ঢাকা, ৭ অক্টোবর ২০২৪, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, দুদক, পুলিশ, প্রশাসন সংস্কারে ৬ কমিশন

কাজ বড় কঠিন, ব্যর্থ হওয়ার অবকাশ নেই

স্টাফ রিপোর্টার
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবারmzamin

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দাবির প্রেক্ষিতে সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারে ছয়টি কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন। আধাঘণ্টার বেশি সময় স্থায়ী প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। ভাষণে ড. ইউনূস চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, শিল্প-কারখানার বর্তমান পরিস্থিতি, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, আর্থিক খাত, প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। 

তিনি বলেন, শিল্প-কারখানা বন্ধ হলে অর্থনীতিতে বিরাট আঘাত পড়বে, সমস্যার সমাধান বের করবো, কারখানা খোলা রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখুন। ন্যায্যতা এবং সমতার ভিত্তিতে ভারতসহ প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমাদের দেশ যেন বিশ্বের কাছে পরিচিত হয়, কোনো নেতা বা দল নয়, দেশের পরিকল্পনা যেন মানুষকেন্দ্রিক হয়। দেশের মানুষকে আর ফাঁকি দেয়া চলবে না। কর্মসংস্থান তৈরি করবে এমন প্রকল্পগুলোকে সরকার অগ্রাধিকার দেবে। লুটপাট ও পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্যের দাম কমাতে শুল্কহার হ্রাসে এনবিআর’কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ভাষণে আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ারও আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। 

বক্তব্যের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা জুলাই-আগস্ট মাসে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।  
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণ-অভ্যুথানে শহীদদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। আহত শিক্ষার্থী, শ্রমিক, জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করবে। এই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে সরকার ‘জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন’- প্রতিষ্ঠা করেছে। সকল শহীদ পরিবার এবং আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসাসহ তাদের পরিবারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব এই ফাউন্ডেশন গ্রহণ করছে। 

ফেনীসহ কয়েকটি জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা নিয়ে তিনি বলেন, গত মাসে কুমিল্লা-নোয়াখালী সিলেট অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা এসব এলাকার মানুষকে হতভম্ব করে দিয়েছে। এখানে বেশির ভাগ এলাকায় কোনোদিন বন্যা হয়নি। তারা বন্যা মোকাবিলা করায় অভ্যস্ত নন। দেশপ্রেমিক সশস্ত্রবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে বন্যা আক্রান্ত সবাইকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসে। ফলে মানুষের দুর্ভোগ কম হয়েছে। এর পরপরই এনজিও এবং সাধারণ মানুষ দেশের সকল অঞ্চল থেকে দলে দলে এগিয়ে এসেছে। আমি বিশেষ করে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দেশের সকল দুর্যোগকালে তারা সবসময় আন্তরিকভাবে এগিয়ে এসেছে। বিশেষ করে বন্যা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে তাদের সৈনিক এবং অফিসাররা দিনের পরদিন যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছে তার কোনো তুলনা হয় না। জনজীবনে স্বস্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তাদের ভূমিকা অনন্য। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যকে আমি ধন্যবাদ জানাই তাদের সততা, ত্যাগ ও অসীম দেশপ্রেমের জন্য। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বন্যা, খরা, ঝড়, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় সহ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে আপনারা সকলের শেষ ভরসার স্থান। দেশের প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে আপনারা দেশের মানুষের পাশে থেকেছেন। দেশের স্বাধীনতার পক্ষে, সার্বভৌমত্বের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। দেশ গঠনেও আপনারা সবার আগে এগিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, বন্যা এখন চলে গেছে। কিন্তু পুনর্বাসনের কঠিন কাজ আমাদের সামনে রয়ে গেছে। সকলের সহযেগিতায় আমরা পুনর্বাসনের কাজটি সফলভাবে সমাধান করতে চাই।  

