দেশ বিদেশ
লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি নয়ন ও লিকার সম্পদের খোঁজে দুদক
স্টাফ রিপোর্টার
৪ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবারঅনিয়মের মাধ্যমে শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন লিকার বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি।
দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংস্থাটির উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি নয়ন ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান লিকার অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগিরই কর্মকর্তা নিয়োগ করবে কমিশন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের ২০২১ সালে নির্বাচনী হলফনামায় দাখিল করা তথ্যানুসারে বাৎসরিক আয় ৩৬ লাখ ১০ হাজার ২৯০ টাকা এবং ১ কোটি ৪০ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬৮ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। অন্যদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয়কর রিটার্নে দাখিল করা সম্পদের তথ্য অনুযায়ী তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১৩ লাখ ৯১ হাজার টাকা। কিন্তু দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুর মহিলা কলেজ রোডের ১০ শতাংশ জমির উপর ৫ তলা ভবন সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৪০-৫০ শতাংশ জমি ক্রয় এবং ধানমণ্ডিসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। সব মিলিয়ে তার ঘোষিত সম্পদের বিবরণের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সম্পদের খোঁজ মিলেছে দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে।
দুদক জানায়, টাকার বিনিময়ে নয়ন নিজস্ব ব্যক্তিদের টেন্ডার পাইয়ে দিতেন এবং বাজার দখল, বাসস্ট্যান্ড থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চাঁদা তুলতেন। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়ম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগে প্রভাব খাটিয়ে নিজ ও তার পক্ষের অন্য ব্যক্তিদের নামে এবং তার উপর নির্ভরশীলদের নামে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন। এ ছাড়াও তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
অন্যদিকে, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন লিকা ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে নিজ নামে ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধভাবে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। ২০২২ সালে মহিলা সদস্য পদের নির্বাচনের জন্য দাখিল করা নির্বাচনী হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে তার অতি সামান্য পরিমাণ সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু তিনি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নিজ নামে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট থাকার তথ্য পাওয়া যায়। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ ও তার উপর নির্ভরশীলদের নামে প্রচুর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন। এ
ছাড়াও বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন বলে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।