে। তারা বলতে পারত– আমরা নই, শেখ হাসিনা গুম করেছে। গোপন কারাগার ভেঙে ফেলা মানে আলামত ধ্বংস, যা আরেকটি অপরাধ। গোপন বন্দিশালাগুলো সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতের সরকারগুলো এ থেকে শিক্ষা নেয়; স্বৈরাচারী না হয়।
দেশ রূপান্তর
কলকাতায় শতাধিক আ.লীগ নেতা!-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মন্ত্রী-এমপিসহ দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী চলে গেছেন আত্মগোপনে। কেউ আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছেন। যারা দেশ ছেড়েছেন, তাদের শতাধিক নেতা এখন আছেন কলকাতায়। তাদের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাও রয়েছেন।
পাশাপাশি যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও এখন কলকাতায় আছেন বলে দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন কলকাতার কয়েকজন হোটেল কর্মচারী। তারা জানিয়েছেন, পালিয়ে আসা নেতাদের মধ্যে বেশিরভাগই শহরের বাইরে থাকেন। কেউ শহরে হোটেল বা বাসাভাড়া করে আছেন। দিনে তারা বের হন না। রাতে আড্ডা দেন বিভিন্ন স্থানে। সীমান্তে দালালের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে তারা ভারতে গিয়েছেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, দেশত্যাগের জন্য তারা যশোর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, ফেনী, সিলেট, দিনাজপুরের হিলি ও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা সীমান্ত ব্যবহার করেছেন। তারপর তারা ভারতের ত্রিপুরা, আগরতলা, কলকাতা, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে অবস্থান নিয়েছেন। সেখান থেকে কেউ দুবাই, কেউ জার্মানি, কেউবা যুক্তরাজ্যেও পাড়ি দেওয়ার তথ্য মিলেছে। তাদের পারাপারের কাজে বিভিন্ন সীমান্তে গড়ে উঠেছে একাধিক চক্র।
এ চক্রের সদস্যরা প্রভাবশালীদের সীমান্ত পার করে দিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। জনপ্রতি ৫০ হাজার থেকে ২৫-৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে হয় সীমান্তের দুই পাশের দালালদের। তবে কেউ কেউ দালালদের কাছে প্রতারিত হয়ে ধরাও পড়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হতে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন। তা ছাড়া দেশত্যাগ করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ (নাসিম) ও আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ অনেকে। তা ছাড়া আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আরও বেশ কয়েকজন নেতার দেশ ছাড়ার গুঞ্জন রয়েছে।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘আয়নাঘরের’ প্রমাণ পেল কমিশন, ৪০০ অভিযোগ। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে জোরপূর্বক মানুষকে তুলে নিয়ে গুম করে রাখার গোপন বন্দিশালার প্রমাণ পেয়েছে এ–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। তারা বলছে, ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিতি পাওয়া এই বন্দিশালার অবস্থান ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরের চৌহদ্দির মধ্যে, যা একসময় জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
কমিশনের কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য গুলশানে তাদের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় কমিশনের অন্য চার সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কার্যক্রম শুরুর পর গত ১৩ কার্যদিবসে এই কমিশনে ৪০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগকারীদের বড় অংশ এখনো নিখোঁজ থাকা ব্যক্তিদের স্বজন বলে কমিশন সূত্র জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুম–সংক্রান্ত কমিশন গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনে যায়। সেখানে গিয়ে কমিশনের সদস্যরা দেখতে পান, ডিজিএফআইয়ের কার্যালয় চৌহদ্দির মধ্যে একটি দোতলা ভবন রয়েছে। যার নিচতলায় ২০ থেকে ২২টি সেল (বন্দিশালার কক্ষ) রয়েছে। তবে এসব সেলে এখন কেউ নেই, খালি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ডিজিএফআই সদর দপ্তরের কম্পাউন্ডে অবস্থিত দোতলা ভবনের নিচতলায় ছিল জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল। দোতলার কক্ষগুলো ব্যবহৃত হতো প্রশাসনিক কাজে। ভুক্তভোগীদের বর্ণনায় গোপন বন্দিশালার যে বর্ণনা আমরা পেয়েছি, জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলের সঙ্গে তার পুরোপুরি মিল আছে।’