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যেসব ভাই-বোনেরা তাদের গত ১৬ বছরের বেদনা জানিয়ে তার প্রতিকার পাওয়ার কর্মসূচি দিচ্ছেন আমি কথা দিচ্ছি আপনাদের ন্যায্য আবেদনের কথা ভুলে যাবো না। আমরা সকল অন্যায়ের প্রতিকারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আমাদের দায়িত্বকালে যথাসম্ভব সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো। আমি আবারও অনুরোধ করছি আপনার যাতায়াতে ব্যাঘাত সৃষ্টি থেকে বিরত থাকুন। জাতি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক, ঔষধশিল্প এসব এলাকায় শ্রমিক ভাইবোনেরা তাদের অভিযোগ জানানোর জন্য ক্রমাগতভাবে এই শিল্পের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ রাখতে বাধ্য করছেন। এটা আমাদের অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেটা মোটেই কাম্য নয়। এমনিতেই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার বিপ্লবের পর যে অর্থনীতি আমরা পেয়েছি সেটা নিয়ম-নীতিবিহীন দ্রুত ক্ষীয়মাণ একটা অর্থনীতি। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। আমরা এই অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চারের চেষ্টা করছি। আমাদের উদ্যোগে সাড়াও পাচ্ছি। ঠিক এই সময়ে আমাদের শিল্প কারখানাগুলো বন্ধ ও অকার্যকর হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট আঘাত পড়বে। শ্রমিক ভাইবোনদের অনেক দুঃখ আছে। কিন্তু সেই দুঃখ প্রকাশ করতে গিয়ে আপনাদের মূল জীবিকাই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে সেটা ঠিক হবে না। শ্রমিক-মালিক উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এসব সমস্যার সমাধান আমরা অবশ্যই বের করবো। আপনারা কারখানা খোলা রাখুন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখুন। দেশের অর্থনীতিকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে দিন। আমরা আপনাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান বের করার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করবো। মালিকপক্ষের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা শ্রমিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া করুন। কারখানা সচল রাখুন। অর্থনীতির দুর্বল স্বাস্থ্যকে সবল করে তুলুন।  

তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব অনেক। ন্যায়ভিত্তিক একটি সমাজ গড়ে তোলার জন্য একসঙ্গে অনেকগুলো কাজে আমাদের হাত দিতে হবে। দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিচার বিভাগের বড় সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। যোগ্যতম ব্যক্তিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়াতে মানুষের মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস দমন আইন ও ডিজিটাল/সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ বাংলাদেশে বিদ্যমান সকল কালো আইনের তালিকা করা হয়েছে। অতি সত্বর এ সকল কালো আইন বাতিল ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশোধন করা হবে। সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডসহ বহুল আলোচিত ৫টি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ও দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তির জন্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমপ্রতি আমরা বলপূর্বক গুম থেকে সকল ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন সনদে স্বাক্ষর করেছি। ফলে স্বৈরাচার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ‘গুম সংস্কৃতি’র সমাপ্তি ঘটানোর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম। এছাড়া আমরা ফ্যাসিবাদী শাসনের ১৫ বছরে গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করার জন্য পৃথক একটি কমিশন গঠন করছি। আয়নাঘরগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এবং সেই সঙ্গে বের হয়ে আসছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের গুমের শিকার ভাইবোনদের কষ্ট ও যন্ত্রণা গাথা।

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যত যেন উজ্জ্বল হয় সেটা নিশ্চিত করতে শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে আমাদের পূর্ণ নজর রয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে। বই সংশোধন এবং পরিমার্জনের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উচ্চ প্রশাসনিক পদগুলো পূরণ করে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা বোর্ডে দখলদারিত্বের রাজনীতি বন্ধ করার ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়েছে মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, আপনারা মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। মিডিয়া যাতে কোনো রকম বাধা বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে সেজন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন। আরও যেসব কমিশন সরকারসহ অন্য সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারে, আমরা তাদের পুনর্গঠন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি যাতে তারা আরও শক্তিশালী হয়, জনকল্যাণে কাজ করে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনারবৃন্দ আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন। আমার অনুরোধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫৭ জন বাংলাদেশি যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন সে দেশের সরকার। ইতিমধ্যে তাদের কয়েকজন দেশে ফিরে এসেছেন। এই ক্ষমা প্রদর্শন ছিল অতি বিরল একটি ঘটনা। 
ড. ইউনূস বলেন, আমরা ভারত এবং অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তবে সেই সম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা এবং সমতার ভিত্তিতে। ভারতের সঙ্গে আমরা ইতিমধ্যে বন্যা মোকাবিলায় উচ্চ পর্যায়ের  দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আলোচনা শুরু করেছি। দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমি সার্ক রাষ্ট্র গোষ্ঠী পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের দেশ যেন গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে সম্মানের সঙ্গে পরিচিত হয়। দেশের পরিকল্পনা যেন দেশের মানুষ কেন্দ্রিক হয়, কোনো নেতা বা দল কেন্দ্রিক নয়। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের অহেতুক কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে দেখেছি যেগুলো কখনোই দেশের মানুষের জন্য ছিল না, বরং এর সঙ্গে জড়িত ছিল কুৎসিত আমিত্ব এবং বিশাল আকারের চুরি। চলমান এবং প্রস্তাবিত সকল উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর যাচাই-বাছাই করার কাজ শুরু করেছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর্যায় বিবেচনা করে বাকি কাজে ব্যয়ের সাশ্রয় এমনকি প্রয়োজনবোধে তা বাতিল করার কথা বিবেচনা করা হবে। দেশের মানুষকে আর ফাঁকি দেয়া চলবে না। কর্মসংস্থান তৈরি করবে এমন প্রকল্পগুলোকে আমরা অগ্রাধিকার দেবো।  

