বাংলারজমিন
শিবচরে বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা
শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
২ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার৫ই আগস্টের পর মাত্র ৫৫ দিনেই ভোল পাল্টাচ্ছেন শিবচরের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান ও নেতারা। সোমবার শিবচর বিএনপি’র এক সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা মোহসেন উদ্দিন সোহেল ব্যাপারীসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একঝাঁক নেতা বিএনপিতে যোগ দেন। এ যেন বিএনপিতে পুনর্বাসন!
সোমবার দুপুরে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের বাদশা ব্যাপারীর বাড়িতে বিএনপি’র একাংশের এক সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহসেন উদ্দিন সোহেল ব্যাপারী আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় নেতা এবং স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরীর খুবই আস্থাভাজন। পুরোদস্তুর একজন আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে তিনি বেশ সমাদৃত শিবচরে। পটপরিবর্তনের ৫৫ দিনের মধ্যেই তাকে বিএনপি’র এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকতে দেখে সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র নেতাকর্মীরাও।
সোমবার দুপুরে শিবচরের সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যার একাধিক মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগের ওই চেয়ারম্যানকে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
একইদিন আরও কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে বিএনপিতে যোগদান করানো হয়েছে। এই নিয়ে জেলা জুড়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।
জানা গেছে, সভায় বিএনপি নেতা কামাল জামান নুরুদ্দীন মোল্লা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। নুরুদ্দিন মোল্লাকে স্বাগত জানাতে বিএনপি’র স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মোহসেন উদ্দিন সোহেল ব্যাপারীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। পরে সভার মঞ্চেও বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে ওই চেয়ারম্যানকে।
একই অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সজীব হাওলাদারকে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগদান করারও খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও একইসঙ্গে এলাকার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরও বেশকিছু নেতারও বিএনপিতে যোগদানের খবর পাওয়া গেছে। এতে করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে।
শেখ নূর উদ্দীন নামে এক ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি লতিফ মোল্লার আপন ছোট ভাই কামাল জামান নূরুদ্দীন মোল্লা একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও পায়নি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়। এরপরে থেকে নিজেকে বিএনপি নেতা বলে পরিচয় দিতে থাকেন। ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত শিবচরে তার কোনো কার্যক্রম ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫ই আগস্টের পরে তিনি হঠাৎ করে প্রকাশ্যে এসে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিএনপিতে পুনর্বাসন করে রাজনীতিতে ফিরতে চেষ্টা করছেন। তিনি এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যা মামলার ২ জন আসামি ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল ব্যাপারী ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সজীব হাওলাদারকে সোমবার দলে নিয়ে বিএনপি’র কর্মী সমাবেশ করেছেন। এটা দুঃখজনক। এতে করে শিবচরে বিএনপি’র ওপরে আস্থা হারাচ্ছেন সাধারণ জনগণ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে থেকে বিগত ১৭ বছর সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন তারা। দিন বদলে এই পরিবর্তন! এটা খুবই লজ্জার!’
এদিকে যোগদান বা সমাবেশে উপস্থিত থাকার বিষয় জানতে সোহেল ব্যাপারী, সজীব হাওলাদারের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বিএনপি নেতা কামাল জামান নুরুদ্দিন মোল্লার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন খলিফা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যারা ত্যাগী, আস্থাশীল এমন নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় না করে কিছু দালাল চক্রের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের দলে স্থান দেয়া হয়েছিল। তারা দলের সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। তারা এসেছিল ব্যবসা করতে ব্যবসা শেষ এখন আবার চলে গেছেন। আমাদের দলের নেতা জননেতা নূর-ই আলম চৌধুরী কোনো সাংগঠনিক সম্পাদক বা দলের কারও সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করে তাদের দলে এনছিল। এখন তারা সুযোগ পেয়ে চলে গেছে।
উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান বলেন, এ ঘটনায় আমরা উপজেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাই। যারা এ কাজগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা শিবচর উপজেলা বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’
এরা মাইর থেকে বাঁচার জন্য দল ত্যাগ করছে। এরা পতিত বীজ। এরা তখনো লুটপাট করছে এখন আবার লুটপাট করার বন্দবস্ত করে রাখলো। আর যারা এদের দলে সুযোগ দিবে তারাও লুটপাটের জন্য মুখিয়ে আছে।
সকল অপরাধীকে গ্রেফতার করে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক
প্রথমতঃ মন্তব্য করতে চাই না কারন পত্রিকা আমার মন্তব্য ছাপাবে না। তারপরেও বলি, 'এইসব অতিথি পাখি রা একটা দলের জন্য অকল্যানকর। এরা দলকে ধ্বংস করে। এরা ধান্দাবাজ একারনেই ভোল পাল্টাতে সময় লাগে না। বিএনপি'র উচিৎ এদেরকে দলে না নেয়া। ১৯ বছর যাবৎ একটা দলের ছত্রছায়ায় থেকে আখের গুছিয়েছে, এখন সেগুলো বহাল তবিয়তে গেলার জন্যই মূলত দলবদল করছে।
আসলে এই দল গুলি একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। নতুন ধারার রাজনীতি দরকার।
এই যদি হয় বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে আস্থার দল বিএনপির অবস্থা, তাহলে এই বিএনপিকেও দেশের মানুষ ইতিহাসে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলতে দ্বীধাবোধ করবেনা। কারণ বোতল বদলালে মদ কখনো পানি/হালাল হয়ে যায়না।
এখানে সব মন্তব্য কারি উপযুক্ত ও স্পষ্ট ভাষায় অভিমত দিয়েছেন । প্রবাসে থাকায় আমি সঠিক শব্দ চয়ন করতে পারি না, অনেক সময় ।
এদেরকে বি এন পি কিভাবে দলে ঠাঁই দিলো? এদেরকে বিশ্বাস করা উচিৎ হবে না। এরা এখন পিঠ বাঁচাতে দল পরিবর্তন করছে। বি এন পি কে এটা মনে রাখতে হবে।
তাদের মন থেকে কী আওয়ামিলীগ মুছে যাবে? এই যোগদান যোগদান খেলা বন্ধ করুন। সাধারণ জনগণ এই সংস্কৃতি ঘৃণা করে।
জেলা বিএনপির অনুমোদন নাই, উপজেলা বিএনপি যানে না! এটাকে যোগদান বলবো? না পিঠের চামড়া বাঁচাতে প্রপাগান্ডা বলবো?
BNP should immediately exclude the intruders .
বিএনপির কপাল পুড়তে যাচ্ছে
বিএনপি ভুল করছে। কয়লার ময়লা লক্ষ বার ধুলেও যায় না।
হাসিনা খেয়েছে সারা দেশ,আর আওয়ামীলীগ খাবে বিএনপিকে।
আওয়ামী লীগ হলো ইমাম,এবং বিএনপি হচ্ছে মুক্তাদি - এই হলো এদের রাজনীতি।
বিএনপি ও তাদের গ্রহণ করছে । কি সুন্দর আদর্শ হীন রাজনীতির দৃষ্টান্ত। আবার বিএনপির আমলে লুটপাট এদের উদ্দেশ্য, কোন আদর্শ নাই।
যারা যোগ দিলো এরা আবার অন্য দলে যেতেও সময় লাগবেনা কারণ এরা পরীক্ষিত মিরজাফরের দল,আর যারা টাকা খেয়ে যোগ দেওয়ালে এরাও মীরজাফর।