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১০ সাল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী বা লক্ষ্যবস্তু করা ব্যক্তিদের গুম করার প্রবণতা শুরু হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে এটা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গুম হওয়া ব্যক্তি ও তাঁদের স্বজনেরা গোপন বন্দিশালা পরিচালনা ও গুমের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনার দাবিতে সোচ্চার হন।
যুগান্তর
‘ঘুসের খবরে তোলপাড়’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হচ্ছে, ডিসি (জেলা প্রশাসক) নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ ওঠায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে শুরু করে সারা দেশের মাঠ প্রশাসন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় বইছে। বেশ উদ্বিগ্ন সরকারের সংশ্লিষ্টরাও। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
এ ব্যাপারে তিনজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা হলেন-ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ তদন্তসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানান।
এদিকে ডিসি নিয়োগে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর ‘জাল সনদে চাকরিতে সহস্রাধিক শিক্ষক’। খবরে বলা হচ্ছে, জাল সনদে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন সহস্রাধিক শিক্ষক। সম্প্রতি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জাল সনদসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়। সেখানে এমন ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের জাল সনদের তথ্য দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৭৯৩ জন শিক্ষকের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ, ২৯৬ জনের কম্পিউটার শিক্ষার সনদ এবং ৬৭ জনের বিএড, গ্রন্থাগার, সাচিবিকবিদ্যা ও অন্যান্য বিষয়ের সনদ জাল।
এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার জাল সনদে চাকরি করা ২০২ জন শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে সাতটি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ (এমপিও) বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে তালিকায় থাকা অভিযুক্ত জাল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধান কর্তৃক ফৌজদারি অপরাধের মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন চাকরির সুবাদে এসব শিক্ষক জাল সনদে সরকার থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা বেতন বাবদ উত্তোলন করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই অর্থ শিক্ষকদের সরকারি কোষাগারে ফিরিয়ে দিতে হবে।
এর আগে গত ১৮ মে জাল সনদে দীর্ঘ বছর শিক্ষক-কর্মচারী পদে চাকরি করছেন, এমন ৬৭৮ জন শিক্ষককে শনাক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) বলা হয়, এতদিন যে টাকা বেতন ভাতা হিসেবে তারা গ্রহণ করেছেন, তা ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু জাল সনদধারী এসব শিক্ষককে চাকরিচ্যুত ও এমপিও বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার এক মাস পরও ওই শিক্ষকদের বেতন ও উত্সব ভাতা বাবদ তাদের অনুকূলে কয়েক কোটি টাকা ছাড় করেছিল মাউশি। তবে শেষ পর্যন্ত ২০২ জনের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলো মাউশি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৪ হাজার। এর মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ হাজার ৩১৬টি, কলেজ দুই হাজার ৬৬৪টি, মাদরাসা ৯ হাজার ২৯২টি এবং দুই হাজারের মতো কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ২০০৫ সাল থেকে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক ‘শিক্ষক নিবন্ধন সনদ’ বাধ্যতামূলক করা হয়। বতর্মানে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন প্রায় চার লাখ শিক্ষক ও এক লাখ কর্মচারী, যাঁরা সরকারি বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। শিক্ষা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের ২৯ জন, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১০ জন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১০০ জন এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ১৭ জন শিক্ষকের সনদ জাল। এর বেশির ভাগই এনটিআরসিএ এবং কম্পিউটারের জাল সনদ দিয়ে এমপিও নিয়েছেন।