তিনি বলেন, লুটপাট ও পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটা ব্যাংকিং কমিশনও গঠন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে এই একমাসে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। ফ্যাসিবাদী সরকার লুটপাট করার জন্য নতুন করে ষাট হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়ার কারণে মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয়েছে দেশের মানুষ। এই অতুলনীয় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় যৌক্তিক পরিমাণে হ্রাস করার জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য সার আমদানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সাপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বিশ্ব ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, জাইকা থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, পাইপলাইনে থাকা ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মেগাপ্রকল্পের নামে লুটপাট বন্ধের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে রাশিয়া এবং চীন থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদের হার কমানো এবং ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সকল উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সকল অর্থনৈতিক সূচক এবং পরিসংখ্যানের প্রকৃত মান বা সংখ্যা প্রকাশের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রকৃত রপ্তানি আয় নিরূপণ এবং প্রকাশের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অটোমাইজেশনের লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। পুঁজি বাজারকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার নিমিত্তে ব্যবসায়ী, শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে সভা করা হয়েছে এবং তাদের মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্যাদি, যেমন পিয়াজ, আলু এসবের দাম আরও কমানোর জন্য বিদ্যমান শুল্কহার হ্রাসের বিষয়ে এনবিআরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় হতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের অধীন চলমান সকল প্রকার নেগোসিয়েশন, প্রকল্প বাছাই এবং ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। গত দেড় দশকে এই আইন ব্যবহার করে লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এ খাতে অধিকতর সক্ষমতা, গতিশীলতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সহনশীল রাখতে অকটেন ও পেট্রোলের দাম ৬ টাকা এবং ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১.২৫ টাকা কমানো হয়েছে। ৩৭ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৫শে আগস্ট হতে মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন ছাড়া বাকি সব স্টেশনে মেট্রোরেল পুনরায় চালু করা হয়েছে।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে বলেন,  মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের বয়স সাড়ে বারো বছরের কম ছিল, তাদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকা হতে বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিলের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের আওতাধীন বেদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।  

একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপরেখা তৈরি করতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আর যেন আমাদের কোনো স্বৈরাচারের হাতে পড়তে না হয়, আমরা যাতে বলতে পারি আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি। তিনি বলেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো। আমরা একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোনো কাজ কেউ করবেন না। 

সরকার প্রধান বলেন, ধ্বংস হয়ে পড়া একটা জনপ্রশাসনকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। জনপ্রশাসনকে নতুন করে দাঁড় করানোই ছিল আমাদের কঠিনতম সময়। সকল সমস্যা সমাধান করে একটি নতুন জনপ্রশাসন কাঠামো দাঁড় করাতে পেরেছি এটাই আমাদের প্রথম মাসের সবচাইতে বড় অর্জন। আমার বিশ্বাস এই জনপ্রশাসন জনগণের ইচ্ছা পূরণে সর্বোচ্চ অবদান রাখতে পারবে। তিনি বলেন, গত একমাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ১৯৮টি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

ড. ইউনূস বলেন, ছাত্র, শ্রমিক, জনতার বিপ্লবের মূল লক্ষ্য ছিল গণভবন। এটা ছিল স্বৈরাচারের কেন্দ্রবিন্দু। এই সরকার বিপ্লবের প্রতি সম্মান দেখিয়ে গণভবনকে বিপ্লবের জাদুঘর হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার ক্ষোভকে স্থায়ীভাবে তুলে ধরার জন্য গণভবনের আর কোনো সংস্কার করা হবে না। ছাত্র-জনতার ক্ষোভের মুখে তা যে অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিল সে অবস্থায় তাকে রাখা হবে।

