ঢাকা, ৭ অক্টোবর ২০২৪, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

খেলা

স্বপ্নের সকালের পর দুঃস্বপ্নের বিকাল

স্পোর্টস রিপোর্টার
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শুক্রবারmzamin

সকালটা যদি হয় স্বপ্নের মতো, বিকালটা তাহলে বাংলাদেশের জন্য দুঃস্বপ্ন। গতকাল ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশের পারফর্মেন্সের সারাংশ এটাই। টস জিতে ফিল্ডিংয়ে ৩৪ রানের মধ্যে রোহিত শর্মা, শুবমান গিল ও বিরাট কোহলিকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন হাসান মাহমুদ। পরে ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারায় ভারত। দেড় সেশন পর্যন্ত বাংলাদেশই ছড়ি ঘুরিয়েছে। তবে দিনের বাকি সময়ে বাংলাদেশকে হতাশার চাদরে ডুবিয়ে দেন ভারতের দুই ব্যাটার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা। দুঃস্বপ্নের সকালের পরও এ দুজনের রেকর্ড জুটিতে দারুণভাবে দিন শেষ করে ভারত।
চেন্নাইয়ের পি চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩৯ রান দিয়ে প্রথম দিন শেষ করে ভারত। অশ্বিন ১০২ আর জাদেজা ৮৬ রানে অপরাজিত থাকেন। গড়েন ১৯২ রানের রেকর্ড জুটি। ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার হাসান মাহমুদ। 
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৪২ বছর পর চেন্নাইয়ে কোনো অধিনায়ক এই সিদ্ধান্ত নিলো। কন্ডিশন কাজে লাগাতে এবং উইকেটের ময়েশ্চারের ফায়দা তুলতেই ফিল্ডিং নিয়েছিলেন শান্ত। আর অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতি সুবিচার করতে মোটেও দেরী করেননি বাংলাদেশের পেসাররা। নির্দিষ্ট করে বললে হাসান মাহমুদ। ৩৪ রানেই ভারতের টপ অর্ডারকে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠান এই পেসার। 
রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে আউট করার পরিকল্পনায় প্রশংসা করতে দেখা যায় ধারাভাষ্যকারদেরও। শুভমন গিলের উইকেটটা কিছুটা ভাগ্যের সহায়তায়। ২০০৯ সালে  শ্রীলঙ্কার পেসার চানাকা ভেলেদেগেরার পর এই প্রথম কোনো টেস্টের প্রথম ইনিংসে প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে ভারতের ন্যূনতম তিন ব্যাটসম্যানকে আউট করেন হাসান।
৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আরেক ওপেনার যশ্বসী জয়সোয়াল আর ঋষভ পন্ত মিলে দলের হাল ধরেন। প্রথম সেশনে ২৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৮৮ রান জমা হয় ভারতের স্কোরবোর্ডে। 
২২তম ওভারে পন্তকে ফিরিয়ে ৬২ রানের জুটি ভাঙেন হাসান। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে আলসে কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপার লিটনকে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩৯ রান করেন পন্ত।  ২৮তম ওভারে ভারতের স্কোরবোর্ডে রান ১০০ পার হয়। অন্যরা টিকতে না পারলেও জয়সোয়াল সাবলীল ছিলেন ব্যাটিংয়ে। ৯৫ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি  তুলে নেন জয়সোয়াল। অভিষেকের পর থেকে ঘরের মাঠে টানা ৬ টেস্টে ন্যূনতম ৫০ রানের ইনিংস খেললেন জয়সোয়াল। ভারতের ক্রিকেটারদের মধ্যে এই তালিকায় তিনিই শীর্ষে। তবে এরপর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। 
৪২তম ওভারে নাহিদ রানার ১৪৮ কিলোমিটার গতির বলটি  ব্যাটের কানা নিয়ে স্লিপে সাদমানের হাতে জমা পড়লে শেষ হয় জয়সোয়ালের ইনিংস। তার আগে করেন ১১৮ বলে ৫৬ রান। পরের ওভারে কেএল রাহুলকে শর্ট সিলি অঞ্চলে জাকির হাসানের ক্যাচ বানান মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৪৭ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত।
দুই সেশনের মধ্যে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে তখন উড়ছিল বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে নেমেই যেন সফরকারীদের উড়াল থামাতে চাইলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে শুরু থেকে একের পর এক শট খেলে ব্যাকফুটে ঠেলে দিলেন বাংলাদেশকে। ঠিক যেন রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে লিটন-মিরাজের জুটি! 
চা বিরতির আগে প্রথম ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ১৭৬। দিনের ৫৩তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসে দুই ওভারে ২১ রান হজম করেন সাকিব আল হাসান। জাদেজা-অশ্বিন দুজনেই তার ওপর চড়াও হন। ওয়ানডে স্টাইলে খেলা অশ্বিন ৫৮ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। একপর্যায়ে দুজনের জুটিতে ১০০ রান পূর্ণ হয়।
এই পথেই সৌরভ গাঙ্গুলী ও সুনীল যোশীকে মনে করান অশ্বিন ও জাদেজা। ২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে সপ্তম উইকেটে ১২১ রান যোগ করেছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী ও সুনীল যোশী। ২৪ বছর পর গতকাল সেটা পেরিয়ে যান জাদেজা ও অশ্বিন। এর কিছুক্ষণ পর ৭৩ বলে ক্যারিয়ারের ২১তম ফিফটি পূর্ণ করেন জাদেজা। এরপর শচীন ও জহির খানের রেকর্ড ভাঙেন তারা। ২০০৪ সালে ঢাকায় ভারতের হয়ে দশম উইকেটে ১৩৩ রান যোগ করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার-জহির খান। সেটিই ছিল সপ্তম বা এর পরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের সর্বোচ্চ রানের জুটি। ১০৪ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন অশ্বিন। ঘরের মাঠে যেটা তার টানা দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। সর্বশেষ ২০২১ সালে ঘরের মাঠে খেলতে নেমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন তিনি। ৩ বছর পর ঘরের মাঠে টেস্টে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন হলো অশ্বিনের। 
 

খেলা থেকে আরও পড়ুন

খেলা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status