নয়া দিগন্ত
‘আ’লীগের অপকর্মের দায় নিতে রাজি নয় ১৪ দলের শরিকরা’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার সংবাদ। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্মরণকালের মহাবিপর্যয় ঘটেছে দলটির। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ প্রধানের ভারতে পালিয়ে যাওয়া এবং দলটির সব পর্যায়ের নেতা-মন্ত্রী ও এমপিদের আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পরই দীর্ঘ দিন ধরে সুখে-দুখে পাশে থাকা জোটসঙ্গী দলগুলোও বোল পাল্টাতে শুরু করেছে।
জোটসঙ্গী হিসেবে টানা ১৬ বছর সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও এখন আওয়ামী লীগের অতীতের কোনো অপকর্মের দায়ভার নিতেও রাজি নয় শরিকদলগুলো। যদিও গণহত্যার হুকুমদাতা হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের শরিক দলগুলোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত বুধবার একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এ বিষয়টি নিয়ে জোটসঙ্গীরা বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন। অভিযোগ প্রাথমিক অবস্থায় থাকায় বিষয়টি আপাতত পর্যবেক্ষণ করছেন জোটের শরিকরা। তাদের মতে, জোটের প্রত্যেক দলের নিজস্ব গঠনতন্ত্র আছে। তাদের রাজনৈতিক আদর্শ আছে। যদিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসের ওপর ভর করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট গঠন হয়েছিল সেই ২০০৪ সালে। এরপর ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে টানা ১৬ বছর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেও সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নেয়াদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, জাপা, তরিকত ফেডারেশন অন্যতম।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ছিল জোট প্রধান। তাদের কথামতোই সব চলত। তারাই সরকারের সুযোগ-সুবিধাভোগী। এ দেশে যত লুটপাট, গুম, খুন, বিরোধী দল দমনসহ অন্যান্য যেসব অপকর্ম সংঘটিত হয়েছে তা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই করেছে। শরিকদলগুলো শুধু জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনের সময় সক্রিয় ছিল। ফলে তাদের অতীতের অপকর্মের দায়ভার শরিকরা কেন নেবে- তাদের এমন প্রশ্নও রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আলাপ হয় জোটের অন্যতম শরিক ন্যাপের সহসাধারণ সম্পাদক মো: ইসমাইল হোসেনের সাথে। তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগ জোটের কার্যকারিতা আসলে নেই। জোট প্রধান দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আওয়ামী লীগের অন্য নেতারাও আত্মগোপনে রয়েছেন। কেউ কেউ এরইমধ্যে গোপনে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।
আজকের পত্রিকা
‘সদরে শিকড় গেড়েছেন অর্ধশত পুলিশ কর্মকর্তা’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সরকারি চাকরিবিধি ও পুলিশ প্রবিধানে প্রতি তিন বছর পর বদলির নিয়ম থাকলেও পুলিশ বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা ঘুরেফিরে সদর দপ্তরেই থাকছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন এক যুগের বেশি সময় ধরে আছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিগত সরকারের আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে এসব কর্মকর্তা এত দিন ধরে সদর দপ্তরে শিকড় গেড়ে আছেন। সদর দপ্তরে থাকা এসব কর্মকর্তার মধ্যে আছেন পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি), অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক জনরোষের মুখে পড়ে। ঊর্ধ্বতনদের কয়েকজন দেশ থেকে পালিয়েও যান। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক রদবদল করা হয়। কিন্তু তারপরও এসব কর্মকর্তার গায়ে কোনো আঁচ লাগেনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৪ থেকে সর্বোচ্চ ১৩ বছর ধরে সদর দপ্তরে কর্মরত আছেন—এমন কর্মকর্তার সংখ্যা অন্তত ৫০ জন। তাঁদের কেউ কেউ প্রভাবশালীদের কাছাকাছি থাকার সুবাদে বদলিও ঠেকিয়েছেন।