তিনি বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশকে পরিবেশবান্ধব এবং জীব বৈচিত্র্যময় দেশ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। এটি তরুণদের আকাঙ্ক্ষা। আমাদের সবারই আকাঙ্ক্ষা। সেই লক্ষ্যে আমি প্রথমেই একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ নিয়েছি। আমার বাসভবন ও সমগ্র সচিবালয়ে প্লাস্টিকের পানির বোতল ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছি। ইতিমধ্যে সুপার শপগুলোতে পলিথিনের শপিং ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত কয়েক দশকে যে পরিমাণ নদী দূষণ হয়েছে, আমরা তা বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সংস্কার চাই। আমাদের একান্ত অনুরোধ, আমাদের ওপর যে সংস্কারের গুরু দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই  দায়িত্ব দিয়ে আপনারা দর্শকের গ্যালারিতে চলে যাবেন না। আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকুন। আমরা একসঙ্গে সংস্কার করবো। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব। আপনারা নিজ নিজ জগতে সংস্কার আনুন। একটা জাতির সংস্কার শুধুমাত্র সরকারের সংস্কার হলে হয় না। এই সংস্কারের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চাই। আমাদের এই যাত্রা আমাদের পৃথিবীর একটি সম্মানিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুক এটাই আমাদের সবার কাম্য।

তিনি বলেন, বিগত মাসে আমি বেশকিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথকভাবে বসেছি। তাদের সঙ্গে মতামত বিনিময় করেছি। তারা আমাদের উৎসাহিত করেছেন। ছাত্র, শ্রমিক, জনতার বিপ্লবের লক্ষ্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সংস্কারের কাজে পূর্ণ সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমি দেশের বিশিষ্ট সম্পাদকবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। তারাও সংস্কারের কাজে পূর্ণ সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বিভিন্ন বিষয়ে মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন। সবার পরামর্শ নিয়ে এখন আমাদের অগ্রসর হওয়ার পালা। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিজম বা স্বৈরতান্ত্রিক শাসন পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা রোধ এবং জনমালিকানা ভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে কিছু জাতীয়ভিত্তিক সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি। উক্ত সংস্কার ভাবনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। আমরা যেহেতু জনগণের ভোটাধিকার ও জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করি, সেহেতু নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়নে আমাদের সংস্কার ভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা মনে করি নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি। নির্বাচন ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। এসব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার জনমালিকানা ভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়ও অবদান রাখবে বলে বিশ্বাস করি। সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তাকে প্রতিফলিত করার জন্য সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এসব বিষয়ে সংস্কার করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে আমরা প্রাথমিকভাবে ছয়টি কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসব কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে এই কমিশনগুলো পরিচালনা করার দায়িত্ব দিয়েছি। এরপর আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়া আমরা অব্যাহত রাখবো।

তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিক দায়িত্ব পালন করবেন। এসব কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশন প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শ সভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র, শ্রমিক, জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ সভার আয়োজন করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের  প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শ সভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেয়া হবে। 
তিনি বলেন, আমাদের সামনে অনেক কাজ। সবাই মিলে একই লক্ষ্যে আমরা অগ্রসর হতে চাই। আমাদের মধ্যে, বিশেষ করে আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে যে সুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে আছে সেটা যেন বিনা বাধায়, রাষ্ট্রের এবং সমাজের সহযোগিতায় প্রকাশ করতে পারি সেই সুযোগের কাঠামো তৈরি করতে চাই।

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের কাজ বড় কঠিন, কিন্তু জাতি হিসেবে এবার ব্যর্থ হওয়ার কোনো অবকাশ আমাদের নেই। আমাদের সফল হতেই হবে। এই সাফল্য আপনাদের কারণেই আসবে। আপনার সহযোগিতার কারণে আসবে। আমাদের কাজ হবে আপনার, আমার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপায়িত করা। এখন আমরা দ্বিতীয় মাস শুরু করছি। আমাদের দ্বিতীয় মাসে যেন আপনাদের মনে দৃঢ় আস্থা সৃষ্টি করতে পারি সে চেষ্টা করে যাবো। 

তিনি বলেন, ধৈর্য ধরুন এই কথাটি আমি মোটেই আপনাদের বলবো না। আমরা সবাই অধৈর্য হয়ে পড়েছি এতসব কাজ কখন যে শেষ হবে এটা চিন্তা করে। আমরা অধৈর্য হবো। কেন হবো না? কিন্তু সঠিকভাবে কাজ করবো। কাজে কোনো অধৈর্যের চিহ্ন রাখবো না। 
 

