ঢাকা, ৫ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

সুনামগঞ্জে ডিআইজি’র স্ত্রীর বিতর্কিত ৫০ একরের বাগানবাড়ি

এমএ রাজ্জাক, সুনামগঞ্জ থেকে
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবারmzamin

ফারহানা মোজাম্মেল। তিনি অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের স্ত্রী। তার আনন্দ প্রোপার্টিজ লিমিটেডের নামে ৫ কোটি টাকা মূল্যের পাহাড়ি এলাকায় বিতর্কিত  ৫০ একর ভূমিসহ অতিরিক্ত খাস জায়গা রয়েছে। এসব জমি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে চলছে দ্বন্দ্ব ও হাঙ্গামা।
সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী ‘হাসাউড়া ও সোলেমানপুর’ মৌজায় ৪ কোটি ৯৭ লাখ ২০ হাজার টাকার জমি পাওয়ার অব অ্যাটর্নি মূলে ক্রয় করেন অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক। প্রায় ৩ বছর পর এই জমি ‘আনন্দ পুলিশ পরিবার কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড’র নামে রেজিস্ট্রি করে দেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানের এমডি করা হয় তার স্ত্রী ফারহানা মোজাম্মেল হককে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় এ বাগানের আশপাশের পাহাড়ে ও সমতলে আরও ৫০ শতাংশ জমি ক্রয় এবং খাশ জায়গা দখল করেন একই প্রতিষ্ঠানের নামে। এ জমিতে ৩ বছর ধরে কমলা, মাল্টা, লিচু, আমলকিসহ বিভিন্ন জাতের কাঠের গাছও লাগানো হয়। 
এলাকাবাসী জানান, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জমি ও নিরীহ মানুষের জমি দখল করে রিসোর্ট গড়তে উদ্যোগ নেন ডিআইজি মোজাম্মেল হক। একপর্যায়ে এলাকার মানুষ সেটি রুখে দেয়। গত রোববার সংঘবদ্ধভাবে স্থানীয়রা বাগানবাড়িটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকশ’ গাছের মাল্টা, বেশকিছু গাছ ও স্থাপনাও ভাঙচুর করেন তারা। এ বিষয়ে উন্নয়নকর্মী সালেহীন শুভ বলেন, ডিআইজি মোজাম্মেল স্থানীয় একটি সিণ্ডিকেটের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি মৌজায় ৫০ একরের বেশি জমি প্রভাব খাটিয়ে সমতলে ও পাহাড়ে নামমাত্র মূল্যে ক্রয় করেছেন। এসব জমিতে আনন্দ পুলিশ পরিবার কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লি. নামে একটি ভুয়া সমবায় সমিতির সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন। গেল কয়েক বছর ধরে তার জমি সুরক্ষায় পুলিশ এবং পেটোয়া বাহিনী দিয়ে এলাকার নিরীহ মানুষকে বহু অত্যাচার, নির্যাতন করে আসছেন তিনি। মানুষ এখন তার বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
রঙ্গারচর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই জানান, পুলিশ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ওয়ারিশান বের করে মানুষের দখলে থাকা জমি কিনে নিয়েছেন। এসব জমি দখলে নেয়ার নামে বহু মানুষ নির্যাতিত হয়েছেন। আনন্দ পুলিশ পরিবার কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডর কেয়ারটেকার আদম আলী জানান, এলাকার কিছু মানুষ রোববার সকাল থেকে সারাদিন স্যারের বাগানবাড়িতে লুটপাট করেছে। তারা ৪৪০টি গাছের মাল্টা নিয়ে গেছে। ১০টি ভালো কাঠের গাছ কেটেছে। কাঁটাতারের বেড়া উপড়ে ফেলেছে। থাকার ঘর, টিউবওয়েল ও পানির ট্যাংকি ভেঙেছে। অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ফোন রিসিভ না করায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। আনন্দ পুলিশ পরিবার কল্যাণ হাউজিংয়ের ক্রয় কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন আহমদ জানান, এটি পুলিশ হেড কোয়ার্টারের কোনো সম্পদ নয়। এটি কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের সম্পদ। 
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি আব্দুল আহাদ জানান, আনন্দ পুলিশ পরিবার কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লি. নামে সীমান্তের হাসাউড়া এলাকায় পুলিশের নিজস্ব কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। ওখানে ভূমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা হচ্ছে শুনেছি। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, কয়েকজন উন্নয়নকর্মী ফোন দিয়ে জানান, হাসাউড়ায় পাহাড় কাটা হচ্ছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তার বাগানবাড়ি জোর করে দখল নিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে। পরে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তিনি বলেন, কিছু জমি দু’পক্ষ দখল করতে চাইছেন। কিছু গাছও তারা কাটতে চাচ্ছেন। প্রশাসনের লোকজন তাদেরকে গাছ কাটতে নিষেধ করে এসেছেন।

 

পাঠকের মতামত

ভূমিহীনদের জন্য গুচ্ছগ্রাম করা হোক।

sultan
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:৫৫ অপরাহ্ন

সকল জমি রাস্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে ভূমিহীন দেরকে বরাদ্দ দেয়া হউক ।

মাহবুব
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

DIG কত বেতন পেতেন । খাওয়া দাওয়ার পর সঞ্চয় কত ছিল । জমির মূল্য কত ? তুলনা করলেই তো দুর্নীতির সব রহস্য মিলবে । দুর্নীতির টাকার কেনা সম্পত্তি ক্রোক করে সরকার বাজেয়াপ্ত করুক এটাই বিচার। হাসিনার দল তো লুটপাট করেছে ই, তৎসঙ্গে আমলাদের ও প্রশাসনের লোকদের অবাধ লুটপাটের সুযোগ দিয়ে তাদের সমর্থন নিত । দমন নিপীড়ন করার জন্য।

Kazi
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন

ক্রোক করা হউক

Aminur rahman
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১:১১ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status