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন) আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত দেড় দশকে পুলিশের কাজ নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। ধীরে ধীরে এগুলো নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। মাঠের পুলিশিং ঠিক করে পুলিশ সদর দপ্তরেও হাত দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় বাহিনীর স্বার্থে বিশেষায়িত কাজের জন্য অভিজ্ঞদের একই জায়গায় রাখা হয়। তবে সেটা খুব বেশি না।’ তবে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুরুল হুদা বলেছেন, এভাবে কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিন শুধু সদর দপ্তরে কর্মরত থাকার বিষয়টিকে নিয়মের লঙ্ঘন ও পুলিশের শৃঙ্খলার পরিপন্থী।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাহিনীর সদর দপ্তরে তিনটি মূল বিভাগ—অ্যাডমিন ও অপারেশন, অর্থ ও উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা (এইচআরএম)। এই তিন বিভাগের অধীনে অন্তত ৫৩টি শাখা ও উপশাখা রয়েছে। আইজিপি এসব শাখাপ্রধানদের দিয়ে প্রায় সোয়া দুই লাখ সদস্যের পুলিশ বাহিনীকে পরিচালনা করেন। এসব শাখা-উপশাখায় ৭ জন অতিরিক্ত আইজিপি, ১২ জন ডিআইজি, ৩৮ জন অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৫৩ জন এআইজি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপারসহ প্রায় ২০০ কর্মকর্তার পদায়ন থাকে। বর্তমানে তাঁদের অন্তত অর্ধশত রয়েছেন সর্বনিম্ন ৪ থেকে সর্বোচ্চ ১৩ বছর ধরে।
নিউ এইজ
নিউ এইজের প্রধান শিরোনাম, ‘Coal power plants charge astronomical costs for fuel’ অর্থাৎ ‘কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো জ্বালানির জন্য আকাশছোঁয়া দাম নেয়’।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে নীরবে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এর পেছনে বিতর্কিত বিদ্যুৎ চুক্তি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ব্যর্থতা রয়েছে বলে অভিযোগ তুলছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
দেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগ তাদের নিজস্ব জ্বালানি আমদানি করে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যা দাবি করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সেই মূল্যই পরিশোধ করে। এ ক্ষেত্রে যে চালান দেয়া হয় সেটা বানানো হতে পারে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে বেসরকারি কয়লা আমদানিতে আন্ডার এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানাধীন কোম্পানির সাথে কয়লা আমদানির যোগসাজশ রয়েছে বলে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘গুলশানে সম্পত্তি বিক্রেতা বেড়েছে, ক্রেতা কম’। খবরে বলা হচ্ছে, দুই হাজার ৪৩০ বর্গফুট আয়তনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রির বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে সম্পত্তি কেনাবেচার ওয়েবসাইট বিপ্রপার্টিডটকমে। অ্যাপার্টমেন্টটির অবস্থান রাজধানীর গুলশান-১ এলাকায়। ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে একাধিক আলোকচিত্র। বিক্রেতা অ্যাপার্টমেন্টটিকে ‘নান্দনিক’ হিসেবে উল্লেখ করে দাম হাঁকিয়েছেন ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজ্ঞাপন প্রকাশের কয়েকদিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আগ্রহীই যোগাযোগ করেননি।
রাজধানীর গুলশান-২ এলাকায় ৪ হাজার ৪৮৩ বর্গফুটের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রির বিজ্ঞাপন বিপ্রপার্টির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকদিন আগে। ৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা মূল্যের এ সম্পত্তিরও কাঙ্ক্ষিত ক্রেতার খোঁজ পাননি বিক্রেতা। ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, আবাসিক প্লট, দোকানসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা বিক্রির এমন ৫০টি বিজ্ঞাপন রয়েছে বিপ্রপার্টির ওয়েবসাইটে। কিন্তু ক্রেতাদের সাড়া মিলছে না তেমন। বিদ্যমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই এমনটা হয়েছে। বেচাকেনা ৪০-৫০ শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
নতুনের পাশাপাশি পুরনো জিনিসপত্র ও সম্পত্তি বেচাকেনার অনলাইন প্লাটফর্ম বিক্রয় ডটকম। গত ১১ আগস্টের পর প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে গুলশান এলাকার ৯৬টি ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের প্রপার্টি বাজারে বেশ ‘স্ট্রাগল’ করতে হচ্ছে বলে বিক্রয় ডটকমের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।