পাঠকের মতামত

মাত্র ২টা সেক্টর ঠিক করেন-১.পুলিশ ২.বিচার বিভাগ বাকিরা এমনিতেই ঠিক হতে বাধ্য। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা।

Mohammad Alam Khan
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:০৭ অপরাহ্ন

শিক্ষা সংস্কারের জন্য ড. সলিমু্ল্লাহ খান স্যারের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন জরুরী।

yakub
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৩:৪৬ অপরাহ্ন

শিক্ষা নিয়ে কোন দিকনির্দেশনা নেই। আর দেশের আইন সৃঙ্খলার পরিস্থিতি খুব দ্রুত উন্নতি করতে হবে। বৈসাম্য বিরোধী ছাত্রদের দ্বারা আইন সৃঙ্খলা রক্ষা জন্য এলাকায় এলাকায় কমিটি করে তাদের দ্বারা সব দখলদার উচ্ছেদ, সন্ত্রাস, আইন সৃঙ্খলা বর্হিভূত কাজ প্রতিহত করতে হবে। এই যে রাস্তায় লোকজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলতেছে ইহা আইন সৃঙ্খলার কোন উন্নতি নেই বলেই করতেছে। আবার দেখলাম যুব দলের কুষ্টিয়ার নেতা ঘোষনা দিয়েছে যে, লীগের কাহাকেহ দেখলে সেখানেই পিটাতে। এরকম কেন হবে। তাকে এখনো কেন আইনের আশ্রয় আনা হচ্ছে না। আইন কেন তারা নিজের হতে তুলে নিবে। বিএনপি তার দলের নেতাদের কোন মতেই নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না। ক্ষমতায় আসতে পারে নাই এখনই সব দখল করে নিয়েছে। বাজার, হাট-ঘাট, পথ, বিভিন্ন মহল, টোল, টেন্ডার, এলাকা, ইত্যাদি। এর সাথে বড় বড় নেতা জড়িত। এদের প্রতিহত করতে হবে। তা না হলে যেই সেই হবে। জনগণ আবার এদের দ্বরা নির্যাতিত হবে। আবার সেই একই বৈসম্য হবে। এক দখলদার তাড়ায়ে আরেক দখলদার কে সুযোগ করে দেওয়া খুবই খারাপ কাজ। এদের প্রতিহত করতে হবে।

Moazzem
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২:০৭ অপরাহ্ন

৬ কমিশন করেছেন খুবই ভালো কথা, কিন্তু এই মুহূর্তে দুই একজন বোদ্ধা লোকের সাথে কথা বলে বুঝতে পেরেছি সর্বপ্রথম দরকার বিচারকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে বিচার বিভাগকে ১০০ ভাগ স্বাধীনতা দিয়ে তাদের জন্য সেক্রেটারিয়েট করে দেওয়া।একই সাথে জজ সাহেবগণ যদি সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং সাথে সাথে তার কাজের জন্য জবাবদিহিতার(তিনি স্বাধীন কিন্তু স্বেচ্ছাচারী নন এই অর্থে)মধ্যে থাকেন তাহলে তার থেকে কোন অসামঞ্জস্যপূর্ণ রায় বেরিয়ে আসা দুষ্কর। যখন মানুষ বুঝবে কোন একটি বিষয় নিয়ে বিচার বিভাগে গেলে সেখানে পক্ষপাত দুষ্টু রায় পাওয়া যাবে না, তখন সে নিজে নিজেই কোন বেআইনি কাছ থেকে যতদূর সম্ভব দুরে থাকবে। একটি দৃঢ, জবাবদিহি, সম্পূর্ণ স্বাধীন বিচার বিভাগ সমাজে একটা ন্যায় এর আবহ সৃষ্টি করতে পারে এটা প্রমাণিত, দেখেছি।

Amir
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:৫১ অপরাহ্ন

সোনার বাংলা গড়ার গুরু দায়িত্ব আপনাদের কাধে। নিশ্চয় উপর ওয়ালা সহায় হবেন।

কাজী মেসবাহুর রহমান
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও জনগনকে আইনের সুফল দিতে পুলিশ, প্রশাসন ও বিচারক দের জবাবদিহির আওতাধীন করা সময়ের দাবী।

