খেলা
ভারতে টেস্ট ইতিহাস বদলানোর অনুপ্রেরণায় পাকিস্তান
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবারভারতের মাটিতে বাংলাদেশের টেস্ট জয় নেই, এমনকি ড্রও করতে পারেনি। দেশের মাটিতেও যে বড় কোনো সাফল্য আছে এমনটাও নয়। এখন পর্যন্ত দুই দল ১৩ টেস্ট ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যার ১১টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। বাকি দু’টিতে ড্র করেছে তাও দেশের মাটিতে। এর মধ্যে ভারতে গিয়ে তিনটি ম্যাচের সবক’টিই হেরেছে বড় ব্যবধানে। শুধু তাই নয়, এখন পর্যন্ত দু’টি দেশের সঙ্গে কখনোই ম্যাচ জিতেনি টাইগাররা তার একটি ভারত। তবে পাকিস্তানের মাঠে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর ভারত সিরিজ নিয়ে বড় আশায় বাংলাদেশ। আজ দুপুরে দুই টেস্ট ও তিন ম্যাচের টি- টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ভারতে যাবে দল। এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ফারুক আহমেদও জানিয়েছেন তার প্রত্যাশার কথা। তিনি বলেন, ‘বাংলাশের মানুষ আমরা খুব ভালো জানি আমাদের শক্তি কি। আমরা এখনো ক্রিকেটে উন্নতি করছি। আমি সভাপতি হিসেবে ও সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে একটা কথা বলতে পারি যে, একটা-দুইটা জয়ের চেয়ে পারফরম্যান্সটা একটা স্ট্যান্ডারে নিয়ে যেতে পারি সেখান থেকে নিয়মিতভাবে জয় আসবে। এতে করে আমার বিশ্বাস দলও একটা শক্তিশালী পজিশনে দাঁড়াতে পারবে।’
ভারতের বিপক্ষে ১৩ টেস্টের মধ্যে শুধু তিনটি হয়েছে ভারতের মাঠে। হায়দরাবাদ, ইন্দোর ও কলকাতায়। সেই তিনটি ম্যাচ বাজেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ। পাঁচ বছর পর আবারো ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলতে যাচ্ছে টাইগাররা। তাই প্রশ্ন হচ্ছে- এবার কী সেই তিন টেস্টের দুঃস্মৃতি মুছতে পারবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল? এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের সবচেয়ে সম্মানজনক এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ খেলেছে মোট ১৪৪টি ম্যাচ। যেখানে বাংলাদেশ জিতেছে ২১টি ম্যাচে, হেরেছে ১০৫টিতে এবং ড্র হয়েছে ১৮ ম্যাচ। জয়ের শতকরা হার কেবল ১৪.৫৮। তবে সবশেষ আট টেস্টের পাঁচটিতেই জিতেছে শান্ত-মুশফিকরা। এর মধ্যে সদ্যই পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে এসেছে তাদের মাঠেই। টেস্টে বাংলাদেশের নতুন জাগরণে তবে কী এবার কাটতে যাচ্ছে ভারত জুজু? ২০১৭ সালে ভারতের বিপক্ষে ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো কোনো টেস্ট খেলতে যায় হায়দরাবাদে। সেখানে মুশফিকুর রহীমের নেতৃত্বাধীন দলটি হেরেছিল ২০৮ রানের বড় ব্যবধানে। এরপর ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে একের অধিক ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে যায় বাংলাদেশ। সেবার মুমিনুল হকের নেতৃত্বে বড় হতাশা নিয়েই দেশে ফিরতে হয়েছিল দলকে। দুই টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল সফরকারীরা। ইন্দোর টেস্ট ইনিংস ও ১৩০ রানের ব্যবধানে এবং কলকাতায় ইনিংস ও ৩০ রানের ব্যবধানে। সেই টেস্ট সিরিজের পাঁচ বছর পর ভারতের মাটিতে ফের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই তিন ভেন্যুর কোনোটিতেই এবার খেলছে না শান্তরা। প্রথম টেস্টটি হবে চেন্নাইয়ে এবং পরেরটি কানপুরে। চেন্নাইয়ে ১৯শে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া সেই টেস্টে শান্ত-সাকিবের লক্ষ্য মূলত আগের সব দুঃস্মৃতি ফেরানো। ভারতের বিপক্ষে এখনো জয়টা পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। তবে চেন্নাইয়ের মাটিতে অন্তত ড্র পেলেই সেটি থাকবে ভারতে বাংলাদেশের সাফল্যর মধ্যে সবার উপরে। সদ্য টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এবার তাদের লড়াই ভারতের বিরুদ্ধে। ভারতের মাটিতে রোহিতদের সামনে ন্যূনতম চ্যালেঞ্জ তৈরি করাটা যে কতটা কঠিন, তা নিশ্চিতভাবেই জানেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এর আগে কখনই টেস্টে ভারতকে হারাতে পারেনি ‘টাইগার’রা। কিন্তু এবার অসাধ্য সাধনের স্বপ্ন দেখছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। এই সিরিজের আগে দলের প্রায় প্রতিটি সদস্য দারুণ আত্মবিশ্বাসী। মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন দাসরা মনে করেন তারা ভারতে জয় তুলে নিতে সক্ষম। প্রশ্ন হচ্ছে- এই সাহস কীভাবে আসছে তাদের মধ্যে তা নিয়েও। বলার অপেক্ষা রাখে না তার রসদ লুকিয়ে আছে পাকিস্তান সিরিজের মধ্যেই। সেখানে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর সেটাই আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে অধিনায়ক শান্তকে। পাকিস্তান সফরে জয়ের প্রসঙ্গে শান্ত বলেছেন, ‘একটাই শব্দ, বিশ্বাস। জিততে পারলে খুবই ভালো লাগে। মাঠের মুহূর্তগুলো উপভোগ করাটাই আসল। এ রকম মুহূর্ত বাংলাদেশ ক্রিকেটে আগে আসেনি। ক্রিকেটাররা এর থেকে অনুপ্রেরণা পাবেন। এবার আমরা জানি, আমরা বিদেশের মাটিতে জয় পাবো।’