সেলিম নেওয়াজ
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:০৫ পূর্বাহ্ন

আমার দেশ যেন চির শান্তির দেশ হয়। এই কামনা করি

শফিক
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

আলোর দিশারী

সোহেল
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন

আলহামদুলিল্লাহ। এটি জাতির জন্য একটি দিকনির্দেশনামূলক, অনুপ্রেরণামূলক ও প্রশংসনীয় ভাষণ। আমাদের অনেক আশা ও প্রত্যাশার এ ভাষণে উল্লেখিত সংস্কার কাজগুলোর সফল বাস্তবায়নের জন্য মহান আল্লাহ পাকের সাহায্য কামনা করছি। সাথে সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব প্রাপ্ত বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সুস্বাস্হ্য, সততা (integrity) ও আন্তরিকতা কামনা করছি। মহান আল্লাহ পাক উনাদের নেক হায়াত দান করুন। আল্লাহ পাকের নিকট আরো প্রার্থনা করছি, শকুনরুপী হায়েনারা বারবার এদেশ যেনো লুঠ না করে, বারবার যেনো নবরুপে বর্গী এদেশ আক্রমণ না করে।

Mohammad Yousuf
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন

ভাল উদ্যোগ। এ ৬ জন/কমিটির কার্যক্রম এবং এদের যথাযথ সুপারিশ, যথাযথ বাস্তবায়নের উপর জাতির আকাঙ্খা নির্ভর করছে।

আনোয়ার হোসেন
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৭:২৬ পূর্বাহ্ন

আমরা অধৈর্য হয়ে কাজ করে যাবো কিন্তু কাজের মধ্যে কোন অধৈর্য থাকবে না।

A R Sarker
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৬:০৮ পূর্বাহ্ন

সাধুবাদ জানাই ডঃ ইউনুসের উদ্দোগের যে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। তাদের সম্মানিত প্রধানরা প্রত্যেকেই দেশের যৌগ্য নাগরিক তাদের সাফল্য কামনা করছি ।সেই সাথে জনাব ইউনুস সকল শ্রেনির পেশার মানুষজন কে এতে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি যদি প্রবাসি বাংলাদেশি যারা তাদের মূল্যবান সময় এবং অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে ফেসিস্ট মুক্ত করতে অবদান রেখেছেন তাদেরও সম্পৃক্ত করার কথা বলতেন তবে খুব ভালো হতো। বিনয়ের সাথে বলতে চাই যে দুই কোটি মানুষ প্রবাস জিবন পালন করছেন এবং কষ্টারজিত বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরন করে নতুন বাংলাদেশ গড়ায় অবদান রেখে চলেছেন তারা আমি মনে করি একেকজন বাংলাদেশ রক্ষায় “অর্থনৈতিক মুক্তি যোদ্ধা”। ।অনুগ্রহ করে জনাব প্রধান উপদেষ্টা প্রবাসিদের অবদানকে স্বরন করে তাদের দেশ পুনরঘঠনে সংযোজন করবেন।

Mustafa Ahsan
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৩:১৮ পূর্বাহ্ন

প্রদান উপদেষ্টার প্রতিটি কথা সু-চিন্তিত সু দক্ষ রাস্ট্র পরিচালকের পরিচয় বহন করে। একটি দুর্নীতি অনিয়ম লুটপাটমুক্ত সুশৃংখল অর্থনৈতিক সমতাভিওিক বিচার বৈষম্যমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনে এই সরকার অনবদ্য ভুমিকা পালনে বদ্ধপরিকর --

এমএস আলম
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৩:০৬ পূর্বাহ্ন

অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণটি অত্যন্ত সময়োপযোগী, গুরুত্বপূর্ণ, আশাব্যঞ্জক ও রাষ্ট্রনায়কোচিত। ভাষনটিতে জনপ্রত্যাশার প্রায় সবগুলো দিক যথার্থভাবে ফুটে উঠেছে। ড. ইউনূস ধ্বংসোন্মুখ বাংলাদেশকে এক নূতন স্বপ্ন-সম্ভাবনায় উজ্জীবিত করতে পেরেছেন। এক অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ অধিষ্ঠিত হোক দেশবাসীর এটিই একমাত্র প্রত্যাশা। ধন্যবাদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সরকারকে।

হেলাল নির্ঝর
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২:০৫ পূর্বাহ্ন

উচ্চ আদালতে বিচারক হবার যোগ্যতা ও নিয়োগ বিধিমালা সব চাইতে জরুরি। অতি উচ্চ পারিশ্রমিকও সঙ্গত।

Mortuza Huq
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:২০ পূর্বাহ্ন

কোন সরফরাজ চৌধুরী। যিনি চিটাগং এর সিভিল সার্জেন ছিলেন ?

Mirza
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status